১ম অংশ
রাজ । একটি ছেলে । ভাবুক প্রকৃতির । আশেপাশের জগত্ সম্পর্কে তার ধারনা খুব অস্পষ্ট । সে মনে করে পৃথীবির সবচেয়ে কঠিন কাজ হচ্ছে শাহবাগের রমনা পার্কের সামনে থেকে যাত্রাবাড়ীর বাসে চড়া ।
সে যতবারই একা শাহবাগ গিয়েছে ততবারই হয় সিএনজি না হয় রিকশায় করে যাত্রাবাড়ী এসেছে । ছেলেটির কিছুদিন পর টেষ্ট পরীক্ষা ছাত্র হিসেবে নিম্ন মাঝারী ধরনের অর্থ্যাত্ মাঝারী রকমেরও না আবার ৬/৭ বিষয়ে ফেল করে এরকমও না । যাই হোক সে একদিন তার এলাকার একটি বন্ধু যার নাম শুভ্র তাকে দেখে একটি মেয়ের সাথে মোবাইলে কথা বলছে । এখানে একটি কথা উল্লেখ্য যে রাজ ছেলেটা মেয়েদেরকে বাঘের মত ভয় পায় । আর মোবাইলে কোন মেয়ের সাথে কথা বলাটা সে আরও ভয়ের বলে মনে করে ।
যাই হোক সে কী মনে করে যেন শুভ্রর থেকে তার সেই মোবাইলে কথা বলা মেয়েটির মোবাইল নাম্বার নেয় । রাজ একদিন রাতে মোবাইল টিপতে টিপতে হঠ্যাত্ করে নওরীনের নাম্বারটি দেখে । ও বলতে ভুলে গিয়েছি যে মেয়েটির নাম নওরীন ।
যাই হোক তারপর সে কি মনে করে মেয়েটিকে একটা মেসেজ দেয় যে "ami apnar bondhu hote chai". মেয়েটি এই মেসেজটি পেয়ে রাজকে ফোন দিতে থাকে । কিন্তু রাজের পরিবার রাতের বেলা কারও সাথে মোবাইলে কথা বলা পছন্দ করত না সে মেয়েই হোক আর ছেলেই হোক ।
তারপর রাজের সাথে নওরীনের অনেক মেসেজ আদান প্রদান হয় । তারা ছিল একই ষ্কুলের ষ্টুডেন্ট । কিন্তু কেউ কাউকে দেখেনি । তবে এরই মাঝে রাজ একদিন বোরকা পরিহিত অবষ্থায় নওরীনকে দেখে ফেলে । যদিও মুখ দেখেনি কিন্তু তবুও তার সান্তনা যে সে নওরীনকে স্বচোখে দেখেছে ।
বলে রাখা ভালো শুভ্র নওরীনকে পাগলের মত ভালোবাসত । কিন্তু নওরীন শুভ্রকে কখনই ভালোবাসেনি । ধীরে ধীরে তাদের এস.এস.সি পরীক্ষা শেষ হল । অফুরন্ত অবসর । রাজ আবার কম্পিউটারের প্রতি অনেক আগ্রহী ছিলো,তাই সে কম্পিউটার শিখতে একটি ট্রেনিং সেন্টারে ভর্তি হলো ।
কয়েকদিন গেলো যাবার পর আবিষ্কার করলো যে নওরীন এই ট্রেনিং সেন্টারেই ভর্তি হয়েছে । প্রতিদিন দুই একটি কথা বিনিময় এভাবেই হয়ে গেলো তাদের বন্ধুত্ব শুধু বন্ধুত্ব বললে ভুল হবে প্রানের বন্ধুত্ব তৈরি হল ।
তাদের মধ্যে এমনই মিল যে সবাই তাদের হিংসা করতে লাগলো । তারা একে অপরকে বলতে থাকলো মনের সকল কথাগুলো । জানতে পারলো কার মনে কী কষ্ট এবং কত আবেগ লুকিয়ে আছে ।
