আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যীশু খ্রিস্ট কি সর্বশক্তিমান ইশ্বর?

আমরা এমন একটা পরিবেশ চাই, যেখানে শিশুরা তাদের পছন্দ-অপছন্দের ধাপগুলো সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নিয়ে বড় হবে।

===ফয়সল সাইফ=== পবিত্র বাইবেলের নিউ টেষ্টামেন্টে যীশু খ্রিস্টকে অনেক নামে ডাকা হয়েছে। কোথাও তাকে বলা হয়েছে, ইসা। যার অর্থ উদ্ধারকর্তা। কোথাও বলা হয়েছে খোদাবন্দ্।

যার অর্থ প্রভু যীশু। কোথাও বলা হয়েছে খোদার মেষ শিশু। আগের দিনে মুসা (আঃ) এর অনুসারীরা মেষ শিশু কোরবানী দিত। যীশু যে মানুষের পাপ মুক্তির জন্য ক্রুসের ওপর জীবন দিয়েছিলেন এজন্য তাকেও এই নামে ডাকা হয়েছে। কোথাও ডাকা হয়েছে খোদার সেই পবিত্র লোক।

এটা হলো খোদার প্রতিজ্ঞা করা যীশুর একটা নাম। কোথাও ডাকা হয়েছে কালেমাতুল্লাহ। এটার মানে খোদার কালাম। অর্থাৎ যীশু খ্রিস্ট খোদার কালাম। কোথাও ডাকা হয়েছে পাক রূহ।

এটা ত্রয়ীবাদের একটা নাম। যেটা একই সাথে খোদা-যীশু-পাক রূহকে এক করে বুঝায়। মানে তিনজনে একই সত্ত্বা। কোথাও ডাকা হয়েছে মনুষ্যপুত্র। এ নামে যীশু নিজেই নিজেকে ডাকতেন।

কোথাও ডাকা হয়েছে মসীহ। এটার অর্থও উদ্ধার কর্তা। কোথাও ডাকা হয়েছে খোদার পুত্র। ধারণা করি এই সব নামগুলোর মধ্যে খোদার পুত্র শব্দটি যীশুকে খোদার রাজ্যের যুবরাজ বা অধিকারী বলে শক্ত ভিত্তি দেয়। আর পাক রূহ শব্দের ব্যাখ্যাটা দাবী করে যে যীশু খ্রিস্টই সর্বশক্তিমান ইশ্বর।

যেটার মূল ভিত্তি ত্রি-ইশ্বরবাদের বিশ্বাস। যে শব্দটা অবশ্য স্পষ্ট করে বাইবেলের কোথাও পাওয়া যায় না। তাই এটা চার্চের তৈরী একটা মতবাদ বললেও কারও কোনো আপত্তি থাকার কথা নয়। বাইবেলের বর্ণনায় পিতা-পু্ত্র ও পবিত্র আত্মাকে ভিন্ন ভিন্ন তিন হিসেবে দেখালেও চার্চ তিন এই সত্ত্বাকে এক করে দেখায়। তার ফলে যীশু খ্রিস্টকে তারা সর্বশক্তিমান ইশ্বর বলে বিশ্বাস করতে বলে।

খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকেরা তা চোখ বন্ধ রেখে বিশ্বাসও করে। কিন্তু আমরা যারা খ্রিস্টান নই; এক্ষেত্রে আমাদের জিগ্যেস্য এ ব্যাপারে পবিত্র বাইবেল কী বলে? সেজন্য বাইবেলের বর্ণনা অনুযায়ী যীশুর প্রতিটি নামের রহস্য উন্মোচন করা জরুরী। কারণ পবিত্র বাইবেলেই যীশুর সম্পর্কে সবচেয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আর বাইবেল ছাড়া অন্য কোনো কথা খ্রিস্টানরা মেনে নিতে বাধ্য নন। তাই মনে করি শুধু এ ব্যাপারে বাইবেল ছাড়া আলোচনা অর্থহীন।

