মিষ্টি চেহারা, মিষ্টি কণ্ঠ ও মিষ্টি হাসির জন্য দর্শকরা তার নামের আগে জুড়ে দেয় মিষ্টি মেয়ের খেতাব। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট চাইতে এসে ওই মিষ্টি হাসির রেশে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের ভোটার ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মন জয় করেন তিনি। নিজে বহিরাগত হলেও জেলার রাজনৈতিক পরিবার হিসেবে পরিচিত ওসমান পরিবারের সন্তান শফিউদ্দিন ওরফে বাবু সারোয়ারের স্ত্রী হওয়ায় তেমন আপত্তি তুলেননি কেউ।
তবে নির্বাচনের পর গুটি কয়েকজন বাদে বিভিন্ন স্বার্থে এক এক করে দলের প্রায় সব স্থানীয় নেতাকর্মী থেকে দুরে সরে যান কবরী। ওসমান পরিবারের পালের হাওয়ায় এমপি হয়েই কবরী সেই পরিবারের কঠোর সামলোচনা শুরু করেন।
ফতুল্লা আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের পরীবর্তে তার ডানে বামে স্থান পায় কিছু উদ্ভট যুবক। আরো কপাল পুড়ে নেতা কর্মীদের যখন তার একান্ত সচিব হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় শ্যামপুরের এক স্বল্প শিক্ষিত তবে সুদর্শন যুবককে। যে কিনা ঢাকা-৪ আসনের বিএনপির সাবেক এমপি দৌড় সালাউদ্দিনের আত্মীয় বলে পরিচিত। এক পর্যায়ে মিষ্টি মেয়ে কবরী কপালে তকমা লাগে গডমাদারের।
অভিযোগ রয়েছে, সংসদ সদস্য হওয়ার পর এলাকার কোন উন্নয়ন কাজে মনোযোগ দেননি কবরী।
বরং রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কোন খাত থেকে কত তোলা যায় এ নিয়ে ভাবনায় দিন কাটতো তাঁর। তিনি প্রতি মাসে ফতুল্লার ঝুট সেক্টর, চোরাই তেল সেক্টর, টেন্ডার সেক্টর থেকে মাসোহারা তুলতেন একান্ত সচিবের মাধ্যমে। কেউ মাসোহারা দিতে দেরী করলে কবরী নিজেই ফোনে ধমকাতেন। ফোনে তাকে বলতে শোনা গেছে, ' ..... কে দিতে পারো- আমাকে দাও না কেন'। (এমন একটি ফোনালাপ সংরক্ষনে আছে)।
যদিও এসব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেন কবরী ও তার অনুগত কিছু লোক।
পাগলায় শুভ হত্যার, শামীম ওসমানের কর্মী সোহেল হত্যা, তার একান্ত সচিব সেন্টুর দিনে দুপুরে পাগলার মার্কেট দখল, বালুর গদি দখল, পঞ্চবটিতে ডাকাতির তুলাসহ কবরীর লোকের গ্রেপ্তার হওয়া, পিএস সেন্টুর পিস্তল উঁচিয়ে থানায় প্রবেশ, থানা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শওকত আলীকে গ্রেপ্তার করান কবরী। এ কারণে ফতুল্লা আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের সাথে কবরীর বিশাল দুরত্ব সৃষ্টি হয়।
সবচেয়ে সমালেচিত ছিল নারায়ণগঞ্জে একই দিনে ভাষা সৈনিক মরহুম সামসুজ্জোহা ওসমান ও বিএনপির প্রবীণ নেতা সাবেক এমপি মরহুম হাজী জালালউদ্দিনের মৃত্যুবার্ষিকী। শোকাহত ওই দিনে কবরী পাগলার শোক না জানিয়ে পাগলা মেরী এন্টারসনে এক অনুষ্ঠানে তার একান্ত সচিব সিরাজুল সেন্টুর সাথে নেঁচে গেয়ে উৎসব করেন।
এতে চরম মনক্ষুন্ন হন নেতা কর্মীরা। এভাবেই বিভিন্ন কারণে মনোনয় থেকে বাদ পড়েন কবরী বলে স্থানীয়রা জানায়।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।