রাজ এইদিক দিয়ে চিন্তা করলো আরে আমি এই মেয়েটার সাথে এত ফ্রী হলাম কী করে?আমিতো আজ পর্যন্ত কোন মেয়ের দিকে চোখ তুলে তাকাতেই সাহস পেতাম না । যাই হোক মহান আল্লাহ তাআলা মনে হয় তাদের সম্পর্কটা এভাবে লিখে রেখেছিল তাই এইভাবেই এই সম্পর্কটা হয়ে গেছে ।
এরই মধ্যে তাদের এস,এস,সির ফলাফল দিল । রাজ পেল 4.13 এবং নওরীন পেল 4.63 । তারপর রাজ ভর্তি হল একটি বেসরকারী কলেজে ।
অপরদিকে নওরীন ভর্তি হল দেশের একটি খ্যাতনামা কলেজ হলিক্রস কলেজে ।
নওরীন একটি ছেলেকে খুব ভালোবাসতো যার নাম ছিল বিজয় । কিন্তু ছেলেটি নওরীনকে সিরিয়াস লাভ করতো না যেটা ছিল শুধুই সময় কাটানো । ধীরে ধীরে সময় যেতে লাগলো এরই মধ্যে রাজ একদিন জানতে পারলো যে নওরীনের সাথে বিজয়ের ব্রেক আপ হয়ে গেছে ।
তার দুইদিন পরে রাজের সাথে নওরীনের দেখা হল ।
এবং নওরীন অনেক কাঁদলো । সেই দিনই রাজ আসলে বুঝতে পারলো যে মেয়ে হয়ে জন্মানোটা অনেক কষ্টের । যাই হোক কয়েক মাসেই নওরীন কষ্টটা মেনে নিল । চলে গেল আরও কয়েকমাস । তাদের কম্পিউটার ট্রেনিং কোর্স সম্পন্ন হল ।
রাজ নওরীনকে দেখে না ৩মাস+ । তবে তাদের মাঝে প্রায়ই মোবাইলে কথা হত ।
এরই মাঝে চলে এল একটি বিশেষ যাদুকরী সংখ্যার দিন,যা একটি শতাব্দীতে একবারই আসে (তারিখটি উল্লেখ করবোনা সবারই বুঝে নেয়ার কথা) ।
এই দিনে রাজ,শুভ্র ও তাদের আরও তিনজন বন্ধু ধানমন্ডি যাবার প্ল্যান করলো ।
প্ল্যানটি রাজেরই করা ।
এমন সময় রাজ চিন্তা করলো আচ্ছা নওরীনকে সাথে নিলে কেমন হয় । যেই ভাবা সেই কাজ । নওরীনও রাজের কথা ভেবে রাজি হয়ে গেল ।
তারপর সবাই যাবে লেকে । রিকশা নিতে হবে এমন সময় নওরীন বললো আমি রাজের সাথে যাবো ।
রাজ বললো এ কেমন কথা তুই যাবি শুভ্রের সাথে । কিন্তু না নওরীন বলে রাজকে তুই যদি আমার সাথে রিকশায় না চড়িস তাহলে আমি কিন্তু বাসায় চলে যাব । অগ্যতা কী আর করা উঠতেই হলো । শুভ্র কিছু মনে করেনি কারন সে জানে যে রাজেরই জন্যেই সে নওরীনের দেখা পেয়েছে । কিন্তু এই দিক রাজ ভয় এবং আনন্দে আত্বহারা ।
কারন এইটা ছিল তার জীবনে প্রথম কোন মেয়ের সাথে রিকশায় চড়া । আর ভয়ের কারন হল তার অন্য বন্ধুরা তাকে দোষারোপ করতে লাগলো । যাই হোক তারা অবশেষে ধানমন্ডি লেকে পৌছালো । এই দিক দিয়ে রাজের একটা ফেসবুক বন্ধু ছিল যার নাম ছিল স্বপ্নীল । স্বপ্নীলের সাথে রাজের খুব ভালো বন্ধুত্ব ।
