বিক্রি না হওয়ায় কুষ্টিয়ার ঐতিহ্যবাহী সরকারি চিনিকলে উৎপাদিত ২৮ কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকার চিনি গুদামে পড়ে আছে। চিনিকল সূত্র জানিয়েছে, ১৩ হাজার টন ধারণ ক্ষমতার দুটি গুদামে চিনিকলে উৎপাদিত পাঁচ হাজার ৬২৫ টন চিনি পড়ে আছে। বর্তমান মিলগেট দর অনুযায়ী, প্রতি মেট্রিক টন ৫০ হাজার টাকা। সে হিসাবে, এই চিনির দাম ২৮ কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। চিনিকলটির একাধিক ডিলার প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, বেসরকারি পরিশোধন কারখানার চিনির চেয়ে এ চিনিকলে উৎপাদিত চিনির দাম বেশি হওয়ায় গত দুই অর্থবছর ধরেই তাঁরা এখান থেকে চিনি তুলছেন না।
কুষ্টিয়া চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এভাবে দিনের পর দিন চিনি পড়ে থাকায় এর গুণগত মান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ২০১১ সালে উৎপাদিত হওয়া ৫০০ টন চিনি অবিক্রীত আছে। সেটা খাওয়ার উপযোগী করতে হলে আবারও পরিশোধন করতে হবে। চিনিকল সূত্র জানায়, ২০১২-১৩ আখ মাড়াই মৌসুমে চার হাজার ৪১৩ টন চিনি উৎপাদিত হয়েছে। বিক্রি না হওয়ায় এসব চিনি গুদামেই পড়ে আছে।
আগের মৌসুমের আরও দুই হাজার ৩৫০ টন চিনিও এখনো মজুত আছে। গত জুলাই পর্যন্ত পুলিশ, বিজিবি এবং চিনিকলের নিয়মিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রেশন হিসেবে ৬৩৮ টন চিনি তুলেছেন। দেশবন্ধু চিনিকল কর্তৃপক্ষ এক হাজার ৩০০ টন চিনি কেনার জন্য চুক্তি করলেও চিনি তুলেছে ৫০০ টন। এই চিনিটা রপ্তানি করবে দেশবন্ধু।
ডিলারদের চিনি না তোলার আরেকটি কারণ হলো, খুচরা বিক্রেতারা চিনিকলে উৎপাদিত চিনি বিক্রি করতে চান না।
কারণ বেসরকারি চিনিকলে উৎপাদিত চিনির দাম কেজিতে আট থেকে নয় টাকা কম, দেখতেও সুন্দর। অন্যদিকে সরকারি চিনিকলের চিনির দাম তো বেশিই, দেখতেও লালচে। চিনিকলের শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি সুলতান আহমেদ বলেন, সময়মতো চিনি বিক্রি না হওয়ায় মিলের শ্রমিক-কর্মচারীরা ঠিকমতো বেতন পাচ্ছে না। চিনিকল আখচাষি কল্যাণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আক্কাচ আলী বলেন, এই কারখানার ওপর এলাকার আখচাষিদের ভাগ্য নির্ভর করছে। চিনি বিক্রি না হওয়ায় চাষিরা আখ চাষের টাকাও ঠিকমতো পাচ্ছেন না।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।