আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আওয়ামী লীগ বর্বরতা ও মিথ্যাচারের জনক

স্বাধীন বাংলাদেশে জন্ম

দেখা যাক আওয়ামী লীগের মিথ্যাচার কাকে বলে ও কিভাবে বার বার মিথ্যা বলে সেটাতে সাধারন মানুষকে বিশ্বাস করান হয়। বর্তমানে যাদের বয়স ৫৫ বছর বা তার অধিক তাদের স্মরন থাকার কথা, ১৯৭০ সালে নির্বাচনী প্রচারে আওয়ামী লীগ ‘সোনার বাংলা শশ্মান কেন?’ এই শিরোনামে পূর্ব পশ্চিম পাকিস্তানের বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের একটি তুলনামুলক মূল্য তালিকা দিয়ে পোষ্টার ছেপেছিল। ঐ পোষ্টারে এইরুপ লেখা ছিল : চাউল পূর্ব পাকিস্তানে ১২ আনা পশ্চিম পাকিস্তানে ৮ আনা; দুধ পূর্ব পাকিস্তানে ১০ আনা; সোনা ভরি প্রতি পূর্ব পাকিস্তানে ১০০ টাকা- পশ্চিম পাকিস্তানে ৮০ টাকা; সাদা কাগজ পূর্ব পাকিস্তানে ৮ আনা- পশ্চিম পাকিস্তানে ৬ আনা ইত্যাদি এইরূপ। সেই সময় উভয় পাকিস্তানের মাঝে দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল না এবং কেউ প্রয়োজনেও মনে করেনি যে পশ্চিম পাকিস্তানে খোজ নিয়ে জানা যাক প্রকৃত কি ছিল ঐসব দ্রব্যের। ঐ এক পোষ্টারই যথেষ্ট ছিল এদেশের লোকদের ক্ষেপিয়ে তোলার জন্য পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে।

প্রকৃতপক্ষে উক্ত পোষ্টারের তথ্যটি ছিল সম্পূর্ণ উল্টো যা পরবর্তীতে প্রমানিত হয়েছিল, এমনকি এও বলা হয়েছিল বিভিন্ন নির্বাচনী সমাবেশে যে কর্ণফুলী কাগজ কলের কাগজ জাহাজভর্তি করে করাচি বন্দরে নিয়ে সেখানে সিল মেরে আবার সেই কাগজ চট্টগ্রাম নিয়ে এসে দ্বিগুন দামে এদেশবাসীকে বিক্রয় করেছিল পশ্চিম পাকিস্তানী ব্যবসায়ীরা। অদ্ভুতই বটে? এবার আসুন স্বাধীন বাংলাদেশের শেখ মুজিবর রহমানের কণ্যা গত নির্বাচনী প্রচারে ঘোষনা দেন যে তিনি ক্ষমতায় গেলে সাধারন জনগনকে ১০ টাকা কেজি চাউল খাওয়াবেন ও প্রত্যেক বাড়িতে একজনের সরকারী চাকুরী দেবেন। এটা আরও অদ্ভুত এই জন্য যে কৃষকের প্রতি কেজি চাউল উৎপাদনে খরচ হয় প্রায় ১৭/১৮ টাকা। এদের মিথ্যাচারের তাবৎ কাহিনী বললে কয়েকটি বই ছাপানোর প্রয়োজন পড়বে। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দল হিসাবে প্রথম থেকেই গণতন্ত্র বলে এসেছিল, দলটির প্রধান তার জীবনের অনেকটা সময়ই কারা জীবন কাটিয়েছিলেন মূলত বাক স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য: কিন্তু ক্ষমতায় অসীন হবার পর এক নায়কতন্ত্র কায়েম করে বসলেন এবং দলচির বুদ্ধিজীবি নিরবে সমর্থন দিয়ে নিজ নিজ স্বার্থ উদ্ধার করে চুপচাপ দলটির নেতাদের গুনগাণ করে চলেছেন।

