........
১৮৩২ সালের আগে মেডিকেলের ছাত্রদের শেখার জন্য ক্যাডাভার(মৃতদেহ) আইনসংগত ভাবে পাওয়া খুবই কঠিন ছিল । মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মৃতদেহ ছিল এই আইন সংগত উপায়ের অন্যতম উদাহরণ, কিন্তু একপর্যায়ে মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা কমে আসায় এইপথটাও সংকুচিত হয়ে পড়ে । এই কারণে ধীরে ধীরে এনাটমি শিক্ষকেরা বডি পাওয়ার জন্য “লাশ-চোর”দের ওপর নির্ভর করতে শুরু করলেন । এখানেই নিহিত রয়েছে বার্ক হেয়ারদের বাড়িওয়ালা থেকে খুনিতে রূপান্তরের কারণ ।
উইলিয়াম বার্ক ও উইলিয়াম হেয়ার দুজনেই ছিল আয়ারল্যান্ডের অধিবাসী ।
উইলিয়াম বার্কের সাথে মিসেস হেয়ার(মার্গারেট হেয়ার) এর আগে দেখা হয়েছিল বলে জানা যায় । ১৮২৭ সালের নভেম্বর মাসে বার্ক তার মিস্ট্রেস হেলেন ম্যাকডুগালকে নিয়ে ্মার্গারেট হেয়ারের লজিং হাউসে এসে ওঠে । তাদের মাঝে একটা ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে । এমন সময় লজিং হাউসের একজন পেনশনভোগী বৃদ্ধ বাসিন্দা হেয়ারদের কাছে চার পাউন্ডের ভাড়া বাকি রেখে মারা গেলেন । এই বাকির ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তারা এমন একটা কাজ করল যেটা অস্বাভাবিক হলেও তাদের চারজনের পরবর্তী কাজকর্মের তুলনায় তা আসলে “কিছুই না” ।
তারা বৃদ্ধের মৃতদেহটি এনাটমি লেকচারার রবার্ট নক্সে সহযোগীর কাছে প্রায় ৭ পাউন্ডে(এখনকার দিনে প্রায় ৭৩১ পাউন্ডের সমতূল্য) বেঁচে দিল । চার পাউন্ডের বদলে সাত পাউন্ড, আপাতত তাদের “লাভ” ভালই হয়েছিল ।
গল্পটা যদি এখানেই শেষ হত তাহলে তো আর কোন কথাই ছিল না । কিন্তু না এই নটে গাছটি এত সহজে মুরোনোর নয় । কারণ বার্ক-হেয়ারদের মাঝে লাশ বিক্রি করে টাকা কামানোর নেশা চেপে বসেছে, এবার আর তারা লাশ সংগ্রহ নয়, নিজেরাই জীবিত মানুষকে “লাশ” বানিয়ে বেঁচে দেওয়ার বেসাতি খুলে বসে, আর এখান থেকেই আসল কাহিনী শুরু ।
জোসেফ নামের একজন ভাড়াটেকে শ্বাসরোধ করে খুন করার মাধ্যমে বার্ক-হেয়ারের ক্রমখুন শুরু হয় । প্রথমে এলকোহলের মাধ্যমে নেশাগ্রস্ত করে ভিক্টিমকে দুর্বল করে ফেলা হত এরপর তারা শ্বাসরোধ করত । এরপরে কিছুদিন করে তাদের হত্যাকাণ্ড আর ভাড়াটের মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকল না, রাস্তা পর্যন্ত পৌঁছল । ১৮২৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তারা একজন পেনশনভোগী মহিলা এবিগ্যাল সিম্পসনকে তার গ্রামে ফিরে যাবার আগে রাত কাটিয়ে যাওয়ার দাওয়াত দিল । আগের হত্যাকাণ্ডের মত একই পদ্ধতি অনুসরণ করে তারা ঐ মহিলাকে খুন করে ।
এই মহিলার লাশের জন্য তারা ১০ পাউন্ড পেয়েছিল বলে জানা যায় ।
সেই বসন্তেই আর দুইটি খুনের ঘটনা ঘটে, কিন্তু সেই খুন দুইটির দিন-তারিখ সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায় না । সেই পুরনো উপায়েই তার বন্দোবস্ত করা হয় । এরপর বার্ক দুজন মহিলাকে খুন করার পরিকল্পনা করে । কিন্তু একজনকে খুন করতে সক্ষম হয় তারা ।
সেই মহিলার নাম ছিল মেরি প্যাটারসন । এরপরের নিহত হয় আরও একজন মহিলা, এই মহিলা ঝাড়ুদারনি হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করত । এফি নামের এই মহিলা বার্কের কাছে মাঝে মাঝে পরিত্যক্ত লেদার বিক্রি করত । এই পরিচয়ই শেষ পর্যন্ত কাল হয় এই দুর্ভাগা মহিলার ।
এর পরে বার্ক পুলিশের হাতে ধরা পড়ার হাত থেকে এক মাতাল মহিলাকে “বাঁচায়” ।