তো লেকে এসে রাজ স্বপ্নীলকে একটা ফোন দিলো । স্বপ্নীল আসলো রাজের সাথে দেখা করবার জন্য । স্বপ্নীল আর রাজ অনেক কথা বললো । এক সময় স্বপ্নীল বললো আচ্ছা রাজ এই মেয়েটা কে?রাজ বললো বন্ধু । ও শুভ্রর জি এফ ।
কিন্তু স্বপ্নীল বললো ওর থেকে কিন্তু এই মেয়েটাকে তোর সাথেই বেশ ভালো মানিয়েছে । এই কথাটা শুনে রাজ কি মনে করে যেনো স্বপ্নিলকে ধন্যবাদ দিলো।
স্বপ্নিল চিন্তা করতে লাগলো “ডালমে কুচ কালা হ্যাঁয়”।
যাবার সময়ও নওরিন রাজুর সাথে যেতে চাইলো কিন্তু এইবার রাজের বন্ধুরা রাজের হাত ধরে রাখলো এবং নওরিনকে শুভ্রর সাথে এক রিক্সায় তুলে দিলো।
এরপর থেকে কেনো যেনো রাজের অনেক খারাপ লাগতে লাগলো ।
শুধু মনে হতে লাগলো কি যেনো নেই ,কি যেনো নেই। এইবার রাজ বুঝতে পারলো যে ,সে আসলে নওরিনের প্রতি দুর্বল । সারাটা পথ রাজ কোন কথা বলল না।
অপরদিকে নওরিন একটু পর পর শুভ্রকে বলতে লাগলো যে রাজ কোথায়?ওকে ফোন দাও।
যাই হোক সবাই বাসায় আসলো।
রাজ ফেইসবুকে অনেক একটিভ । রাতে সে ফেইসবুকে বসলো । রাজদের একটা কনভারসেশন ছিলো সেখানে তারা অনেকেই আড্ডা মারতো। যাদের মধ্যে ছিলো জাফরান, স্বপ্নিল। যাই হোক রাজ তাদের সাথে মনের কথা গুলো শেয়ার করলো।
এবং জানতে চাইলো তার কি করনীয়?
তখন স্বপ্নিলের সাথে রাজের কথকোপন ছিলো এইরকম :
স্বপ্নিলঃতুমিকি ঐ মেয়ের প্রতি দূর্বলতা অনুভব করছ?
রাজঃহুম
স্বপ্নিলঃ আমারতো মনে হয় ঐ মেয়ে তোমাকে ফিরিয়ে দিবে না...... কিন্তু তোমার বন্ধু?
রাজঃতোমার ধারনা ১০০% সঠিক । ওই মেয়ে আমাকে ফিরিয়ে দিবেনা ।
একদিকে প্রেম আরেক দিকে বন্ধু ।
স্বপ্নিলঃআমারতো মনে হল যে তোমার ঐ ফ্রেন্ড এই মেয়ের প্রতি অতটা আগ্রহ নেই। প্রেম করতে হয় বলে করছে।
তুমি যদি চাও আমি তোমার ঐ বন্ধুকে বোঝানোর চেষ্ট করতি পারি....
রাজঃ আরে নাহ মিয়া আমার ওই বন্ধু কইছে ওই নাকি ওই মাইয়ারে বিয়াও করবো।
স্বপ্নিলঃআমি নিশ্চিত তিন মাসও টিকবেনা। তুমি যাস্ট মেয়েটাকে ফলো করতে থাকো
রাজঃ ভাই ওই মাইয়া ওর পরিবারের পর আমাকেই সবচেয়ে বেশী পছন্দ করে ।
এও বলছে যে আমি পুরুষজাতির ভেতর নিজের বাবার পর একমাত্র তোকেই বিশ্বাস করি ।
স্বপ্নিলঃতাইলে ঐ ছেলেরে পছন্দ করে কেন?
রাজঃআরে ওই মাইয়াডা আমার বন্ধুরে পছন্দ করেনা আমি জানি এবং ১০০% SURE.
ওই মাইয়া আমার খুবই ভালো ফ্রেন্ড ।
তুই তোকারি সম্পর্ক । ও প্রায়ই ফাজলামি করে আমাকে বলে আচ্ছা আমাদের বিয়ে হলেতো সারাদিন মারামারি করতে করতেই যাবে ।
আজকে বললো আচ্ছা রাজ তোর আর আমার বিয়ে হলে হানিমুনে কই যাবি?