আর শুধু বাইবেলের মধ্যে থেকে আলোচনা সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য। তাহলে আসুন, দেখা যাক। (১) বাইবেলের কিছু জায়গায় যীশুকে ডাকা হয়েছে ইসা নামে। আরও কিছু জায়গায় ডাকা হয়েছে মসীহ বলে। এই দুই নামের অর্থ আগেই বলেছি উদ্ধারকর্তা।

যদি যীশুকে বলা হয় তার সম্প্রদায়ের জন্য তিনি একজন উদ্ধারকর্তা ছিলেন তাহলে তাতে আমার কোনো আপত্তি নেই। কারণ আমরা মুসলমানরা বিশ্বাস করি প্রত্যেক নবী-রাসূলগণই তাদের সম্প্রদায়ের জন্য এক একজন উদ্ধারকর্তা। উদ্ধারকর্তাদের কাজ ভূল পথ সম্পর্কে সতর্ক করা এবং সঠিক পথের সন্ধান দেওয়া। এখন প্রশ্ন হলো যীশু যে নবী সেটা আমরা কিভাবে নিশ্চিত হব? এবং তার সম্প্রদায়ই বা কোনটা? যীশু যে একজন নবী এ সম্পর্কে পবিত্র বাইবেলের গসপেল অফ ম্যাথিওয়ে উল্লেখ আছে, অধ্যায় ১৩, অনুচ্ছেদ ৫৭: এভাবে ইসাকে নিয়ে মানুষের মনে বাধা আসতে লাগল। তখন ইসা তাদের বললেন, নিজ গ্রাম ও নিজ বাড়ি ছাড়া আর সব জায়গাতেই নবীরা সম্মান পান।

তারপর যীশুর সম্প্রদায় কোনটা সে সম্পর্কে গসপেল অফ ম্যাথিওয়ে উল্লেখ আছে, অধ্যায় ১৫ অনুচ্ছেদ ২৪: উত্তরে ইসা বললেন, আমাকে কেবল ইস্রায়ের বংশের হারান মেষদের নিকটেই পাঠানো হয়েছে। (২) বাইবেলের অনেক জায়গায় যীশুকে খোদাবন্দ্ নামে ডাকা হয়েছে। এটা হলো যীশুকে প্রভু বলে সম্বোধন। অনেক চাকরেরা তাদের মনিবদের প্রভু বলে সম্বোধন করে। অনেক রাজাদেরও তাদের প্রজারা প্রভু বলে সম্বোধন করেছে।

তাই বলে তারা সর্ব শক্তিমান ইশ্বর হয়ে যাননি। তাই এই নামের কারণে যীশু খ্রিস্ট সর্ব শক্তিমান ইশ্বর এটা প্রমাণ হয় না। (৩) বাইবেলের কিছু জায়গায় যীশুকে ডাকা হয়েছে খোদার মেষশিশু বলে। এটা ডাকার কারণ আগের দিনে মূসার শরীয়ত অনুসারে ইহুদীরা মেষ-শিশু কোরবানী দিত। পরে যীশু খ্রিস্ট মানুষের পাপের জন্য শেষ পরিপূর্ণ কোরবানী হিসেবে ক্রুসের ওপর নিজের জীবন দিয়েছিলেন।

এজন্য তাকে এই নামে ডাকা হয়। তবে, তাতে অবশ্য যীশু খ্রিস্ট যে সর্বশক্তিমান ইশ্বর তা প্রমাণ হয় না। মূসার শরীয়ত সম্পর্কে বাইবেলের নিউ টেষ্টামেন্টে উল্লেখ আছে, গসপেল অফ ম্যাথিও: অধ্যায় ৫, অনুচ্ছেদ ১৭-১৯: (যীশু বলছেন) এই কথা মনে করো না যে, আমি মূসার শরীয়ত আর নবীদের লেখা বাতিল করতে এসেছি। আমি সেগুলো বাতিল করতে আসিনি বরং পূর্ণ করতে এসেছি। আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, আসমান ও জমিন শেষ না হওয়া পর্যন্ত, যতদিন না শরীয়তের সমস্ত কথা সফল হয়, ততদিন সেই শরীয়তের এক বিন্দু কি এক মাত্রাও মুছে যাবে না।

