আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দুজনের বুদ্ধিতে বাঁচল ট্রেনের যাত্রীরা

হেলালউদ্দিন ও নুরুল ইসলাম আজ বুধবার ভোরে টঙ্গীর বনমালা এলাকায় রেললাইনের পাশে খালে মাছ ধরছিলেন। এর মধ্যে দেখেন, কয়েকজন যুবক রেললাইনে ফিশপ্লেট খুলছেন। তাঁরা নিষেধ করলে ওই যুবকেরা তাঁদের মারধর করার হুমকি দেন। কিছুক্ষণ পর ট্রেন আসতে দেখে একজন নিজের গামছা, আরেকজন বড়শির লাঠির মাথায় লাল কাপড়ের টুকরা বেঁধে ট্রেনের দিকে দৌড়াতে থাকেন।

আজ সকালের দিকে হেলাল ও নুরুল ইসলামের বুদ্ধিমত্তায় এভাবে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা ট্রেনটিকে বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করেছেন।

দুর্ঘটনার কবল থেকে বেঁচে গেছে ট্রেনের প্রায় তিন হাজার যাত্রী।

টঙ্গী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ রেললাইনে নাশকতার বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, হরতাল-সমর্থকেরাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। তবে এখনো কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।

হেলাল, নুরুল ইসলাম ও রেললাইনের পাশে রুপালি মত্স্য খামারের নৈশপ্রহরী বিপ্লব বলেন, আজ ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে ১০-১৫ জন যুবক রেললাইনের নাটবল্টু খুলে রেললাইনের নিচের পাথর ও মাটি সরিয়ে গর্ত করেন। তাঁরা এগিয়ে গেলে যুবকেরা তাঁদের লক্ষ্য করে পাথর ছোড়েন এবং মারধরের হুমকি দেন।

ভয়ে তাঁরা আর ওই দিকে যাননি। নৈশপ্রহরী অন্যত্র চলে যান। যুবকেরাও কিছুক্ষণ পর চলে যান।

হেলাল ও নুরুল বলেন, তাঁরা দুজনই আবার মাছ ধরায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এরই মধ্যে ট্রেন আসতে দেখে তাঁদের মনে হলো, সর্বনাশ; রেললাইন আলগা।

হেলাল দ্রুত নিজের গামছা হাতে নিয়ে নাড়াতে নাড়াতে রেললাইনের পাশ দিয়ে ট্রেনের দিকে ছুটতে থাকেন। আর নুরুল রেললাইনের পাশে রশি দিয়ে ঝোলানো ছোট ছোট লাল নিশান খুলে নিয়ে বড়শির লাঠির মাথায় বেঁধে দৌড়াতে থাকেন। তাঁদের দেখে ট্রেনচালক ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণ করেন। থামাতে থামাতে ট্রেনের কয়েকটা বগি ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইনের ওপর দিয়ে চলে যায়। তবে গতি কম থাকায় ট্রেনটি রক্ষা পেয়েছে।

হেলালের বাড়ি ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার সতেরবাড়ী গ্রামে। টঙ্গীর দত্তপাড়া এলাকায় ভাড়াবাড়িতে থাকেন। তিনি ফেরি করে মুরগি বিক্রি করেন। হরতালের কারণে আজ মাছ ধরতে যান। টঙ্গীর দত্তপাড়া এলাকার নুরুল ইসলাম সবজির ব্যবসা করেন।

তিনিও হরতালের কারণে মাছ ধরতে যান। ট্রেনচালক এম এ শহিদ প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘রেললাইনের ফিশপ্লেট খোলা থাকায় দূর থেকে ওই স্থানে গর্ত লক্ষ করি। রেললাইনের পাশে এক ব্যক্তি গামছা নাড়িয়ে থাকতে পারেন। ট্রেন থামার সময় ইঞ্জিন অনেকটা লাফিয়ে উঠে লাইনে স্লিপারের ওপর থাকায় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে। লাইন মেরামতের পর সকাল সাতটা ১০ মিনিটে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.