স্বপ্নিলঃরাজ ভাই প্রীজ তুমি ঐ মেয়েরে প্রোপোজ করো। আর তোমার ঐ ফ্রেন্ডের নাম্বারটা একটু দাও। দেখি কিছু করতে পারি কিনা
রাজঃদোষ্তো তুমি আসলেই একটা যোগ্য বন্ধু আমার ।
কিন্তু........
আমি শিওর ওই মাইয়াডাও আমারে অনেক ভালোবাসে । কিন্তু একদিকে প্রেম অন্যদিকে বন্ধু কি করবো বুঝতে পারছিনা
স্বপ্নিলঃতোমার ঐ বন্ধুর বাসা কই?
আমিও সিওর মেয়েটা তোমারে লাইক করে
রাজঃআমার পাশের বিল্ডিংয়েই
স্বপ্নিলঃতাহলেতো তোমাদের উদিকে আসলে দেখা হবে। আমি অবশ্যই তার সাথে এই নিয়ে কথা বলব
রাজঃনারে ভাই । কিছু বইলো না । তাহলে আমাদের বন্ধুত্বটা নষ্ট হবে
স্বপ্নিলঃসব কিছু ঠিক রেখেই সব করা যায় কিনা দেখি
রাজঃভাই আমি আসলে প্রচন্ড ভয় পাইতেছি
স্বপ্নিলঃঅসুবিধা নেই।
সব ঠিক হয়ে যাবে
রাজঃদোয়া কইরো
স্বপ্নিলঃঅবশ্যই ।
এইবার জাফরানের সাথে রাজের কথা বার্তা গুলো ছিলো এইরকমঃ
রাজঃওই মাইয়া আমার এক ক্লোজ ফ্রেন্ডের জিএফ।
জাফরানঃক্লোজ ফ্রেন্ডের জিএফ হোক... মেয়েটার কাছ থেকে কি রকম সহযোগীতা পেলি?
রাজঃওই মাইয়া ওর পরিবারের পর আমাকেই সবচেয়ে বেশী পছন্দ করে ।
এও বলছে যে আমি পুরুষজাতির ভেতর নিজের বাবার পর একমাত্র তোকেই বিশ্বাস করি ।
জাফরানঃতাহলে তো হাতের মুঠোয়... তোর ঐ ফ্রেন্ডের কি অবস্থা।
রাজঃওই মাইয়া আমার খুবই ভালো ফ্রেন্ড । তুই তোকারি সম্পর্ক । ও প্রায়ই ফাজলামি করে আমাকে বলে আচ্ছা আমাদের বিয়ে হলেতো সারাদিন মারামারি করতে করতেই যাবে ।
আজকে বললো আচ্ছা রাজ তোর আর আমার বিয়ে হলে হানিমুনে কই যাবি?
আর ওই মাইয়াডা আমার বন্ধুরে পছন্দ করেনা আমি জানি এবং ১০০% SURE.
জাফরানঃদোস্ত প্লিজ ভালবাসাতে হাতছাড়া করিসনা।
দোস্ত প্লিজ ভালবাসাকে হাতছাড়া করিসনা...
I think she will be the best for you .
রাজঃদোষ্ত আমি শিওর ওই মাইয়াডাও আমারে অনেক ভালোবাসে ।
কিন্তু একদিকে প্রেম অন্যদিকে বন্ধু কি করবো বুঝতে পারছিনা
জাফরানঃতাহলে আর দেরী নয়... প্রপোস করে ফেল।
রাজঃকিন্তু বন্ধু?
জাফরানঃদেখ... তোর বন্ধু যদি হাত বাড়ায় তাহলে তো মেয়েটিকে পাবেনা... মাঝখান থেকে তুইও নয়, মেয়েটিও তোকে পাবেনা...
কিন্তু তোরা চাইলে একে অপরকে পেতে পারিস... এক্ষেত্রে ঐ বন্ধুকে বুঝিয়ে বললে সে কি সেক্রিফাইস করবেনা?
রাজঃদোষ্ত তোর কথাগুলি যুক্তিসম্পন্ন । কিন্তু ...