তাই হুকুমগুলোর মধ্যে ছোট একটি হুকুমও যে অমান্য করবে এবং মানুষকে তা অমান্য করতে শিক্ষা দেবে তাকে বেহেস্তী রাজ্যে সবচেয়ে ছোট বলা হবে। কিন্তু যে সেই হুকুমগুলো পালন করবে এবং মানুষকে তা পালন করতে শিক্ষা দেবে তাকে বেহেস্তী রাজ্যে বড় বলা হবে। এখানে যীশু স্পষ্ট করেই বলেছেন যে, তিনি মূসার শরীয়ত বা নবীদের লেখা বাতিল করতে আসেন নি। তার মানে শরীয়তের হুকুমগুলোর গুরুত্ব অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। তাই মানুষের (মূলত হারান মেষদের) পাপ মুক্তির জন্য যীশু খ্রিস্টের ক্রুসের ওপর জীবন দেওয়া কিভাবে পরিপূর্ণ কোরবানী হলো? শরীয়ত থাকলেতো তারপরও কোরবানী দেওয়া চালু রাখতে হবে।

তবে, যাইহোক মূল কথা হলো এটা কোনোভাবেই ইশ্বর হওয়ার প্রমাণ নয়। তাছাড়া যীশু খ্রিস্টের ক্রুস নিয়ে বিস্তর মতভেদ আছে। বাইবেল অনুযায়ীই তার অনেক দুর্বলতা বের করা যায়। সেটা এখানের আলোচ্য বিষয় নয়। তাই সে কথা টানছি না।

এটা অন্য জায়গায় আলোচনা করব। (৪) বাইবেলের কিছু জায়গায় যীশুকে বলা হয়েছে খোদার সেই পবিত্র লোক। এ সম্পর্কে পবিত্র বাইবেলের নিউ টেষ্টামেন্টে উল্লেখ আছে, গসপেল অফ লূক: অধ্যায় ১, অনুচ্ছেদ ৬৯: (জাকারিয়া বলছেন) তিনি আমাদের জন্য তার গোলাম দাউদের বংশ থেকে একজন শক্তিশালী উদ্ধারকর্তা তুলে এনেছেন। অনুচ্ছেদ ৭৩: তিনি আমাদের পূর্বপুরুষ ইব্রাহিমের নিকট সেই কসম খেয়েছিলেন। অনুচ্ছেদ ৭৬: সন্তান আমার! তোমাকে খোদাতা’য়ালার নবী বলা হবে।

কারণ তুমি তার পথ ঠিক করার জন্য তার আগে আগে চলবে। পবিত্র বাইবেলে জাকারিয়ার কথামতো যীশু খোদার সেই পবিত্র লোক বটে। তবে, তাক বলা হবে নবী। আমাদের তাতে কোনো আপত্তি নেই। কোনো নবীতো আর সর্বশক্তিমান ইশ্বর নন।

(৫) বাইবেলের কিছু জায়গায় যীশুকে বলা হয়েছে কালাম। এটার উল্লেখ পাওয়া যায় পবিত্র বাইবেলের গসপেল অফ জন: অধ্যায় ১, অনুচ্ছেদ ১-২: প্রথমেই কালাম ছিলেন। কালাম খোদার সংগে ছিলেন। এবং কালাম নিজেই খোদা ছিলেন। আর প্রথমেই তিনি খোদার সংগে ছিলেন।

