পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হত্যা মামলায় আজ মঙ্গলবার রায় ঘোষণা করা হবে। এ উপলক্ষে ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ আদালত ঘিরে নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা।
রায় ঘোষণার জন্য আদালতের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। আসামিদের নিয়ে আসা হয়েছে। তাঁদের সবার ডান্ডাবেরি পড়ানো।
তাঁদেরকে বসতে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ, র্যাব ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা চারদিক দিয়ে আদালত এলাকা ঘিরে রেখেছেন। বকশিবাজার ও উর্দু রোড দিয়ে প্রবেশপথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আদালতের কার্যক্রম শুরু হবে।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বিদ্রোহের নামে পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে ঘটেছিল এক নারকীয় হত্যাকাণ্ড।
এ ঘটনায় ৫৭ সেনাকর্মকর্তাসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান।
বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন ৮৫০ বিডিআর জওয়ান। আসামির সংখ্যার দিক থেকে এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হত্যা মামলা। বিশেষ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান রায় ঘোষণা করবেন।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর বিদ্রোহের সূচনা হয়েছিল সুসজ্জিত দরবার হল থেকে।
সকাল সাড়ে নয়টার দিকে বিডিআরের তত্কালীন মহাপরিচালক শাকিল আহমেদের বক্তব্যের সময় দুজন সিপাহি অতর্কিতে মঞ্চে প্রবেশ করেন। এরপর জওয়ানেরা দুই দিন ধরে বিডিআর মহাপরিচালকসহ ৭৪ জনকে হত্যা করেন। কর্মকর্তাদের বাড়িঘরে লুটপাট ও ভাঙচুর চালান। সরকারি নথিপত্রেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বিদ্রোহ শুরুর ৩৩ ঘণ্টা পর শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির অবসান হয়।
এ ঘটনায় ২০০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থানার তত্কালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নবোজ্যোতি খীসা একটি হত্যা মামলা করেন। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) বিশেষ সুপার আবদুল কাহার আকন্দ মামলাটি তদন্ত করেন। তাঁকে সহযোগিতা করেন ২০০ কর্মকর্তা। ৫০০ দিন তদন্তের পর ২০১০ সালের ১২ জুলাই এ আদালতে হত্যা এবং অস্ত্র-বিস্ফোরক আইনে দুটি অভিযোগপত্র জমা দেয় সিআইডি। এতে ৮২৪ জনকে আসামি করা হয়।
পরে অধিকতর তদন্তে আরও ২৬ জনকে অভিযুক্ত করে বর্ধিত অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। সব মিলে আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ৮৫০।
এই মামলায় নথির সংখ্যা ৮৭ হাজার পৃষ্ঠা। আসামিদের মধ্যে বিডিআর জওয়ান আছেন ৭৮২, বেসামরিক সদস্য ২৩ জন। এর মধ্যে ২০ জন এখনো পলাতক।
বিচার চলার সময় চারজন মারা গেছেন, জামিনে আছেন ১৩ জন। জামিনে থাকা ১৩ জনের মধ্যে ১০ জন আদালতে হাজির হয়েছেন। বাকি তিনজন জোহরা খাতুন, আব্দুস সালাম ও লোনা আক্তার হাজির হতে পারেননি। পিলখানা হত্যা মামলায় সাবেক সাংসদ নাসির উদ্দিন পিন্টু ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা তোরাব আলীও আসামি।
২০১১ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি মামলার বিচার শুরু হয়।
চার বছর আট মাসে মামলাটি ২৩২ কার্যদিবস অতিক্রম করে। আজ রায় ঘোষণার মধ্যে শেষ হবে এ মামলার সব কার্যক্রম।
সুত্রঃ প্রথম আলো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।