জাফরানঃকিন্তু ফ্রেন্ডশীপকে ভয় পাচ্ছিস?
শোন, আমার একটা ফ্রেন্ড আমি যে মেয়েটাকে পছন্দ করি তাকে পছন্দ করতো। কিন্তু মেয়েটা তাকে ভাই ভাবে...
আমি ঐ ফ্রেন্ডের দিকে তাকিয়ে মেয়েটাকে আর প্রপোস করিনি এখনও। বন্ধুর জন্য নিজের ভালবাসা বিসর্জন করেছিলাম...
কয়েকবছর ওর সাথে কথা বলতাম না...
কিন্তু ঐ বন্ধু আমার প্রতি কোন কৃতজ্ঞতা না দেখিয়েই বলেছিল, আমি নাকি তার সাথে প্রতারণা করেছি...
কিন্তু কি লাভ, ঐ ফ্রেন্ড পরে মেয়েটার ভাই হয়ে গেল আর আমি মেয়েটার এতটা কাছে থাকা সত্বেও আর না বলা কথা বলার সুযোগ পেলাম না...
পরে দেখলাম She also wants me...
But আমি তো ঐ বন্ধুর জন্য তার চোখে অনেক দিন কালারড ছিলাম...
তাই তোকে বলছি, তুই যার কথা ভাবছিস (বন্ধু) সে হয়তো তার কথা ভাবেনা... so নিজেকে ধোকা দিসনা... ভালবাসার কাছে অপরাধী হতে যাস না
রাজঃঠিক আছে বন্ধু ।
জাফরানঃAll the best.,
রাজঃদোয়া করিস।
জাফরানঃএটা বলতে হয়?
রাজঃতুই আসলেই আমার একটা ভালো বন্ধুরে দোষ্ত।
জাফরানঃদোস্ত তোর জন্য রইল শুভ কামনা।
.............................................!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!
যাই হোক সব কিছু ভেবে চিন্তে রাজ নির্ধারণ করলো যে সে নওরিনকে তার মনের কথা গুলো বলবে এতে করে আর কিছু হোক আর না হোক রাজের মনটা শান্তি পাবে ।
পরদিন রাতে রাজ নওরিনকে ফোন দিল।
এবং বলতে লাগলোঃ
রাজঃআচ্ছা তোর সামনে যদি কখনো সুযোগ আসে যে বিজয় কিংবা শুভ্র এই দুইজনের একজনকে বেছে নিতে তাহলে তুই কাকে বেছে নিবি?
নওরিনঃকাওকেই না কারন একজন আমাকে কষ্ট দিবে আর আরেকজনকে আমি কষ্ট দিবো।
রাজঃ আরেকটা প্রশ্ন । এই প্রশ্নটা হয়তবা তোর কাছে সবচেয়ে সহজ হবে কিংবা সব চেয়ে কঠিন হবে।
প্রশ্নটা হল।
তোর সামনে যদি কখনো সুযোগ আসে যে বিজয়, শুভ্র কিংবা আমি এই তিনজনের একজনকে বেছে নিতে তাহলে তুই কাকে বেছে নিবি?
নওরিনঃ এক মুহূর্তও চিন্তা না করে।
অবশ্যই তোকে।
রাজঃআমি যদি তোকে I love you বলি তাহলে তুই কি উত্তর দিবি?
নওরিনঃসেটা আমি তোকে সামনা সামনি দেখা হলে উত্তর দিবো।
..................। । ১টি দিন চলে গেলো।
। ........................
