টাইফুন হাইয়ানের আঘাতে বিধ্বস্ত ফিলিপাইনের ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনায় হিমশিম খাচ্ছে প্রেসিডেন্ট বেনিনো অ্যাকুইনোর সরকার। রয়টার্স বলছে, ঝড় শুরুর আগে তা নিয়ে সতর্কতা জারি, ঝড়টির শক্তি ও সম্ভাব্য জলোচ্ছ্বাস সম্পর্কে জনগণকে সতর্ক করতে অ্যাকুইনো প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে। ঝড়-পরবর্তী ত্রাণ কাজের গতিও আশানুরূপ নয়।
এ সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট অ্যাকুইনো বলেন, সঠিক সময়ে উপকূল থেকে জনগণকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে না নেওয়া হলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ত। অথচ দুর্গতরা বলছে, তারা সুনামির মতো জলোচ্ছ্বাস হবে এমন কোনো কিছু জানত না।
মৃতের সংখ্যা নিয়েও বিতর্ক শুরু হয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ মৃতের সংখ্যা দশ হাজারের বেশি দাবি করলেও সরকারি সংস্থা মঙ্গলবার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দুই হাজার ৩৫৭ জন বলে নিশ্চিত করেছে। সরকার বলছে, এ সংখ্যা বাড়তে পারে।
তবে টাইফুন-আক্রান্ত টাকলোবান শহরের প্রশাসক ট্যাকসন জন লিম রোববার এ সম্পর্কে বলেন, অ্যাকুইনো ইচ্ছা করেই হয়তো মৃতের সংখ্যা কমিয়ে বলছেন। তিনি আরও বলেন, বেশি আতঙ্ক যাতে না ছড়ায়, সে চেষ্টা করছেন অ্যাকুইনো।
রেডক্রসের হিসাব অনুযায়ী, গত মঙ্গলবার পর্যন্ত নিখোঁজ লোকের সংখ্যা ছিল প্রায় ২২ হাজার।
টাকলোবান শহরে প্রয়োজনীয় ত্রাণের অভাবে ক্ষোভ ও হতাশা ক্রমেই বাড়ছে। খাদ্য ও অন্যান্য পণ্য বিমানবন্দরে আটকে রয়েছে। ত্রাণ বিতরণে সেনা পরিবারগুলো বিশেষ সুবিধা পাচ্ছে বলেও অনেকে অভিযোগ করেছেন। আট দিন ধরে বিমানবন্দরের বাইরে ত্রাণের জন্য অপেক্ষারত ভায়োলেটা ডুজার (৫৭) বলেন, সেনাবাহিনীতে আপনার বন্ধু বা আত্মীয় থাকলে সহজে ত্রাণ পাবেন।
ট্যাকসন জন লিম বলেন, নগর কর্তৃপক্ষ পুরোপুরি পঙ্গু হয়ে গেছে। কর্মচারীদের অনেকেই আহত, মৃত বা কাছের মানুষকে হারিয়ে শোকাহত। এই কর্মীরা সরকারি কাজে যোগ দিতে চাইছেন না। আড়াই হাজার কর্মচারীর মধ্যে মাত্র ৮০ জন অফিসে আসছেন।
দুর্গত এলাকাগুলোতে সরকার এখন পর্যন্ত ৫০ হাজার বস্তা খাবার ত্রাণ হিসাবে বিতরণ করেছে।
বস্তাগুলোর প্রতিটিতে ছয় কেজি করে চাল রয়েছে। এই ত্রাণ মোট দুর্গতদের মাত্র তিন শতাংশের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম।
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ত্রাণ কার্যক্রম চালালেও গাড়ির জ্বালানির অভাবে তা ব্যাহত হচ্ছে। অনেক মালিক পেট্রল স্টেশনগুলো এখনই চালু করতে চাইছেন না। এ কারণে দুর্গত অঞ্চলে চিকিত্সা ও ত্রাণ পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়ছে।
ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্ত ফিলিপাইনের অর্থনীতি ব্যাপক ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে। জার্মানির ফরেনসিক ডিজাস্টার ইনস্টিটিউট (সিইডিআইএম) তাদের প্রতিবেদনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আট থেকে ১৯ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে রয়েছে বলে জানিয়েছে।
।অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।