জাতিসংঘের শিল্প বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থার (আঙ্কটাড) প্রতিবেদনে বিশ্ব অর্থনীতির মন্দাভাব সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতি ইতিবাচক ধারায় রয়েছে বলে প্রশংসা করা হয়েছে। আঙ্কটাড বলেছে, নিম্নআয়ের দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৪০ মার্কিন ডলারে। রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে রেকর্ড গড়তেও সমর্থ হয়েছে বাংলাদেশ। ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির কারণে দেশজ উৎপাদনও ভালো অবস্থানে। সাধারণ মানুষের আয়ও বেড়েছে। তবে আঙ্কটাড একই সঙ্গে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, ১৬ কোটি মানুষের এই দেশে কর্মসংস্থান এখনো একটি বড় চ্যালেঞ্জ। জনসংখ্যার তুলনায় উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান না হলে প্রবৃদ্ধি স্থায়ী হবে না। আঙ্কটাড পূর্বাভাস দিয়ে বলেছে, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে না পারলে বাংলাদেশে সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়তে পারে। বাংলাদেশে প্রতি বছর ১ কোটি ৬০ লাখ তরুণ শ্রমবাজারে প্রবেশ করলেও আশানুরূপ চাকরি পাচ্ছে না। ফলে অভ্যন্তরীণ অস্থিরতার পাশাপাশি অভিবাসনের মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে বাংলাদেশে জাতীয় আয় (জিএনআই) ৮৪০ ডলার, যা ইথিওপিয়া, সুদান ও নেপালের চেয়ে বেশি। অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা ৩২ দশমিক ৪ শতাংশ এবং মানবসম্পদ সূচক ৫৪ দশমিক ৭ শতাংশে রয়েছে। সংস্থাটির মতে, জাতীয় আয় এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় বাংলাদেশের অবস্থান ভালো হলেও মানবসম্পদ উন্নয়ন সূচকে এখনো পিছিয়ে। রেমিট্যান্স আহরণের দিক থেকে অন্য স্বল্পোন্নত দেশের চেয়ে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে। ২০১১ সালে বাংলাদেশ রেকর্ড পরিমাণ ১১ হাজার ৯৮৯ মিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা পেয়েছে। বাংলাদেশের ৫৬ শতাংশ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। অথচ জিডিপিতে কৃষির অবদান ২০ শতাংশেরও কম। বাংলাদেশের অর্থনীতি সম্পর্কে আঙ্কটাডের প্রতিবেদন আশাজাগানিয়া হলেও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে যে চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হয়েছে তার মোকাবিলায় সরকারকে সজাগ থাকতে হবে। জিডিপির প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হবে। কর্মসংস্থানের জন্য স্থিতিশীলতার কোনো বিকল্প নেই। সব ক্ষেত্রে সুবুদ্ধি ও সুবিবেচনাকে প্রাধান্য দিয়ে অস্থিতিশীলতার উপাদানগুলোকে নিষ্প্রভ করতে হবে। এটিই আজ জাতীয় কর্তব্য বিবেচিত হওয়া উচিত।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।