চলে যেতে যেতে বলে যাওয়া কিছু কথা
প্রতি বছর অন্তত ৫ হাজার ব্রিটিশ ইসলামে ধর্মান্তরিত হন যাদের বেশির ভাগই নারী। এদেরই পাঁচজনের গল্প নিয়ে সম্প্রতি Converting to Islam: British women on prayer, peace and prejudice নামক নিবন্ধটি প্রকাশ করা হয়।
আইওনি সুলিভান। পেশায় তিনি একজন অথরিটি ওয়ার্কার। সুলিভান ৩৭, ইস্ট সাসেক্সের বাসিন্দা।
‘এক মধ্যবিত্ত , বামপন্থী এবং নাস্তিক ব্রিটিশ পরিবারে তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। পিতা ছিলেন অধ্যাপক, আর মা ছিলেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক। ২০০০ সালে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমফিল ডিগ্রি শেষ করার পর তিনি পর্যায়ক্রমে মিশর, জর্ডান, ফিলিস্তিন এবং ইসরাইলে কাজ করি। ’
সুলিভান বলেন, ‘এর আগ পর্যন্ত ইসলাম সম্পর্কে আমার মধ্যে একটা সাদামাটা গতানুগতিক ধারণাই বিরাজ করছিল। কিন্তু এসব দেশে কাজ করতে গিয়ে মুসলিমরা তাদের ধর্ম বিশ্বাস থেকে যে অফুরন্ত জীবনী শক্তি আহরণ করে তা দেখে আমি বিস্মিত হই।
বৈষয়িকভাবে তাদের সবারই জীবন প্রায় পুরোপুরি নিঃস্ব হওয়ার পথে, তথাপি প্রত্যেকেই খুবই শান্তভাব এবং স্থিরতার সঙ্গে জীবন যাপন করে চলেছেন। আমি যে দুনিয়া পেছনে ফেলে এসেছি এটা তার সম্পূর্ণ বিপরীত এক চিত্র। ’
এক জর্ডানি মুসলিম পুরুষের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। তেমন একটা ধর্মকর্ম করতেন না তারা। নিয়মিতই মদপান এবং নাইট ক্লাবে যেতেন।
এ সময়টাতেই কুরআনের একটি ইংরেজিতে অনুদিত কপি সংগ্রহ করেন তিনি।
বৃটিশ এই নারী বলেন, ‘এক সময় আমি কুরআন পড়ে জানতে পারলাম যে, সৃষ্টি জগতের অপার সৌন্দর্য্য এবং ভারসাম্যের মধ্যেই স্রষ্টার অস্তিত্বের প্রমাণ নিহিত রয়েছে। বিপরীতে বাইবেলে বলা হয়েছে, যিশু খ্রিস্টের মধ্য দিয়ে ঈশ্বর মানুষের রূপ ধরে পৃথীবিতে এসেছিলেন। আমি দেখতে পেলাম, কুরআনে আরো বলা হয়েছে, স্রষ্টার আশির্বাদ পেতে হলে আমাকে কোনো পাদ্রির শরনাপন্ন হতে হবে না এবং প্রার্থনা করার জন্য কোনো নির্দিষ্ট পবিত্র স্থানের দরকার নেই। ’
যাকে তিনি ব্যক্তি স্বাধীনতার প্রতিবন্ধকতা স্বরূপ মনে করতেন যেমন, রোজা রাখা, বাধ্যতামূলক দান-সদকা এবং বিনয় নম্রতা ও সংযম প্রদর্শন করা, পরে বুঝতে পারলেন এসব আসলে নিজের ওপর নিজের নিয়ন্ত্রণ অর্জনের উপায়’।
তিনি বলেন, ‘হিজাব পরা শুরু করার পর থেকে লোকে আমাকে নির্মমভাবে হাসি-ঠাট্টা শুরু করলো। তারা আমাকে প্রায়ই জিজ্ঞেস করতো, আমার ক্যান্সার হয়েছে কিনা। কিন্তু তাদের এসব আচরণ আমার কাছে খুবই তুচ্ছ মনে হত। কারণ ইতোমধ্যেই আমি অনেক গভীর অর্থপূর্ণ এক সম্পর্কের মধ্যে প্রবেশ করেছিলাম। ’
