২০১০ সালের পুনরাবৃত্তি, নিউজিল্যান্ড দল আবারও ধবলধোলাই বাংলাদেশ দলের কাছে। দলীয় প্রচেষ্টার কাছে আবারও পরাজিত কাগজ-কলমের
শক্তিমত্তা। ফতুল্লায় শেষ ওয়ানডে শেষের সংবাদ সম্মেলনে এবারের সাফল্যকেই এগিয়ে রাখলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক
মুশফিকুর রহিম। সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন তারেক মাহমুদ—
l প্রথম দুই ওয়ানডের পারফরম্যান্স সামর্থ্য অনুযায়ী ছিল না—
মুশফিকুর রহিম: একটা সিরিজে একজন ব্যাটসম্যান ২৫০-৩০০ রান করে। আর একজন বোলার ১০-১২টা উইকেট নেয়।
এই সিরিজে আমাদের ওই রকম কেউ নেই। সেটা ভাবলে অবশ্যই আমরা যেমনটা চাচ্ছিলাম সে রকম হয়নি। এই সিরিজ জয় পুরোপুরি দলীয় প্রচেষ্টার ফসল। এটা যখন শুরু হবে, তখন একজনের প্রতি আরেকজনের দায়িত্বটা বাড়বে। আর অবশ্যই আমরা সামর্থ্য অনুযায়ী খেলিনি।
প্রথম দুটি ওয়ানডেতে আমরা ৫০ ওভার ব্যাটিং করতে পারিনি। সেদিক থেকে একটা চিন্তা ছিল আজ (কাল) যেন ওপরের দিকের আট ব্যাটসম্যান ভালো ব্যাটিং করি। বিরতির সময় সবাইকে বলেছিলাম, আমরা আটজন ভালো খেললে জিতব ইনশাআল্লাহ।
l ৪-০-র সঙ্গে ৩-০-র তুলনা—
মুশফিক: দুটোই অনেক বড় অর্জন। দুটির অনুভূতি ভিন্ন।
তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি বলব এটার অনুভূতি আমার কাছে দ্বিগুণ। একে আমি অধিনায়ক। তার ওপর একটা ভালো ফল কিন্তু অনেক কষ্টে অর্জন করতে হয়। সেটা ধরে রাখা আরও কঠিন। এবার আমাদের বেস্ট পারফরমার দলে ছিল না।
অনেক প্রতিবন্ধকতা ছিল। এর মধ্যেও আমরা এই ফলাফল করেছি।
l দলে এখন অনেক পারফরমার—
মুশফিক: অবশ্যই, পারফরমারের সংখ্যা এখন অনেক বেড়ে গেছে। নাসিরকেই দেখুন। গত দুই ম্যাচে রান করেনি।
ও যে ‘বিগ ম্যাচ প্লেয়ার’ এটা আমরা ওকে দুই দিন আগে থেকেই বলছিলাম। বলেছি, ‘তুই টেনশন করিস না। দেখবি, শেষ ম্যাচে যখন রানের দরকার হবে, তুই ঠিকই করে দিবি। ’ নাঈম ভাইয়ের কথা বলি। এই সিরিজে ওনার খেলারই কথা না।
সাকিব ফিট থাকলে উনি সুযোগ পেতেন না। সেদিক থেকে বললে, সবাই আগের চেয়ে অনেক পরিণত।
l দলীয় পারফরম্যান্সের ফসল—
মুশফিক: যার সামনে যেভাবে সুযোগ এসেছে, সে সেভাবেই সেটা কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছে। তরুণেরা ভালো করছে। মাশরাফি ভাই বারবার বলেছেন, তরুণেরা পারফর্ম করায় সিনিয়রদের ওপর চাপ পড়ছে।
যতই সিনিয়র হোন না কেন, সবার আগে পারফরম্যান্স। সেদিক থেকে জুনিয়ররা আমাদের পারফর্ম করার জন্য চাপ দিয়েছে। নতুনেরাও ভালো করছে। আর এখন সবাই দলের স্বার্থ আগে দেখে, নিজের না। এটা যত বাড়বে, আমরা চলে যাওয়ার পরও বাংলাদেশ দল উন্নতি করতে থাকবে।
l দীর্ঘ মেয়াদে নেতৃত্ব চাওয়া প্রসঙ্গে—
মুশফিক: আমার একমাত্র চাওয়া হলো আমার বাংলাদেশ দল যখন যেখানেই খেলুক, যাঁর নেতৃত্বেই খেলুক, এভাবেই ধারাবাহিকভাবে জিততে থাকবে। পারফর্ম করতে থাকবে। আর আমাকে যদি ওনারা বলেন, তখন দেখা যাবে।
l এমন একটা দলকে নেতৃত্ব দেওয়া কি অনেক সহজ?
মুশফিক: সেই প্রথম দিন থেকেই শুনছিলাম, ‘বাংলাওয়াশ, বাংলাওয়াশ’। এটা নিয়ে চিন্তিত ছিলাম।
এটা সত্যি ছেলেরা আগের চেয়ে অনেক পরিণত। আগে রুবেলকে বলে দিতে হতো। এখন হয় না। খেলতে খেলতেই মানুষ এগুলো শেখে। অভিজ্ঞতা হয়।
যেমন শুভ (শামসুর) আজকে খেলল।
l টি-টোয়েন্টি জিতলে এবারও ‘৪-০’ সম্ভব—
মুশফিক: (হাসি) এখন ৩-০টা একটু উপভোগ করতে চাই। আরও দুই দিন আছে। নিউজিল্যান্ড টি-টোয়েন্টিতে খুব ভালো দল। সেভাবেই প্রস্তুত হব।
আর আমরা এখনো কাপ পাইনি। আশা করব, শেষ ম্যাচটা জিতেই সব উপভোগ করব।
l টসে জিতে ফিল্ডিং কেন—
মুশফিক: এটি ব্যাটিং উইকেটই ছিল। যেহেতু দিনের খেলা এবং শুরুতেই ময়েশ্চার থাকে, তাই আমরা শুরুর ১০ ওভারে দ্রুত দুটো উইকেট তুলে ওদের চাপে ফেলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ওরা ভালো শুরু করল।
একসময় মনে হচ্ছিল ৩৩০-এর বেশি করে ফেলবে। তবে আমাদের বোলাররা ভালো কামব্যাক করেছে। যদিও শেষ ৪ ওভারে আমরা খুব ভালো করিনি। তবে এমন হতেই পারে।
l সবাই ভালো খেলছে।
কাকে বাদ দিয়ে কাকে রাখবেন?
মুশফিক: আসলেই মুশকিল। আমিও চিন্তা করছি সাকিব ফিট হয়ে এলে কাকে ড্রপ করে কাকে খেলাব। অবশ্যই এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ হবে। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য খুবই ভালো লক্ষণ। যারাই সুযোগ পাচ্ছে, তারাই ভালো করছে।
l সিরিজসেরা হয়ে বিস্মিত কি না?
মুশফিক: আমি কখনোই ভাবিনি যে আমিই ম্যান অব দ্য সিরিজ হব। আমি আরও নাঈম ভাইকে আগাম অভিনন্দন জানিয়েছিলাম। সর্বোচ্চ রান সিরিজে, সঙ্গে দুটো ম্যাচ উইনিং ইনিংস। তাঁর দুর্ভাগ্য...কিন্তু সবই আল্লাহর ইচ্ছা (হাসি...)।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।