আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হরতালে বিধ্বস্ত চলচ্চিত্রশিল্প

হরতালে চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে চলচ্চিত্রশিল্প। অধিকাংশ প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ, শুটিংয়ে অংশ নেওয়া যাচ্ছে না, আউটডোর এবং এফডিসিতে আসতে পারছেন না শিল্পী কলাকুশলীরা। সব মিলিয়ে চলচ্চিত্র ব্যবসায় ধস নেমেছে। চলচ্চিত্রকারদের কথায় বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে চলতি সপ্তাহে মুক্তি পাওয়া চলচ্চিত্র দুটি। শুক্রবার মুক্তি পায় নায়করাজ রাজ্জাক পরিচালিত 'আয়না কাহিনী' এবং দেবাশীষ বিশ্বাসের 'ভালোবাসা জিন্দাবাদ'। প্রথম দিন দুটি চলচ্চিত্রের প্রতিই বিপুল দর্শক সাড়া মেলে। কিন্তু ওইদিন হরতালের ঘোষণা এবং রাজনৈতিক নেতাদের ধরপাকড়ে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। ফলে শনিবার প্রায় দর্শকশূন্য থাকে প্রেক্ষাগৃহ। রবিবার হরতাল শুরু হওয়ার পর দেশের বেশির ভাগ প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে চলচ্চিত্র দুটো চরম ক্ষতির মুখে পড়ে। শুধু চলচ্চিত্রই নয়, প্রেক্ষাগৃহগুলোও আর্থিক লোকসানের কবলে পড়েছে।

নায়করাজ বলেন, ১১টি প্রেক্ষাগৃহে আয়না কাহিনী মুক্তি দিয়েছিলাম। প্রথম দিনেই ব্যাপক দর্শক সাড়া পেয়েছি। কিন্তু হরতালের কারণে দ্বিতীয় দিন দর্শক কমে যায়। রবিবার থেকে তো প্রায় প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ হয়ে গেছে। বুধবার পর্যন্ত হরতাল, মানে পুরো সপ্তাহই শেষ। কী করব বুঝতে পারছি না। হরতালে শুধু চলচ্চিত্র নয়, সব ব্যবসাই ক্ষতির মুখে পড়েছে। আমি রাজনীতি করি না, তবে রাজনীতির প্রতি অগাধ শ্রদ্ধাবোধ রয়েছে। তাই রাজনীতিবিদদের বলব, প্লিজ আমাদের বাঁচান, দেশের মানুষকে শান্তি দিন, আমরা শান্তিতে থাকতে চাই। প্রেক্ষাগৃহ মালিকদের প্রতি আমার অনুরোধ, তারা যেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমার চলচ্চিত্রটি আবার প্রদর্শন করে। না হলে চলচ্চিত্রটি বিশাল ক্ষতির মুখে পড়বে। দর্শকদের কাছেও অনুরোধ, তারাও যেন আগামীতে আমার চলচ্চিত্রটি দেখতে আসেন।

দেবাশীষ বিশ্বাস বলেন, হরতালের কারণে ভালোবাসা জিন্দাবাদ ক্ষতির মুখে পড়েছে। বলতে গেলে সবার মতো হরতালে চলচ্চিত্রকাররাও জিম্মি হয়ে গেছে। জানি না এ অবস্থা থেকে কখন মুক্তি পাব।

চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি শহীদুল ইসলাম খোকন বলেন, হরতালে সব ব্যবসার মতো চলচ্চিত্রের ব্যবসাও চরম ক্ষতির মুখে পড়েছে। মানুষ হরতালের কারণে নিশ্চিন্তে ঘরের বাইরে যেতে পারেন না, প্রেক্ষাগৃহে যাবে কীভাবে। শিল্পী কলাকুশলীরা শুটিংয়েও আসতে পারেন না। এক কথায় চলচ্চিত্র ব্যবসা হরতালের কারণে একবারেই বন্ধ হতে বসেছে। আমরা হরতালের বিকল্প চাই। বলাকা সিনেমার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবি সিদ্দিক দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বলেন, হরতালে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি আমরা। প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছি। না হলে বোমা হামলা হয়। কিন্তু কর্মচারীদের বেতন, ইলেকট্রিক বিলসহ আনুষঙ্গিক সব খরচই দিতে হচ্ছে। এভাবে কী করে ব্যবসা চালাব বুঝতে পারছি না। আনন্দ সিনেমার ব্যবস্থাপক শামসুল আলম বলেন, রমজানের ঈদ থেকে চলচ্চিত্র ব্যবসায় সুবাতাস বইতে শুরু করেছিল। কিন্তু ঈদুল আজহার পর হরতালের কারণে এ ক্ষেত্রে আবার ধস নেমেছে। চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিয়া আলাউদ্দিন বলেন, হরতালে চলচ্চিত্র ব্যবসা বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। যারা এ সপ্তাহে চলচ্চিত্র মুক্তি দিয়েছে তারা সুইসাইড রিলিজের কবলে পড়েছে। কোরবানির ঈদের চলচ্চিত্রগুলো প্রথমে ভালো ব্যবসা করলেও পরে হরতালের কবলে পড়ে লোকসান গুনছে। শুধু চলচ্চিত্র নয়, সব ব্যবসার স্বার্থে রাজনীতিবিদদেরও হরতালের বিকল্প খোঁজা উচিত।

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.