আনিতা নায়ার।
পেশায় একজন সামাজিক মনোবিজ্ঞানী এবং লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য বিরোধী সমাজকর্মী। ভারতীয় বংশোদ্ভূত ইংরেজ। দাদা-দাদী ছিলেন সনাতন হিন্দু। ভারত-পাকিস্তান ভাগের সময় তার পরিবার একদল মুসলিম দাঙ্গাবাজের কবলে পড়ে। মুসলিমদের সম্পর্কে তেমন কোনো ধারণা ছিল না বললেই চলে।
’
তিনি খুবই ধার্মিক খৃস্টান ছিলেন। নিয়মিত গির্জায় যেতেন এবং পাদ্রি হওয়ার ইচ্ছা ছিল তার। ১৬ বছর বয়সে এক সেক্যুলার কলেজে ভর্তি হন। সেখানেই কয়েকজন মুসলিমের সঙ্গে বন্ধুত্ব করেন। দৈনন্দিন জীবন যাপনে তাদের স্বাভাবিকতা দেখে তাদেরকে খুবই পছন্দ করা শুরু করেন তিনি।
আনিতা বলেন, ‘প্রথমে আমি তাদেরকে তাদের ধর্মের ভয়াবহতা সম্পর্কে বুঝাতে গিয়ে তর্ক করতাম। কিন্তু পরে বুঝতে শুরু করলাম, খৃস্টান ধর্ম থেকে ইসলাম খুব বেশি আলাদা নয়। ২০০০ সালে ১৮ বছর বয়সে এক পর্যায়ে আমি ইসলামে ধর্মান্তরিত হই।
Dr Annie (Amina) Coxon, কনসালটেন্ট ফিজিশিয়ান এবং নিউরোলোজিস্ট।
যুক্তরাষ্ট্র এবং মিশরে বড় হয়ে উঠেন।
২১ বছর আগে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেন। প্রথমদিকে মিডিয়ায় ইসলামের নেগেটিভ ইমেজের জন্য ইসলাম ধর্মকে পছন্দ করতেন না। পরে আমার এক রোগীর কারনে এবং ধারাবাহিকভাবে দেখা কিছু স্বপ্নের কারনে ইসলাম ধর্ম গ্রহনে উদ্ভুদ্ধ হই।
মুসলিম কমিউনিটির মধ্যে আফ্রিকানদের তার পছন্দ বেশি।
Kristiane Backer, টিভির উপস্থাপক
এম টিভি ইউরোপের উপস্থাপিকা ছিলেন।
পরে ইমরান খানের কাছ থেকে ইসলামের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করেন এবং আকৃষ্ট হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেন। যে কারনে তার চাকুরি চলে যায়।
Andrea Chishti, ষ্কুল শিক্ষিকা
উনার বাবা নাস্তিক ছিলেন। পরে পাকিস্তানে এক তরুনের সাথে তার পরিচয় এবং পরিনয়। ইসলাম ধর্ম গ্রহনের তার নৈতিক চরিত্রের উন্নতি ঘটেছে বলে তিনি মনে করেন।
নামবিহিন একজন, সফটওয়ার ইন্জিনিয়ার।
বিশ্ববিদ্যালয়ে মুসলিম শিক্ষার্থীদের সাথে পরিচয় হলে ইসলাম ধর্মের ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠে। কোরান শরীফ পড়তে শুরু করি।
আমার পান্জাবী শিখ পরিবারের লোকজনেরা জানেনা যে আমি ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেছি।
ইসলাম ধর্ম আমাকে দিয়েছে স্বাধিনতা এবং দয়িত্ববোধ, সবকিছুই আমি এখন স্বাভাবিকভাবে গ্রহন করতে পারি।
http://www.theguardian.com/world/2013/oct/11/islam-converts-british-women-prejudice
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।