এটা যথেষ্ট বিভ্রান্তিকর। এ সম্পর্কে পবিত্র বাইবেলের টিকায় বলা হয়েছে: কালেমাতুল্লাহ মানে হলো খোদার কালাম। যা যীশুর একটি নাম; সন্দেহ নেই। তবে, কালাম খোদার সংগে ছিলেন এবং কালাম আবার নিজেই খোদা ছিলেন এটা কেমন করে হয়? কালাম যদি নিজেই খোদা হন, তাহলে কালামের খোদার সংগে থাকার কী দরকার? এটা দিয়ে কিছুতেই প্রমাণ হয় না যীশু খ্রিস্ট সর্বশক্তিমান ইশ্বর। তাছাড়া গসপেল অফ জন’এ উল্লেখ আছে, অধ্যায় ১৭, অনুচ্ছেদ ৬-৮: দুনিয়ার মধ্যে যাদের তুমি আমাকে দিয়েছ, আমি তাদের নিকট তোমাকে প্রকাশ করেছি।

তারা তোমারই ছিল আর তুমি তাদের আমাকে দিয়েছ। তারা তোমার কালাম পালন করেছে। তারা এখন বুঝতে পেরেছে যে, যা কিছু তুমি আমাকে দিয়েছ তা তোমার নিকট থেকেই এসেছে। এর কারণ তুমি যে কালাম আমাকে দিয়েছ তা আমি তাদের দিয়েছি। তারা তা গ্রহণ করে জানতে পেরেছে যে আমি তোমার নিকট থেকে এসেছি।

আর বিশ্বাসও করেছে যে তুমিই আমাকে পাঠিয়েছ। এর মানে কালাম হলো পবিত্র বাইবেল। তা হলেতো আমাদের কোনো আপত্তি থাকার কথা নয়। (৬) বাইবেলে কিছু জায়গায় বলা হয়েছে পাক রূহ’র কথা। এর মানে হলো পবিত্র আত্মা।

এর উল্লেখ পাওয়া যায় গসপেল অফ ম্যাথিও: অধ্যায় ৩, অনুচ্ছেদ ১৬-১৭: ব্যাপটাইস্ট করার সময় ইসা পানি থেকে উঠে আসার সাথে সাথে আসমান খুলে গেল। তখন তিনি খোদার রূহকে কবুতরের মতো হয়ে তার উপর নেমে আসতে দেখলেন। তখন বেহেস্ত থেকে বলা হলো, ইনিই আমার প্রিয় পুত্র। তার উপর আমি খুবই সন্তুষ্ট। এখানে প্রথমে বলা হলো খোদার রূহ কবুতরের মতো যীশুর উপর নেমে আসলেন।

তারপর বেহেস্ত থেকে বলা হলো ইনিই আমার প্রিয় পুত্র। খ্রিস্টানরা এসব থেকেই মিলিয়ে বলে ইশ্বর, পবিত্র আত্মা আর যীশু তিনজনেই এক সত্ত্বা। মানে তিনজন আসলে একজনই, ইশ্বর। তাই যীশু খ্রিস্টই সর্বশক্তিমান ইশ্বর। কিন্তু এসব দাবীর ক্ষেত্রে স্পষ্ট ভিত্তি থাকা প্রয়োজন।

যেটা এই অনুচ্ছেদগুলোতে নেই। এখানে কি বলা হয়েছে যে, তিনজনেই এক? বরং বলা হয়েছে তার উপর আমি খুবই সন্তুষ্ট। যদি তিনজনেই এক হতেন তাহলে বলা উচিত ছিল আমার উপর আমি খুবই সন্তুষ্ট। তবে, এখানে সেটা বলা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে পুরোটা বাইবেলের কোথাও বলা হয়নি যে, যীশুই শর্বশক্তিমান ইশ্বর বা তারা তিনজনে একই সত্ত্বা।