শুক্রবার
রাজ নামাজ পরে বাসায় আসছে, হঠাত করে রাজ দেখে যে নওরিন বাসা থেকে ওর কোচিংয়ে যাচ্ছে। ওর কোচিং ছিলো ফারমগেতে। বাসায় এসেই রাজ ফোন দিলো নওরিনকে। রাজ ওর সাথে কথা বলে ঠিক করলো যে আজ নওরিনের কোচিং শেষে দেখা করবে।
যে ছেলে একা কখনও বাসে উঠতে পারেনা ওই ছেলেটা যাত্রাবাড়ী থেকে ফার্মগেট গেলো একা।
তারপর দুইজন গেলো ঘুরতে সংসদ ভবন এলাকায় তারা হাঁটাহাঁটি করলো অনেকখন। তারপর নওরিন বলতে শুরু করলোঃ
“”দেখ রাজ আমার ধারনা এইটা তোর এক ধরনের আবেগ। আমি তোর খুব ভালো বন্ধু। ভবিষ্যতের কথা বলা যায় না।
তখন আমাদের বিয়ে হলেও হতে পারে। তবে আমি তোর সাথে এবং পাশে সবসময় ছিলাম,আছি,থাকবো””। ……………………………………………
তারপর তারা আরও কিছুহ্মন রিক্সায় করে ঘুরলো। একে অপরের হাত ধরলো। যা ছিলো খুব সুন্দর একটি উপভোগ্য সময়।
তারপরও তারা মাঝে মাঝে মোবাইলে কথা বলতো।
২য় অংশ
রাজ ছিলো তার পরিবারের বড় সন্তান। তাদের আর্থিক অবস্থা এত ভালো ছিলো না আবার খারাপও ছিলো না। তবুও রাজ তার সংসারের হাল ধরার জন্য পড়া লেখা ছেড়ে দিলো । যদিও তখন নওরিন তাকে অনেক বার বলেছে পরালেখা করার জন্য কিন্তু রাজ তার পরিবারের সামর্থ্য জানতো,তাই আর কোনো মত বদল করেনি।
তারপর একদিন রাজ সিঙ্গাপুর চলে গেলো জীবন ধারনের উদ্দেশে। ………………………………………….
আট বছর পরের কথা।
সালঃ২০২০। ………………..
রাজ আজ সফল একজন মানুষ। সিঙ্গাপুরের সব চেয়ে বড় ইলেকট্রিক প্রতিষ্ঠান “ক্যপেল ইলেকট্রিক ইন্ডাস্ট্রিজ” এর ৭০% শেয়ারের মালিক রাজ।
রাজই সিঙ্গাপুরের একমাত্র প্রবাসী যে কিনা সিঙ্গাপুরের প্রথম সারির কোন প্রতিষ্ঠানের এত শেয়ারের মালিক।
যাই হোক কিছুদিন ধরে রাজ দেশে যাবার জন্য পাগল হয়ে উথেছে। কারন তার শুধু মনে হচ্ছে কি যেন নেই ,কি যেনো নেই।
দীর্ঘ আট বছর পর দেশে আসলো রাজ। এয়ারপোর্টে তাকে নিতে এসেছে তার বাবা,মা,এবং তার আদরের ছোট দুই ভাই।
রাজ তার বাসায় যাচ্ছে আর ভাবছে নওরিনের কথা। রাজ জানে এখন নওরিনকে সে সম্ভবত দুইটি র যে কোনো একটি রুপে দেখতে পারবে।
১ম রুপঃ নওরিন এখন ভার্সিটিতে পড়াশুনা করছে। এবং নওরিন আজও তার অপেহ্মায় দিন গুনে। কারন নওরিন জানে রাজ তাকে আজও ভুলতে পারেনি।
রাজ যাবে নওরিনের কাছে এবং নওরিনকে ঘরের বউ করে নিয়ে আসবে তার বাসায়।
২য় রুপঃ নওরিনের বিয়ে হয়ে গেছে। তার স্বামী দেশের খ্যাতনামা একজন ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার । খুব সুখে আছে নওরিন । তবুও মাঝে মাঝে নওরিনের কেনো যেনো কস্ট লাগে রাজের কথা ভেবে।
রাজ আসবে তার বাসায় দেখা করবে নওরিনের সাথে , নওরিনের স্বামীর সাথে।
এখন আমি পাঠকদের কাছে তুলে দিচ্ছি তারা রাজ এবং নওরিনকে কোন রুপে দেখতে চায়।
………………………………………...সমাপ্ত……………………………………………
কিছু কথাঃ১ম অংশটা পুরোপুরি আমার জীবনের একটি ঘটনা। বাকিটুকু কি হবে আমি জানিনা। তবুও আমার জন্য দোয়া করবেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।