অবশেষে যুদ্ধাপরাধী ও জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযমের সেই শিষ্য আবু রেজা মোহাম্মদ নিজামউদ্দিন নদবী মনোনয়ন পেলেন আওয়ামী লীগের! চট্টগ্রামের সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনে দলের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের বাদ দিয়ে জামায়াতের এই সাবেক নেতার মনোনয়ন লাভ মাঠ পর্যায়ে নেতা-কর্মীদের চরম অসন্তুষ্ট করেছে। এ ছাড়া কয়েকটি আসনে নতুন মুখের উদ্ভাসে আওয়ামী লীগে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি হলেও পরবর্তীতে ১৪-দলীয় মনোনয়নে কার ভাগ্যে কী ঘটছে, তা নিয়েই চলছে জোর আলোচনা।
চট্টগ্রামের ১৬ আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্ত নতুন মুখ হলেন ফটিকছড়িতে প্রাক্তন এমপি রফিকুল আনোয়ারের মেয়ে খদিজাতুল আনোয়ার সনি, হাটহাজারীতে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক ইউনুস গনি চৌধুরী, সন্দ্বীপে সাবেক এমপি মুস্তাফিজুর রহমানের ছেলে মাহফুজুর রহমান মিতা, সীতাকুণ্ডে বিএনপি সমর্থিত মেয়র, প্রাক্তন আওয়ামী লীগ নেতা এম মন্জুর আলমের ভাইয়ের ছেলে দিদারুল আলম, সাতকানিয়ায় আবু রেজা মোহাম্মদ নিজামউদ্দিন নদবী। এই নতুন মুখগুলোর মধ্যে বিতর্ক ও নিন্দার ঝড় উঠেছে জামায়াতের অন্যতম প্রধান পৃষ্ঠপোষক, জামায়াত নিয়ন্ত্রিত আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আবু রেজা মোহাম্মদ নিজামউদ্দিন নদবীর সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের মনোনয়নে। নদবী শুধু জামায়াতের পৃষ্ঠপোষকই ছিলেন না তার পরিচালিত প্রতিষ্ঠান আল্লামা ফজলুল্লাহ ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে জঙ্গি অর্থায়নের অভিযোগও ওঠে একটি গোয়েন্দা সংস্থার অনুসন্ধান রিপোর্টে।
জামায়াতের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম 'কর্মপরিষদ' সদস্য মোমিনুল হক চৌধুরীর জামাতা নদবীর পক্ষে জামায়াতের সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযম এক প্রত্যয়নপত্রে তাকে তাদের একজন 'দক্ষ কর্মী' বলে লেখেন। যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তি দাবিতে শহীদজননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে যখন তুমুল আন্দোলন চলছিল, তখন মধ্যপ্রাচ্যে নদবীর বিশেষ অবস্থান গড়ে তুলতে আরবি হরফে লিখে গোলাম আযম এ প্রত্যয়ন দেন নদবীকে। এ ছাড়া যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব হারিস চৌধুরীর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতার ছবিসংবলিত প্রকাশনা রয়েছে খোদ তার নিজের প্রতিষ্ঠানেরই। ভারতের স্বনামধন্য একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী হলেও অনৈতিক চরিত্রের কারণে সেখান থেকে বহিষ্কার করা হয় নদবীকে। এই নদবীকে এরই মধ্যে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী করে বিদেশযাত্রার সুযোগ করে দেয় বিশেষ মহল।
অবশেষে জাতীয় নির্বাচনে তার দলীয় মনোনয়নও জুটল। অথচ আসনটিতে আওয়ামী পরিবারের দীর্ঘ দিনের ত্যাগী নেতা, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতা আমিনুল ইসলাম, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান, শিল্পপতি আবদুল মোতালেব, পেশাজীবী নেতা ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান, চট্টগ্রাম চেম্বারের পরিচালক অহীদ সিরাজ চৌধুরী স্বপনের মতো যোগ্য নেতারা ছিলেন মনোনয়নপ্রত্যাশী। আসনটি ছাড়া চট্টগ্রামের অন্য কোথাও মনোনয়ন নিয়ে তেমন কোনো বিতর্ক নেই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।