তবে, কিছু লোক বাইবেলের একটা অনুচ্ছেদকে যুক্তি হিসেবে ব্যবহার করে এই ত্রয়ীবাদকে প্রমাণ করতে চেষ্টা করে। তার উল্লেখ আছে, গসপেল অফ জন: অধ্যায় ১৪, অনুচ্ছেদ ১০-১১: তুমি কি বিশ্বাস কর না যে আমি পিতার মধ্যে আছি আর পিতা আমার মধ্যে আছেন। যে সব কথা আমি তোমাদের বলি তা আমি নিজে থেকে বলি না। কিন্তু পিতা, যিনি আমার মধ্যে থাকেন তিনিই তার কাজ করছেন। ভাল কথা।

তাহলে আমরা এখানে পেলাম ইশ্বর এবং যীশু, দুজনে একজন। তাই যদি হয় তাহলে গসপেল অফ জন: অধ্যায় ১৪, অনুচ্ছেদ ২০: সেইদিন তোমরা জানতে পারবে যে আমি পিতার সাথে যুক্ত আছি আর তোমরা আমার সাথে যুক্ত আছ। এবং আমি তোমাদের সাথে যুক্ত আছি। তাহলে, ওই যুক্তি অনুসারে এখন আমরা পেলাম প্রথমে দুই এবং যীশুর বারজন সাহাবী সহ মোট ১৪ জন। মানে ১৪ জনে মূলত একজনই ধরতে হবে।

আর পবিত্র আত্মাকে যোগ করলে মোট ১৫ জনে এক সত্ত্বা। সবাই মিলে একজন সর্বশক্তিমান ইশ্বর। কী বলেন? যারা ওই অনুচ্ছেদকে যুক্তি হিসেবে গ্রহণ করে যীশুকে ইশ্বর বলে তারা এটা মানবে না। তাই তাদের যুক্তিও মানার কোনো দরকার নেই। কারণ তাদের যুক্তি আবেগ তাড়িত এবং অস্পষ্ট।

বরং ইশ্বর আর যীশু যে সম্পূর্ণ আলাদা দুই সত্ত্বা সে সম্পর্কে বাইবেলে স্পষ্ট বহু অনুচ্ছেদ আছে। তার কয়েকটি নিচে তুলে ধরলাম: গসপেল অফ ম্যাথিও: অধ্যায় ২১, অনুচ্ছেদ ২৫: (যীশু বলছেন) আপনাদের বলব, আমি কোন অধিকারে এই সব কিছু করছি। বলুন দেখি ব্যাপটাইস্ট করার অধিকার ইয়াহিয়া কোথা থেকে পেয়েছিলেন? ইশ্বরের কাছ থেকে না মানুষের কাছ থেকে? অধ্যায় ২০, অনুচ্ছেদ ২৩: (যীশু বলছেন) সত্যিই তোমরা আমার পেয়ালায় খাবে। কিন্তু আমার ডানে বা বামে বসতে দেওযার অধিকার আমার নাই। আমার পিতা যাদের জন্য তা ঠিক করে রেখেছেন তারাই সেখানে বসতে পারবে।

অধ্যায় ১৯, অনুচ্ছেদ ১৭: (যীশু বলছেন) ভালর বিষয়ে কেন আমাকে জিগ্যেস করছেন। ভাল মাত্র একজনই আছেন। যদি আপনি অনন্ত জীবন পেতে চান তাহরে তার সব আদেশ পালন করুন। অধ্যায় ১২, অনুচ্ছেদ ৩১-৩২: মানুষের সমস্ত পাপ ও কুফরী ক্ষমা করা হবে। কিন্তু পাক রূহের বিরুদ্ধে কুফরী ক্ষমা করা হবে না।

মনুষ্যপুত্রের বিরুদ্ধে কেউ কোনো কথা বললে তাকে ক্ষমা করা হবে। কিন্তু পাক রূহের বিরুদ্ধে কেউ কোনো কথা বললে তাকে ক্ষমা করা হবে না। এই যুগেও না- আগামী যুগেও না। এসব অনুচ্ছেদ স্পষ্ট বলছে যীশু আর ইশ্বর সম্পূর্ণ আলাদা দুই সত্ত্বা। (৭) বাইবেলের অনেক জায়গায় যীশু নিজেকেই ডেকেছেন মনুষ্যপুত্র বলে।

