শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গতকাল আরও ৩৭ কেজি সোনা উদ্ধার করা হয়েছে। সাড়ে তিন মাসে এ নিয়ে উদ্ধার হলো ১১০ কোটি টাকা মূল্যের সাড়ে ৬ মণ সোনা। গড়ে মাসে ২ মণেরও বেশি সোনার চালান আটক হচ্ছে এই বিমানবন্দরে। তবে এসব ঘটনায় জড়িত রাঘববোয়ালরা রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
একের পর এক সোনার চালান উদ্ধার হওয়ায় সংশ্লিষ্টরা শাহজালাল বিমানবন্দরকে 'সোনার খনি' বলেই মনে করছেন।
অতীতে কখনো স্বল্পসময়ের ব্যবধানে এত বিপুল পরিমাণ সোনার চালান আটক আর হয়নি। তারা বলছেন, বিমানবন্দরটি সোনা চোরাকারবারিদের নিরাপদ রুটে পরিণত হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই চোরাচালানোর সোনা আসা-যাওয়া করছে। যেসব চালানের বিষয়ে আগাম তথ্য কাস্টমস বা শুল্ক গোয়েন্দাদের কাছে পেঁৗছায়, শুধু সেগুলোই ধরা পড়ছে। সর্বশেষ গতকাল চোরাচালানের ৩৭ কেজি সোনার চালান উদ্ধার হয় কাতার এয়ারওয়েজের একটি উড়োজাহাজ থেকে।
কাস্টমস জানায়, চোরাচালানের জন্য সোনাগুলো আনা হয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে তারা নিশ্চিত হয়েছে। তবে সোনার চালানের মালিকের সন্ধান পাননি কাস্টমস কর্মকর্তারা। ঢাকা কাস্টমস হাউসের কমিশনার জাকিয়া সুলতানা জানান, সকাল পৌনে ৬টার দিকে কাতার এয়ারওয়েজের একটি উড়োজাহাজে সোনার বারগুলো পাওয়া যায়। ৪১ এ ও ডি সিটের নিচে কালো কাপড় ও টেপ দিয়ে ৩২০টি সোনার বার বিশেষ কায়দায় লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। উদ্ধার করা এসব সোনার মূল্য প্রায় ১৫ কোটি টাকা।
এপিবিএনের সিনিয়র এএসপি আলমগীর হোসেন জানান, দোহা থেকে আসা ওই বিমানের একজন শ্রীলঙ্কান ক্রু টেপ দিয়ে মোড়ানো একটি ব্যাগ দেখে বোমা বলে সন্দেহ করেন এবং কর্তৃপক্ষকে খবর দেন। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।
সম্প্রতি ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বেশ কয়েকটি 'সোনার চালান' আটক করা হয়। কখনো উড়োজাহাজের টয়লেটে, কখনো যাত্রীর ব্যাগে, আবার কখনো যাত্রীর দেহ তল্লাশি করে পাওয়া যায় সোনার বার বা গহনা। কাস্টমসের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বিগত সাড়ে তিন মাসে প্রায় সাড়ে ৬ মণ সোনা উদ্ধার করে কাস্টমস।
এসব চালানের কোনো মালিককেই এ পর্যন্ত আটক করা সম্ভব হয়নি। ২ নভেম্বর বিশেষ উপায়ে রাখা সাবানের কেস থেকে উদ্ধার করা হয় ২ কেজি ওজনের ১৬টি সোনার বার। ২৯ ও ৩০ অক্টোবর আটক করা হয় আরও দুটি চালান। ২০ কেজি ওজনের প্রায় ১৬৪টি সোনার বার উদ্ধার করা হয় ওই দুই দিনে। এর এক সপ্তাহ আগে ২২ অক্টোবর দুবাই থেকে ঢাকায় আসা একটি বিমানের টয়লেটে ৩০ কেজি ওজনের ২৮০টি সোনার বার পাওয়া যায়।
৩০ আগস্ট শাহজালাল বিমানবন্দরে একটি স্পোর্টস ব্যাগের ভেতর থেকে ১৮ কেজি ওজনের ১৫৬টি সোনার বার উদ্ধার হয়। এর আগে ২০ আগস্ট কলকাতাগামী এক ভারতীয় নাগরিকের কাছ থেকে উদ্ধার হয় সাড়ে ৭ কেজি সোনা। এ ছাড়া ২৪ জুলাই শাহজালাল বিমানবন্দরে নেপাল থেকে আসা বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সোনার চালান আটক করা হয়। ওই সোনা পাওয়া গিয়েছিল মালিকবিহীন অবস্থায় ডিসি-১০ উড়োজাহাজের কার্গো হোলের একটা প্যানেল বঙ্রে ভেতরে। এর কদিন আগে কুয়েত থেকে আসা একটি বিমানে প্রায় ২৫ কেজি সোনার বার পাওয়া যায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।