আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাঠে পা দিয়েই রোহিতের বিশ্বরেকর্ড!

অভিষেকে সেঞ্চুরি অবশ্যই বিরাট এক কীর্তি। কিন্তু এই কীর্তি এতবার দেখেছে টেস্ট ক্রিকেট, সয়ে যাওয়া চোখে এখন আর তা বিস্ময় জায়গায় না। ইতিহাসের প্রথম টেস্টেই চার্লস ব্যানারম্যানের হাত ধরে যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, অভিষেকে সেঞ্চুরির সেই তালিকায় একে একে নাম লিখিয়েছেন ৯৮ জন। অভিষেকে টেস্ট সেঞ্চুরির কীর্তিমানদের তালিকাটাই সেঞ্চুরি পূর্ণ করে ফেলবে আর কিছুদিনের মধ্যে।
৯৮তম ব্যাটসম্যান হিসেবে সেই কীর্তির অংশীদার হলেন রোহিত শর্মা।

এই তালিকায় থাকা রোহিতের ঠিক আগের ব্যাটসম্যানটি শিখর ধাওয়ান, যিনি অভিষেকে ডাবল সেঞ্চুরিই প্রায় করতে বসেছিলেন। তালিকাটা অনেক লম্বা বলেই আজ রোহিতের সেঞ্চুরি নিয়ে মুগ্ধতা জন্মাতে পারে, বিস্ময় নয়। ১৯৩৩ সালে লালা অমরনাথের ব্যাটে যে সূচনা হয়েছিল, সেই তালিকায় রোহিতসহ ১৩জন ভারতীয় অভিষেকে সেঞ্চুরি করলেন। এঁদের মধ্যে অমরনাথের ছেলে সুরীন্দর অমরনাথ যেমন আছেন; তেমনি আছেন গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথ থেকে শুরু করে মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন, সৌরভ গাঙ্গুলী হয়ে এ সময়ের তারকা, বীরেন্দর শেবাগ, সুরেশ রায়নারও।
প্রশ্ন উঠতে পারে, তাহলে রোহিতের বিশ্বরেকর্ডের কীর্তিটা কী? সেটিও মাঠে পা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে!
ঠিকই ধরেছেন।

রোহিত ব্যাট করেছেন কলকাতা টেস্টের দ্বিতীয় দিনে। সেঞ্চুরিটিও এসেছে আজ দ্বিতীয় দিনেই। কিন্তু কাল ফিল্ডিংয়ে নামার সঙ্গে সঙ্গেই একটি রেকর্ড গড়ে ফেলেছেন রোহিত। সবচেয়ে বেশি ওয়ানডে খেলে ফেলার পর টেস্ট অভিষেকের রেকর্ড! একশর বেশি ওয়ানডে খেলে নিজেকে প্রমাণ দেওয়ার পর টেস্ট অভিষেক—এমন দীর্ঘ অপেক্ষায় থাকতে হয়নি আর কাউকেই। ২ নভেম্বর ইতিহাসের তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডেতে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকানো ওয়ানডেটি ছিল রোহিতের ১০৮ নম্বর ওয়ানডে।

সেই কীর্তির চার দিন পর টেস্ট খেলার আজন্ম আরাধ্য স্বপ্ন পূর্ণ হয়েছে তাঁর।
সবচেয়ে বেশি ওয়ানডে খেলার পর টেস্ট অভিষেকের আরেক রেকর্ড ছিল রোহিতেরই বন্ধু রায়নার। রায়নাও দীর্ঘ অপেক্ষার পর টেস্ট-এর ‘টেস্ট’ পেয়েছেন। তাঁকে খেলতে হয়েছিল ৯৮টি টেস্ট। রায়না ভেঙে দিয়েছিলেন ৯৪ ওয়ানডে খেলে টেস্ট অভিষিক্ত অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসের রেকর্ড।


বলা যায় রায়নার বদলে দলে ঢুকে রায়নার রেকর্ডই ভেঙে দিয়েছেন রোহিত। রায়নার মতো করলেন অভিষেকে সেঞ্চুরিও।
৫৮টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচে ১৬টি সেঞ্চুরিসহ (এর একটি আবার অপরাজিত ৩০৯ রানের ইনিংস) ৬০.৭৮ গড়ে ৪ হাজার ৮০২ রান করার পরও কোনো ব্যাটসম্যানের টেস্ট অভিষেক না হলে সেটি বিস্ময় জাগায়ই। তবে রোহিতের জন্য যতটা না বিস্ময়, তার চেয়েও বেশি হচ্ছিল হা-হুতাশ। বেচারা ভুল সময়ে জন্মানোর খেসারত দিচ্ছিলেন।

শচীন টেন্ডুলকার, রাহুল দ্রাবিড়, ভিভিএস লক্ষ্মণদের যুগে টেস্ট একাদশে ঢুকবেন কী করে?
টেন্ডুলকার-লক্ষ্মণের ইনজুরি একবার টেস্ট অভিষেকের একেবারে দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল। ২০১০ সালেই টেস্ট অভিষেক হয়ে যেত তাঁর। ভাগ্যটা এতই খারাপ, অভিষেকের দিন সকালে নিজেই পড়লেন ইনজুরিতে! তাঁর বদলে অভিষেক হয়ে গেল ঋদ্ধিমান সাহার! মনে হচ্ছিল, বেচারার কপালটাই বুঝি খারাপ।

কিন্তু না। কেউ কেউ আছেন যাঁরা ভাগ্যের দিকে তাকিয়ে থাকেন না।

নিজের ভাগ্য নিজেই গড়েন। দলের ভীষণ দুঃসময়ে, টেন্ডুলকারের বিদায়ী সিরিজটা খুব বাজেভাবে শুরু করার শঙ্কায় কাঁপতে থাকা দলকে উদ্ধার করলেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিতে। সেটিও অভিষেকেই! সঙ্গে থাকল ১০৮টি ওয়ানডে খেলার পর টেস্ট অভিষেকের বিশ্বরেকর্ড, মন্দ কী!

 

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.