এই বুদ্ধিজীবি সম্প্রদায়ের একটা অংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিশাল একটা অংশ। তাকিয়ে দেখুন ঢাকা, রাজশাহী ও জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যে তিনজন উপাচার্য বর্তমানে নিজ নিজ পদে রাজশাহী ও জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যে তিনজন উপাচার্য বর্তমানে নিজ নিজ পদে আসী তাদের একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড মোটেই সন্তোসজনক নয়, তারা ওপার বাংলায় একটা ভাল কলেজেও অধ্যাপনার সুযোগ পেত না যদি না পাকিস্তান হয়ে আজকে এই ভূখন্ড স্বাধীন মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশ না হতো। এবার আসুন দেখা যাক ১৯৭১ সালে কে কত লোক হত্যা করেছিল। এরা কথায় কথায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৭১ সালে ২৬ শে মার্চের অভিযান পাক বাহিনী কর্তৃক জগন্নাথ হল, ইকবাল ও বেগম রোকেয়া হলের হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী নিহতের কথা বলে থাকেম অথচ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব স্মৃতি চিত্র থেকে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নথী থেকে যে সংখ্যা পাওয়া যায় তা ৩০০ জনের নিচে। সম্প্রতি বিখ্যাত বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ বিপ্লবী নেতা সুভাষ বসুর বড় ভাই শরৎ বসুর নাতনী শর্মীলা বসুর দীর্ঘ গবেষনালব্দ গ্রন্থ ডেড রেকনিং এ এ নিহতের সংখ্যা চমৎকার তথ্য সন্নিবেশিত আছে, সেখানেও এই সংখ্যা কোনভাবেই তিনশতের অধিকা পাওয়া যায় নি।

লেখিকা শর্মীলা বসু ১৯৭১ সালে ৩০ লাখের নিহত নিয়ে অনেক গবেষনা কাজ করেছেন এবং এক পর্যায়ে ১৯৭১ সালে পাক, ভারত ও বাংলাদেশের যুদ্ধের সাথে সম্পৃক্ত ভারতীয় কর্মকর্তাদের নিকট বাংলাদেশের কত লোক নিহত হয়েছিল জানতে চাওয়া হলে এক কমকর্তা তিন লাখ ও অপর কর্মকর্তা প্রায় ৫ লাখ বলেছিল। লেখিকা তার গবেষনায় এই সংখ্যা কোনভাবেই ২,৫০,০০০ জনের বেশি মানতে রাজী হননি। আওয়ামী লীগ বার বার গণহত্যার কথা বলে থাকে; হয় এরা গণহত্যার সঙ্গা জানে না, আর না হয় জেনেশুনেই মিথ্যা বলে- জাতিসংঘের দেওয়া গণহত্যার সঙ্গা অনুযায়ী প্রকৃতপক্ষে উগ্রপন্থিরাই গণহত্যা চালিয়েছিল – এরা নারী, পুরুষ ও শিশুদের নির্বিচারে হত্যা করেছিল এর ভুরি ভুরি প্রমান আছে, এক লালমনিরহাটেই ২/৩ দিনের ব্যবধানে ২৬শে মার্চের পূর্বে ১৫০০০ জনকে হত্যা করেছিল, সেখানে কেবলমাত্র একটি ঘর থেকেই ২০টি শিশুর ছিন্ন ভিন্ন লাশ পাওয়া গিয়েছিল। যাদের ঘরের ভিতর দুটি পা ধরে খুনিরা দেয়ালের সাথে মাথা বাড়ী দিয়ে মাথা ফাটিয়ে হত্যা করেছিল। এই দেওয়ালে শিশুদের মাথার মগজ লেগেছিল।

পাক সেনারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, রাজশাহীর থানা পাড়া বা ঢাকার শাখারী পট্টিতে কেবলমাত্র জোয়ান পুরুষদের হত্যা করেছিল। প্রমান দিয়ে বলা যেতে পারে যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জগন্নাথ হলে আজও অনেক বিধবা বা তাদের যুবতী মেয়েরা জীবিত আছেন। ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ ঢাকায় সেনা অভিযান হলে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সীমান্ত যতসব ইপিআর (বর্তমানে বিডিআর/বিজিবি) ক্যাম্প ছিল যা এখনও আছে সেখানে দায়িত্বরত সকল অবাঙ্গালী (পাঞ্জাবী, পাঠান, বেলুচী, বিহারী) ইপিআর সদস্যদের স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের নির্দেশে হয় পিটিয়ে না হয়, জবাই করে হত্যা করা হয়েছিল । (চলবে) আওয়ামী লীগের বর্বর আচরন সম্পর্কে আরো জানুন - ৭১ এর ২৫শে মার্চের পরে আওয়ামী লীগ দ্বারা সংঘটিত বড় ধরনের হত্যাযজ্ঞ

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.