আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে কঠোর আন্দোলনে গার্মেন্ট শ্রমিকরা

নূন্যতম মজুরি আট হাজার টাকা করা না হলে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে দেশের গার্মেন্ট শিল্পের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন। এরই মধ্যে তারা আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। শ্রমিকরা ইতোমধ্যেই মজুরি বোর্ডের অষ্টম বৈঠকে পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর ৪ হাজার ২৫০ টাকা নূন্যতম মজুরির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, নূন্যতম মজুরি আট হাজার টাকার বিকল্প কোনো প্রস্তাবই মানবেন না তারা। এ অবস্থায় শ্রমিক নেতারা আশঙ্কা করছেন, আগামী ৪ নভেম্বর বোর্ডের নবম বৈঠকে যদি শ্রমিকদের পূর্বঘোষিত দাবি অনুযায়ী নূ্যনতম নায্য মজুরি নির্ধারণ করা না হয় তবে এ শিল্পে অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হবে, যা ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।

গতকাল শ্রমিক সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, মজুরি বোর্ডের নবম বৈঠকে যদি তাদের দাবি মানা না হয় তবে দেশের সব গার্মেন্ট কারখানার শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে যাবেন। আর কঠোর এ আন্দোলনে ধর্মঘট ও অবরোধসহ নানা ধরনের কর্মসূচি থাকবে। এ প্রসঙ্গে গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমরা নূন্যতম মজুরির দাবিতে গত ৩১ অক্টোবর মজুরি বোর্ডের অষ্টম বৈঠকে মজুরি বোর্ডের কার্যালয় ঘেরাও করেছি। দাবি আদায়ের জন্য ইতোমধ্যে গণতান্ত্রিক ও বামপন্থি দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমরা সরকার ও মালিকপক্ষকে স্পষ্ট করে বলতে চাই, যদি আমাদের দাবি মানা না হয় তবে দেশের সব গার্মেন্ট কারখানার শ্রমিকরা মিলে কঠোর আন্দোলনে যাব।

এর মধ্যে ধর্মঘট ও অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি থাকবে। তিনি আরও বলেন, আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ করব, মালিকদের ষড়যন্ত্রকে প্রশ্রয় না দিয়ে এ শিল্পের স্বার্থে শ্রমিকদের দাবি মেনে নিতে। সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাজ্জেকুজ্জামান রতন বলেন, শ্রমিক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে শ্রমিকরা যাতে বেঁচে থাকতে পারে সে লক্ষ্যে নূন্যতম মজুরি আট হাজার টাকার দাবি জানিয়েছি। সরকারের কাছে আমাদের দাবি ছিল, আইন করে মজুরি নির্ধারণ করা হোক। কিন্তু এ নিয়ে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

মালিকরা যদি মোট মুনাফার ২৫% শ্রমিকদের মজুরির জন্য বরাদ্দ দেন তাহলে শ্রমিকরা বর্তমানে যে মজুরি পান তা থেকে আরও পাঁচ হাজার টাকা বেশি বেতন পেতে পারেন। তিনি বলেন, যদি ৪ তারিখে শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়া না হয় তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। এ ব্যাপারে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল হক আমিন বলেন, শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি চলতি নভেম্বরের মধ্যেই চূড়ান্ত হওয়ার কথা। আমরা শ্রমিকদের নায্য দাবি আট হাজার টাকা না মানার পেছনে কোনো যুক্তি পাই না। দেশের সুশীল সমাজও শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি আট হাজার টাকা করার পক্ষে মতামত দিয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিজিএমইএ'র সাবেক চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, একজন অশিক্ষিত শ্রমিক যে কিনা গ্রাম থেকে শহরে এসে আমাদের কারখানার বোতাম, কাপড় নষ্ট করে কাজ শেখা শুরু করে তার বেতন কি আট হাজার টাকা হওয়া উচিত! তবে সঠিক কত টাকা বাড়তে পারে তা তিনি না বললেও এ কথা জানান যে, ৪ নভেম্বরের বৈঠকে হয়তো বিজিএমইএর তরফ থেকে মজুরি চার হাজার ২৫০ টাকা থেকে আরও কিছুটা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হবে। তিনি বিশ্বাস করেন, এবার যে মজুরি প্রস্তাবনা দেওয়া হবে তা শ্রমিকরা খুশি মনেই মেনে নেবেন এবং আন্দোলনে যাবেন না। এদিকে গত ৩১ অক্টোবর বিজিএমইএর চার হাজার ২৫০ টাকার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য পরিষদ, গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও শিল্প শ্রমিক ঐক্য পরিষদসহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন।

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।