ককটেল ও পেট্রল বোমায় হতাহতদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতির অনিবার্য পরিণতি হলো ককটেল ও পেট্রল বোমাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের প্রবণতা। জননিরাপত্তা রক্ষায় সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নৈতিক কর্তব্য বলে বিবেচিত হলেও তারা এক্ষেত্রে ধারাবাহিক ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। সত্যিকারের অপরাধী ও তাদের মদদদাতাদের গ্রেফতারের বদলে পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে দুষ্কর্মের অভিযোগ চাপিয়ে প্রকারান্তরে বোমাবাজদেরই আড়াল করা হচ্ছে। যানবাহনে অগি্নসংযোগের ঘটনায় শুধু নভেম্বর মাসেই অন্তত ৫০ জন অগি্নদগ্ধ হয়েছেন। এদের মধ্যে মারা গেছেন নয়জন। ইবলিসের যেসব বরপুত্র ককটেল ছুড়ে ও যানবাহনে অগি্নসংযোগ করে আনন্দ পায়, তাদের পাকড়াও করা এবং এসব ঘটনার নির্দেশদাতা ও অর্থায়নের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির বিধান সরকারের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। জননিরাপত্তা রক্ষার দায়বোধ থেকে সরকার সে কর্তব্য পালনে আন্তরিক হবে, দেশের মানুষ তেমনটিই দেখতে চায়। কিন্তু কর্তব্য পালনে তারা যে আন্তরিকতার পরিচয় দেয়নি ককটেল ও পেট্রল দুবর্ৃৃত্তদের দৌরাত্দ্য সে প্রমাণই দেয়। হরতাল ও অবরোধের নামে যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে ককটেল ও পেট্রল বোমা। রাজনৈতিক দুর্বৃত্তদের যে অংশটি এসব অপকর্মে জড়িত এবং এর অর্থায়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তারা কারা তা সাধারণ মানুষেরও খুব একটা অজানা নয়। কিন্তু তাদের পেছনে না ছুটে উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর প্রয়াস সরকারের ভাবমূর্তিকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে। আসল দুর্বৃত্তদের বদলে পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির নেতাদের গ্রেফতারের ঘটনা অপরাধী চক্রের নেতৃত্বকেই সুসংহত করছে। আমরা চাই ককটেল ও পেট্রল বোমা তৈরি, ব্যবহার এবং এর অর্থায়নের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের ছেঁকে আটক করা হোক। মানুষবেশী এই পিশাচদের সর্বোচ্চ শাস্তি বিধানের প্রতি কোনো দ্বিমত থাকাই উচিত নয়। কিন্তু সে বিধিবদ্ধ কর্তব্য পালন না করে মওদুদ, এম কে আনোয়ার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম, শিমুল বিশ্বাস, রিজভী কিংবা ফখরুল আহমেদের মতো নেতাদের ওপর জ্বালাও-পোড়াওয়ের অভিযোগ তোলার প্রয়াস দুর্ভাগ্যজনক। বিশ্বাসযোগ্যতার ক্ষেত্রে সংকট সৃষ্টি করে এমন অভিযোগ কোনোভাবেই বাঞ্ছনীয় নয়। আমরা মনে করি শুধু সরকার নয়, ককটেল ও পেট্রল বোমা তৈরি এবং ব্যবহারের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা উচিত। নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থেই ইবলিসের এসব বরপুত্রকে আইনের হাতে সোপর্দ করার ব্যাপারে সমাজের সবাইকেই সচেষ্ট হতে হবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।