‘শেষ’টা খারাপ হলো না, তার পরও কিছুটা আক্ষেপ হয়তো থেকেই গেল টেন্ডুলকার-ভক্তদের। বিদায়ী টেস্টে শতকের বেশ কাছাকাছিও চলে গিয়েছিলেন বলে বোধ হয় হাহাকারটা আরও বেশি। মাত্র ২৬ রানের জন্য হলো না লিটল মাস্টারের ৫২তম টেস্ট সেঞ্চুরি। চেতেশ্বর পুজারা সেঞ্চুরি করলেন। প্রায় একাই সেঞ্চুরি তুলে নিলেন রোহিত শর্মা।
৩১৩ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৩ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৩ উইকেট তুলেও নিল ভারত। অনেক পাওয়ার একটা দিনে কেবল হলো না টেন্ডুলকারের সেঞ্চুরিটাই!
সেঞ্চুরির পথে ছুটতে ছুটতে একটা মাত্র ভুল। সেটাই সাজঘরে ফেরত পাঠাল টেন্ডুলকারকে। নিজের এক অর্থে শেষ ইনিংসেও ভাগ্যের সামান্য মমতাটুকু পেলেন না। স্লিপে দুর্দান্ত ক্যাচের শিকার হয়ে টেন্ডুলকার ফিরলেন ৭৪ রান করে।
‘শেষবারে’র মতো টেন্ডুলকারের উইকেটি পাওয়ার উল্লাসে মেতে উঠলেন নরসিং দেওনারিন।
এই ম্যাচের এখন যা অবস্থা, তাতে ডিপে টেন্ডুলকারকে ফিল্ডিং করতে দেখাতেই তৃপ্ত থাকতে হবে। আরও একবার তাঁর ব্যাট হাতে নামার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১৮২ রানের জবাবে প্রথম ইনিংসে ভারত করেছে ৪৯৫ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজ মাত্র সাত উইকেট হাতে নিয়ে ইনিংস পরাজয় এড়াতেই এখনো ২৭০ রান পেছনে।
উইকেটে অবশ্য ক্রিস গেইল এখনো আছেন। ১৫০তম টেস্ট খেলতে নামা শিবনারায়ণ চন্দরপলেরও ব্যাটিং করা বাকি। টেন্ডুলকারের ব্যাটিং আরেকবার দেখতে চাইলে ভারতের সমর্থকদের আগামীকাল পুরোদস্তুর ক্যারিবীয় সমর্থক হয়ে প্রার্থনা করে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই।
দুই যুগের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ক্রিকেট বিশ্বকে একের পর এক বিস্ময়কর মাইলফলকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে নেওয়া টেন্ডুলকার টেস্টে ১৬ হাজার রান থেকে মাত্র ৭৯ রান দূরত্বে। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজ লিড নিতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না।
ফলে আজকের সেঞ্চুরিটার মতো টেন্ডুলকারের ১৬ হাজার রানের মাইলফলকটাও হয়তো ‘একটুর জন্য হলো না’ ধরনের ব্যাপার হয়েই থাকবে ক্রিকেট বিশ্বে।
তবে ভক্তদের মতো আক্ষেপ হয়তো না-ও থাকতে পারে টেন্ডুলকারের। শেষ টেস্টে দলের বড় সংগ্রহের পেছনে তাঁরও একটা বড় অবদান আছে, এটাও হয়তো সুখস্মৃতি হয়ে থাকবে সর্বকালের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যানের। তৃতীয় উইকেটে চেতেশ্বর পুজারার সঙ্গে তাঁর ১৪৪ রানের জুটিটাই বড় সংগ্রহের ভিত্তি গড়ে দিয়েছিল ভারতকে। টেন্ডুলকার ৭৪ রানে সাজঘরে ফিরলেও পুজারা ভুল করেননি।
পরে রোহিতও শেষ ব্যাটসম্যানকে সঙ্গে নিয়ে একপ্রান্তে রান তুলে খেলে নিজের দ্বিতীয় ম্যাচেও করলেন সেঞ্চুরি।
টেন্ডুলকারকে ফিরিয়ে বল হাতে দেওনারাইন আলোতে চলে এলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের সফল বোলার শিলিংফোর্ডই। ৫ উইকেট তুলে নিয়েছেন তিনি, যদিও খরচা হয়েছে ১৭৯ রান। শিলিংফোর্ডের ধাক্কাতেই ৩১৫ থেকে ৪১৫—মাঝখানের এই ১০০ রানে ৬ উইকেট হারিয়েছে ভারত। রোহিতের সেঞ্চুরিটাকে তাই অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে।
শেষ উইকেটে ৮০ রানের জুটি না গড়লে সেঞ্চুরিটাই হতো না তাঁর। ভারতের নবম উইকেট যখন পড়ল, রোহিতের ফিফটিও তখন ছিল ৫ রানের দূরত্বে। অভিষেকে সেঞ্চুরি দিয়ে শুরু করা রোহিত শেষ পর্যন্ত ১১১ রানে অপরাজিত ছিলেন।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।