অবসরের পর পেরিয়ে গেছে ২৪ ঘণ্টা। এবার সময় হয়েছে, মুখোমুখি হবার। শচীন টেন্ডুলকার মুখোমুখি হলেন। গতকাল বিকালে সংবাদ সম্মেলনে আসলেন তিনি। প্রশ্নের বান ছুটল। কোনটা রেখে কোনটার উত্তর দিবেন তিনি! ধীর স্বভাবের শচীন বললেন অনেক কথাই। সংবাদ সম্মেলনে প্রবেশের সময় আবেগের রাশটা টেনেটুনে বন্ধ করলেও শেষ পর্যন্ত আর ধরে রাখতে পারলেন না। প্রবল টানে ছিঁড়ে গেল। বিষণ্ন্ন মুখে অদ্ভুত হাসি ফুটে উঠল। সেই হাসির পিছনে লুকিয়ে ছিল এক সমুদ্র অশ্রু!
সংবাদ সম্মেলন চলছে। হঠাৎই প্রশ্ন ছুটে এল, এবার কি করবেন শচীন? 'মাত্র তো চবি্বশ ঘণ্টা পেরিয়েছে। ২৪ বছরের ক্রিকেট জীবনের পর আমার অন্তত ২৪ দিন তো ছুটি প্রয়োজন!' শচীন টেন্ডুলকার বিদায়ী ভাষণে কথা দিয়েছিলেন, সামনের ষোলটি বছর কেবল স্ত্রী-সন্তানদের। ষোল বছর না হোক, অন্তত আগামী কয়েকটা মাস তো স্ত্রী অঞ্জলি, মেয়ে সারা এবং ছেলে অর্জুন নিজেদের জন্য দাবি করতেই পারে। শচীনেরও এই দাবিতে অমত থাকবে না। ভক্তরা এবার শচীন টেন্ডুলকারকে খুঁজে পাবেন দূরের কোনো সমুদ্র সৈকতে অথবা সুউচ্চ পাহাড়ে মেঘের কোলে।
জীবনের শেষ ম্যাচটা তিনি মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়েতে খেলতে চেয়েছিলেন। কেন? এখানেই শুরু হয়েছিল বলে কি! তা নয়। মায়ের জন্য। জীবনে প্রথম এবং শেষবারের মতো মায়ের সামনে ব্যাটিং করতে চেয়েছিলেন তিনি। 'আমি বিসিসিআইকে অনুরোধ করেছিলাম মুম্বাইয়ে শেষ ম্যাচটা খেলার জন্য। যাতে আমার মা প্রথমবারের মতো আমার খেলা দেখতে পারে।' ক্রিকেট বোর্ডের কাছে এই দাবিটা করেছিলেন শচীন। তার এমন কোনো দাবি আছে, যা পূরণ করতে অপারগতা প্রকাশ করবে বোর্ড। সেই মুম্বাইয়েই খেললেন ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। আর শচীনের মা রজনী প্রথম ও শেষবারের মতো দেখলেন শচীনের মোহনীয় ব্যাটিং।
শচীন টেন্ডুলকার শেষ নমস্কারে সারা জীবনের জন্য তুলে রেখেছেন প্রিয় ব্যাট। আর কখনোই এই ব্যাট হাতে নামবেন না তিনি। তবে এই নিয়ে খুব একটা আফসোস নেই শচীনের। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে তাই জানালেন। 'ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর পর আমার কোনো দুঃখ নেই।' সত্যিই কি নেই! তবে যে তিনি বললেন, মৃত্যুর মুহূর্তেও আমার কানে বাজবে ভক্তদের শচীন শচীন চিৎকার! শচীন কথার কথাই হয়ত বলেছেন। তবে এমন কথা বলার জন্যও শচীনের মতোই দুঃসাহসী হতে হয়!
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।