ভারতভিত্তিক শীর্ষ আন্তর্জাতিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক 'স্ট্রাটেজিক ফোরসাইট গ্রুপ' (এসএফজি)। এই গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি স্বাক্ষরের অপেক্ষায় থাকা তিস্তা চুত্তির চূড়ান্ত খসড়াটির কিছু অংশের সমালোচনা করেছেন। অ্যাকাডেমিক্যালি তাদের প্রস্তাবিত 'ব্লু পিস ফর্মুলা'র বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের ২৫০ মিলিয়ন মানুষকে ক্ষতির আশঙ্কা থেকে মুক্ত করা সম্ভব বলে উল্লেখ করা হয়েছে। থিঙ্কট্যাঙ্কের প্রতিবেদনে, দ্রুত তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষরের প্রয়োজনীয়তার ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
তবে বাংলাদেশের যৌথ নদী কমিশনের শীর্ষ সূত্রগুলো জানিয়েছে, সরকারি পর্যায়ে এই প্রস্তাবনা নতুন করে কোনো প্রভাব রাখবে না। কারণ এরই মধ্যেই চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। এতে বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পূর্ণ সমর্থন আছে। শুধু পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির ব্যক্তিকেন্দ্রিক দ্বিমতেই আটকে আছে এই চুক্তি। এটিও দ্রুত সমর্থনের আশা করছেন দুই দেশের বর্তমান নীতিনির্ধারকরা। ারতের বার্তা সংস্থা 'এএনআই'-এর এক প্রতিবেদনে এসএফজির নতুন ফর্মুলার তথ্য উঠে এসেছে। বলা হয়েছে, যৌথ বিনিয়োগ এই পরিকল্পনা অনুসারে শীতকালে তিস্তা অববাহিকতায় পানির সংকট দূর করা সম্ভব হবে। 'রিভার্স অব পিস : রেসট্রাকচারিং ইন্ডিয়া বাংলাদেশ রিলেশনস' শীর্ষক প্রস্তাবিত 'ব্লু পিস ফর্মুলা'র মাধ্যমে তিস্তা চুক্তি করার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় এখনই। থিঙ্কট্যাঙ্কের প্রেসিডেন্ট ড. সন্দ্বীপ ওয়াসলেকার বলেছেন, পানি ব্যবস্থাপনার যে কোনো পদ্ধতির মধ্যে সর্বোচ্চ পার্থক্য ১০ বিলিয়ন কিউবিক মিটারের মতো। এই পানি ভারত থেকে বাংলাদেশে যাওয়া বছরের মোট পানির মাত্র এক শতাংশ। তাই যেহেতু দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক বন্ধুত্বেরই তাহলে কেন পদ্ধতির সর্বোচ্চ ব্যবহার করা হবে না। গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক এফ ইলমাসের মতে, তিস্তা চুক্তি যত দ্রুত স্বাক্ষর হবে তত তাড়াতাড়িই এই অঞ্চলের যৌথ বিনিয়োগের সুযোগ খুলে যাবে। তখন বন্যার পানি শুষ্ক মৌসুমের জন্য জমিয়ে রেখে শস্য চাষের সুযোগ তৈরি করা সম্ভব হবে। এর মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চলের এবং বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলো শস্য উৎপাদনে নতুন বিপ্লবের মাধ্যমে অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখা সম্ভব হবে। ড. সন্দীপ ওয়াসলেকার দুই দেশের যৌথ নদী কমিশনের গঠন ও কার্যপদ্ধতি নিয়েও সমালোচনা করেছেন। বলেছেন, আমাদের দুই দেশের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে ক্যারিশম্যাটিক নেতাদের নেতৃত্বে সত্যিকার অর্থে একটি যৌথ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা প্রয়োজন। এতে দুই দেশের সমস্যাগুলো গ্রহণযোগ্যভাবে সমাধান সম্ভব হবে। ঢাকার বিভিন্ন থিঙ্কট্যাঙ্কের প্রতিনিধি সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে, স্ট্রাটেজিক ফোরসাইট গ্রুপ বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা চুক্তির জন্য তৈরি করা খসড়ার সমালোচনা করে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দফতরে প্রতিবেদনও পাঠিয়েছে। এতে থিঙ্কট্যাঙ্কটি মন্তব্য করেছে যে, শুষ্ক মৌসুমে পানি বণ্টনের ক্ষেত্রে ভারত ও বাংলাদেশের দুটি অঞ্চল (বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চল ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তরবঙ্গ) সমস্যার মুখে পড়ে। কিন্তু তা চুক্তির খসড়ায় উল্লেখ করা হয়নি। শুধু তাই নয়, শুকনো মৌসুমে ওই দুটি অঞ্চলে কীভাবে পানি ধরে রেখে কৃষি ও অন্য কাজে ব্যবহার করা যাবে তারও কোনো উল্লেখ রাখা হয়নি।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।