এটা নিয়ে বলার কিছু নেই। ভাবার কিছুও নেই। কারণ মনুষ্যপুত্রর মানে কিছুতেই সর্বশক্তিমান ইশ্বর নন। (৮) বাইেবলের অনেক জায়গায় যীশু খ্রিস্টকে বলা হয়েছে খোদার পুত্র বা ইশ্বরের পুত্র। মানে ইশ্বর যীশুর পিতা।

এ সম্পর্কে পবিত্র বাইবেলের টিকায় লেখা হয়েছে: এটা যীশুর একটা বিশেষ নাম। মূলত খোদার রূহ। খোদার কোনো স্ত্রী থাকা এবং তার সাথে দেহের মিলনের ফলে কোনো সন্তান হওয়ার ব্যাপারটা একটা অর্থহীন কল্পনা। বরং অন্যান্য মানুষের তুলনায় যীশুর জন্মটা সম্পূর্ণ আলাদা রকমের ছিল। খোদার পুত্র শব্দটি খোদাতা’য়ালার সাথে যীশুর চিরকালীন একটা নিকট সম্বন্ধ প্রকাশ করে।

এ নামে খোদা তাকে ডেকেছেন। বাইবেলে উল্লেখিত নবীরা ডেকেছেন। এবং যীশু নিজেও এটা তার নাম বলে দাবী করেছেন। হ্যা, এসব নিয়ে আমাদের কোনো দ্বিমত নেই। পবিত্র বাইবেলে যীশু খোদার পুত্র এটা অনেকবার আমরাও পেয়েছি।

কিন্তু যত ভাবে পেয়েছি তার সূত্র ধরে ইশ্বরের সমাধান বের করলে আমরা যত ইশ্বর পাব তার হিসেব আমি-আপনারা কেউই দিতে পারব না। কারণ, গসপেল অফ ম্যাথিও: অধ্যায় ৫, অনুচ্ছেদ ৯: মানুষের জীবনে শান্তি আনার জন্য যারা পরিশ্রম করে তারা ধন্য। কারণ ইশ্বর তাদের নিজের সন্তান বলে ডাকবেন। অধ্যায় ৬, অনুচ্ছেদ ১: সাবধান, লোক দেখানোর জন্য কোনো ধর্ম-কর্ম করো না। যদি কর, তবে তোমাদের বেহেস্তী পিতার নিকট থেকে কোনো পুরষ্কার পাবে না।

অধ্যায় ৬, অনুচ্ছেদ ৬ ও ১৮: তোমার পিতা যিনি গোপন সবকিছু দেখেন, তিনিই তোমাকে পুরষ্কার দেবেন। অধ্যায় ১০, অনু্চ্ছেদ ২০: তোমরাই যে বলবে তা নয়। বরং তোমাদের পিতা-ইশ্বরের আত্মা তোমাদের মধ্য দিয়ে কথা বলবেন। কী বুঝলেন? আল্লাহর অনুবাদ পিতা আর বান্দার অনুবাদ পুত্র করলে এমনই হয়। তারপরও আমি এখানে বাইবেলের ভূল ধরতে এই লেখা লেখিনি।

বাইবেলের কথার বাইরে যীশু খ্রিস্ট সর্বশক্তিমান ইশ্বর নন তা প্রমাণের জন্য কোনো ধর্মগ্রন্থ বা বিজ্ঞানের কথা টেনে আনিনি। বাইবেলের ভূল ধরা এখানে প্রাসঙ্গিকও নয়। সেটা নিয়ে কথা হবে অন্য আর একটি লেখায়। তবে, আমি এখানে বাইবেলের নিউ টেষ্টামেন্টকে ভিত্তি ধরেই আলোচনা করেছি।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ২৯ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.