ক্রিকেট খেলেছেন এক সময়। বহু সম্মান বয়ে এনেছেন দেশের জন্য। তাকে বলা হয় বাংলাদেশের বর্তমান ক্রিকেটের কারিগর। ত্রিকেট ক্যারিয়ার শেষে ভালোবাসার টানে রয়ে গেছেন ক্রিকেটের সঙ্গেই। নির্বাচক, প্রধান নির্বাচক হয়ে মেধা ও মননশীলতায় সব সময় চেষ্টা করেছেন দেশসেরা দল গড়তে।
কখনো সফল হয়েছেন, কখনো বা ব্যর্থ। আকরাম খান; বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক। এখন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক। সদ্যসমাপ্ত নিউজিল্যান্ড সিরিজে ছিলেন মুশফিকদের ম্যানেজার। আগে প্রধান নির্বাচক হিসেবে দেখতেন এবং যাচাই-বাছাই করতেন দলের পারফরম্যান্স।
এবার দেখেছেন ম্যানেজার হয়ে। খুব কাছ থেকে ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স দেখে অভিভূত আকরাম। ব্ল্যাক ক্যাপসদের বিপক্ষে টাইগারদের লড়াই দেখে মনে করেছেন, প্রতিটি ক্রিকেটারই পরিণত ক্রিকেট খেলেছেন সিরিজে এবং জয়ের জন্য সবাইকেই মনে হয়েছে ক্ষুধার্ত। টেস্ট সিরিজে সমানে সমানে লড়াই। ওয়ানডে সিরিজে ধবলধোলাই।
যা বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম স্মরণীয় মুহূর্ত। টেস্ট এবং ওয়ানডে সিরিজে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করলেও টাইগাররা খেই হারিয়ে ফেলেছিল টি-২০ ক্রিকেটে। ১৫ রানে হারের পর টি-২০ ক্রিকেট এখন নিজেদের কাছে রহসম্যয় বলে স্বীকারও করেছেন টাইগার অধিনায়ক। জানিয়েছেন, টি-২০ ক্রিকেটে যে কৌশল, পরিকল্পনা, টেকনিক লাগে, সেটা এখনো রপ্ত করা হয়নি। তাই হার।
তবে ম্যানেজার আকরাম খান টি-২০ ক্রিকেটের হার নিয়ে তেমন চিন্তিত নন। পুরো সিরিজে দলের পারফরম্যান্সে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলেছেন, 'টি-২০ ম্যাচে ফাইট করেই হেরেছে। তবে টেস্ট ক্রিকেটে ক্রিকেটাররা যে রকম লড়াইয়ে মানসিকতা দেখিয়েছেন, তা অসাধারণ। আর ওয়ানডে সিরিজের পারফরম্যান্স অবিশ্বাস্য। '
সিরিজে সবাই ভালো ক্রিকেট খেলেছেন।
টেস্ট সিরিজে সাকিব আল হাসান থাকলেও ছিলেন না ওয়ানডে সিরিজ ও টি-২০ ক্রিকেটে। তারপরও তার অভাব অনুভূত হয়নি। সেটা পুষিয়ে দিয়েছেন নাঈম ইসলাম, মুমিনুল হক, মুশফিকরা। বুঝতে দেননি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের অভাব। মিডল অর্ডারে ক্রিকেটাররা দায়িত্বশীল ব্যাটিং করেছেন বলে জানান আকরাম, 'দলের সেরা ক্রিকেটার সাকিব ছিলেন না।
কিন্তু তার অভাব বুঝতে দেননি নাঈম, মুমিনুল, মুশফিক, নাসিররা। নাঈম খুব ভালো ব্যাটিং করেছেন ওয়ানডে সিরিজে। তার ব্যাটিং ছিল অনেক পরিণত। মুশফিক দলের প্রয়োজনে রান করেছেন। নাসির ভালো ব্যাটিং করেছেন।
' প্রশংসা করেছেন তরুণ প্রতিভা মুমিনুলের, 'টেস্ট সিরিজে অসাধারণ ব্যাটিং করেছেন মুমিনুল। তার টেকনিক দেখে আমি মুগ্ধ। তার টেম্পারমেন্ট অনেক ভালো। যদিও ওয়ানডে কিংবা টি-২০ ক্রিকেটে ততটা ভালো খেলেননি। তবে তিন নম্বর পজিশনে অনেকদূর যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তার।
অবশ্য এ জন্য তাকে আরও পরিশ্রম করতে হবে। ' সিরিজে তার কাছে দলের একটা জায়গাতেই দুর্বলতা চোখে পড়েছে। তামিম ইকবালের জুড়ি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না অনেক দিন ধরেই। তামিমের সঙ্গে ওপেন করেছেন শাহরিয়ার নাফিস, জুনায়েদ সিদ্দিকী, জহুরুল ইসলাম অমি, ইমরুল কায়েস খেলেছেন। কিন্তু থিতু হতে পারেনি কেউ।
এবার খেলেছেন এনামুল হক বিজয়। কিন্তু দলকে কোনো বড় ইনিংস উপহার দিতে পারেননি এনামুল। ওপেনারের অভাব বোঝা গেছে পুরো সিরিজেই বলে জানান, 'আসলে দলের ব্যাটিং অর্ডারে ২ নম্বর পজিশনে এখনো দুর্বলতা রয়ে গেছে। এনামুলকে দিয়ে চেষ্টা করানো হয়েছে। কোনো সন্দেহ নেই।
সে খুব প্রতিভাবান ক্রিকেটার। তাকে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে অনেক কষ্ট করতে হবে। '
দুই সিরিজ পর ফিরেছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। খেলেননি টেস্ট সিরিজ। কিন্তু ওয়ানডে সিরিজ ও টি-২০ ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন দেশসেরা পেসার।
তার বোলিংয়ে মুগ্ধ আকরাম, 'মাশরাফি আইকন ক্রিকেটার। তার মূল সমস্যা হচ্ছে ফিটনেস। ফিট মাশরাফি দলের জন্য অমূল্য সম্পদ। এবার খুবই ভালো বোলিং করেছেন তিনি। আশা করি এরপর আরও ভালো করবেন তিনি।
তবে সুস্থ থাকতে হবে তাকে। '
নির্বাচক হয়ে ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স দেখেছেন। এবার দেখলেন ম্যানেজার হয়ে। ম্যানেজার হয়ে দলের পারফরম্যান্সে শতভাগ না হলেও সন্তুষ্ট আকরাম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।