জন্মের পরে ছ'মাস শিশুকে কেবল মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর কথা বলা হয়ে থাকে। আবার এটাও বলা হয়, চার মাস পার হলে মায়ের দুধের সঙ্গে অন্য খাবারও দিতে হবে। আসলে কোনটা শিশুর জন্য আদর্শ?১০ বছর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(WHO) ছ'মাস শুধুই বুকের দুধ-এর পক্ষে সুপারিশ করলেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখন এ নিয়ে মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে।
বিশ্বের শিশু চিকিৎসকদের একটা বড় অংশ বলছেন, চার মাসের পর শিশুকে শক্ত খাবার দিতে শুরু করলে তা ভবিষ্যতে বিভিন্ন খাবারে তার অ্যালার্জি রুখতে সাহায্য করবে। আবার ভারতীয় চিকিৎসকদের মতে, অপুষ্টি যেহেতু এ দেশে বড় সমস্যা, তাই অসংখ্য দরিদ্র শিশুর কাছে মায়ের দুধই পুষ্টির সেরা উৎস।
তাছাড়া পরিচ্ছন্নতার ধারণাটাও যেহেতু এ দেশের বহু পরিবারে এখনও তেমন জোরালো নয়, তাই ছ'মাসের আগে অন্য খাবার দিতে শুরু করলে তা থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর ভয় থাকছে। তবে শক্ত খাবার দ্রুত শুরু করলে যে পুষ্টি বাড়ে সেটাও মেনে নিয়েছেন অনেকেই।
ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল জানাচ্ছে, যত দেরিতে শক্ত খাবার দেওয়া হবে, ফুড অ্যালার্জির ভয় তত বাড়বে। শরীরে আয়রন ঘাটতির মাত্রাও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। ইউরোপে ফুড অ্যালার্জি বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে শিশুদের এই খাদ্যাভ্যাসের কথাও উল্লেখ করেছেন অনেকে।
লন্ডনের ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেলথ-এর চিকিৎসকরা বারবারই বলছেন, প্রথম ছ’মাস বুকের দুধ খাওয়ানো শিশুর স্বার্থকে পুরোপুরি সুরক্ষিত নাও করতে পারে। সেইসঙ্গে তারা এ-ও জানাচ্ছেন, উন্নয়নশীল দেশে, যেখানে বিশুদ্ধ পানীয় জল এবং শিশুর উপযোগী নিরাপদ শক্ত খাবার পাওয়া সমস্যা, সেখানে এই তত্ত্ব না-ও খাটতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ান সোসাইটি অব ক্লিনিক্যাল ইমিউনোলজি অ্যান্ড অ্যালার্জির সুপারিশ, চার মাসেই বুকের দুধের সঙ্গে নানা শস্য এবং সব্জি সেদ্ধ খাওয়ানো হোক। আমেরিকার বিভিন্ন প্রদেশেও শিশু চিকিৎসকেরা এর পক্ষেই সওয়াল করছেন। তবে শক্ত খাবার মানে কেউই টিনের খাবারের কথা বলেননি।
বলেছেন, ফল, শস্য ও সব্জির কথাই।
বুকের দুধ খেলে পেটের অসুখ, শ্বাসকষ্টের সমস্যা কমে বলে চিকিৎসকদের অনেকেরই দাবি। তারা বলছেন, 'এক্সক্লুসিভ ব্রেস্টফিডিং' (মায়ের বুকের দুধ)-এ বুদ্ধি বাড়ে সেটা প্রমাণিত। কিন্তু চার মাস পরে শক্ত খাবার শুরু করলে ফুড অ্যালার্জি কমে, তার প্রমাণ এখনও সব দেশে তেমন জোরালো নয়। তাই এখনই পরীক্ষা না করাই ভাল।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।