তৈরি পোশাক খাতে বাংলাদেশকে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হয়। তবে ওই সব দেশের চেয়ে বাংলাদেশের পোশাকশ্রমিকদের মজুরি এখনো অনেক কম।
বাংলাদেশের শ্রমমান পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) সোমবার জেনেভায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ওই প্রতিবেদনেই শ্রমিকের মজুরির এই চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
গত আগস্ট পর্যন্ত সময়ের পরিসংখ্যান উল্লেখ করা হয়েছে আইএলওর প্রতিবেদনে।
সংস্থাটি বলেছে, বাংলাদেশের পোশাকশ্রমিকেরা প্রতি মাসে ন্যূনতম মজুরি পান ৩৯ ডলার (তিন হাজার টাকা), যা কিনা বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশগুলোর শ্রমিকদের মজুরির প্রায় অর্ধেক। বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশ কম্বোডিয়ার শ্রমিকেরা মাসে ন্যূনতম ৮০ ডলার, ভারতে ৭১ ডলার, পাকিস্তানে ৭৯ ডলার, শ্রীলঙ্কায় ৭৩ ডলার ও ভিয়েতনামে ৭৮ ডলার মজুরি পান।
আইএলওর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর মধ্যে কয়েকটি দেশ নিয়মিত পোশাক খাতের মজুরি পুনর্নির্ধারণ করলেও ১৯৮৫ সাল থেকে বাংলাদেশে মজুরিকাঠামোয় মাত্র তিনবার পরিবর্তন হয়েছে। সর্বশেষ ২০১০ সালে মজুরিকাঠামোয় পরিবর্তন আনা হয়। তখন শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি এক হাজার ৬৬২ টাকা থেকে বাড়িয়ে তিন হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়।
গত বছরের নভেম্বরে তাজরীন ফ্যাশনসে আগুনে ১১৪ জন এবং এ বছরের ২৪ এপ্রিল সাভারে রানা প্লাজা ধসে এক হাজার ১৩৩ জন শ্রমিক নিহত হওয়ার পর বিশ্বব্যাপী গণমাধ্যমে বাংলাদেশের পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশের বিষয়টি নিয়ে আলোচনার ঝড় ওঠে। একই সঙ্গে উঠে আসে এ দেশের শ্রমিকদের কম মজুরি পাওয়ার বিষয়টিও। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক বর্জনেরও হুমকি দেওয়া হয়। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে পোশাকশ্রমিকদের মজুরি পুনর্নির্ধারণের উদ্যোগ নেয় সরকার।
অবশ্য সরকার গঠিত মজুরি বোর্ড চলতি নভেম্বর মাসেই ন্যূনতম মজুরি বাড়িয়ে পাঁচ হাজার ৩০০ টাকা চূড়ান্ত করেছে।
এই মজুরি আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর করার ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে।
আইএলও পুরোনো মজুরিকাঠামোর প্রেক্ষাপটে প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে মজুরির পার্থক্য দেখানোর চেষ্টা করেছে। অবশ্য নতুন মজুরিকাঠামো বাস্তবায়ন শুরু হলে পোশাকশ্রমিকেরা ন্যূনতম মজুরি পাবেন প্রায় ৬৯ ডলার (এক ডলার ৭৭ টাকা ধরে আইএলও টাকাকে ডলারে রূপান্তর করেছে)।
আইএলওর প্রতিবেদনে বলা হয়, শ্রমিকদের মজুরি নীতিমালা শক্তিশালী করে তা যথাযথভাবে অনুসরণ এবং ন্যূনতম মজুরি ও মজুরি বোর্ডের সুপারিশ ঠিকমতো বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না—তা পর্যবেক্ষণ করাও জরুরি।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।