পুলিশের কাছে মহিলাকে নিজের পরিচিত বলে দাবি করে বার্ক । বলাই বাহুল্য মাত্র কয়েক ঘণ্টার মাঝেই এই মহিলার প্রাণহীন শরীরেরও ঠাই হয়েছিল নক্সের মেডিকেল স্কুলে ।
এরপরের ভিক্টিম একজন কি দুজন সেটা নিয়ে কিছুটা তর্ক-বিতর্ক হতে পারে । এবার বার্ক-হেয়ার একজন বৃদ্ধা ও তার ছেলে বা নাতির মৃতদেহ বিক্রি করে । বৃদ্ধা উচ্চ মাত্রার ব্যাথানাশকের প্রভাবে মারা গিয়েছিল ।
কিন্তু ১২ বছরের বাচ্চাটিকে নৃশংসভাবে হত্যা করে হেয়ার । পরে হেয়ারের জবানীতে জানা যায় মৃত্যুর পূর্বক্ষণে বাচ্চাটির ভয়ার্ত চাহনি তাকে তাড়া করে ফিরত । এই দুইটি লাশের একসাথে স্থান সঙ্কুলান না হওয়ার ব্যারেলের মাঝে নিয়ে ঘোড়ার পিঠে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে তারা । একপর্যায়ে ঘোড়াটি বেঁকে বসায় এক কুলির সাহায্য নিয়ে স্লেজে করে নিতে বাধ্য হয় হেয়ার । রাগ সামলাতে না পেরে হেয়ার ঘোড়াটিকে পরে মেরে ফেলেছিল ।
এর পরের শিকাররা হল মিসেস হসলার ও এন ডুগাল, এরা দুজনই ছিলেন মিসেস ম্যাক ডুগালের আত্মীয় । বার্কের কাছ থেকে পরবর্তীতে জানা যায়, মিসেস হেয়ার নাকি একবার হেলেন ম্যাকডুগালকেও “বিক্রয়ের জন্য তৈরি” করার প্রস্তাব তুলেছিল । কিন্তু পরবর্তীতে এই প্রস্তাব “প্রত্যাখ্যাত” হয় ।
আরেকজন শিকার হলেন মেরি হালডেন । এই প্রাক্তন ভাড়াটিয়াকে হেয়ারের আস্তাবলে ঘুমাতে দেয়ার কথা বলে চিরঘুমের দেশেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল ।
শুধু তাই না, এরপরে মেরি হ্যালডেনের মেয়ে পেগি হ্যাল্ডেন মায়ের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিতে এলে তাকেও খুন করে বার্ক-হেয়ার ।
শহরের রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো পাগলেরা স্বাভাবিকভাবেই মানুষজনের নজরে পড়ে । এমন কারো যদি লাশ চোখে পড়ে সেটা আর যাই হোক, যারা দেখবে তাদের কাছে অপরিচিত ঠেকবে না । ১৮ বছর বয়েসী জেমস উইলসন নামের এমন একজনকে খুন করে বার্কদের খানিকটা ঝামেলায় পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল । জেমস নিখোঁজ হওয়ার পর জেমসের মা ছেলেকে খুঁজছিলেন ।
ডক্টর নক্স যখন ব্যবচ্ছেদ করার জন্য জেমসের দেহ ছাত্রদের সামনে উন্মুক্ত করেন তখন অনেকেই জেমসকে চিনে ফেলে । কিন্তু নক্স ঐ মৃতদেহকে জেমসের মৃতদেহ হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকার করেন এবং লাশের পরিচয় নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি করার জন্য তড়িঘড়ি করে দেহটি ব্যবচ্ছেদ করে ফেলেন । খুনের পর হেয়ার সাধারণত লাশের জামাকাপড় খালে ফেলে দিত, কিন্তু এই ক্ষেত্রে জেমসের কাপড় তার ভাতিজাদের কাছে দিয়ে দিয়েছিল যা পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হয় ।
বার্কের জবানীতে পরে জানা যায়, খুনগুলো করার সময়ে সে আর হেয়ার একপ্রকার ঘোরের মাঝে থাকত, মদ না খেলে তাদের চোখে ঘুমই আসত না, মাথার কাছে মোম না জ্বালিয়েও তারা ঘুমোতে পারত না ।
বার্ক ও হেয়ারের সর্বশেষ ভিক্টিম হচ্ছেন মিসেস মেরি ডকহার্টি ।
বার্ক স্বভাবসুলভ উপায়ে এই মহিলার মন জয় করে নিজের বাড়ীতে নিয়ে আসতে সমর্থ হয় । বার্কের মাও একজন ডকহার্টি, এই কথা বলে মহিলার সাথে আলাপ জমায় বার্ক । কিন্তু সেইসময় বার্কের বাড়িতে জেমস ও এন গ্রে নাম্নী দুজন বাসিন্দা থাকায় তারা মহিলাকে সাথে সাথে খুন করতে পারেনি । গ্রে রা চলে গেলে পরে বার্কের প্রতিবেশীরা ধস্তাধস্তির আওয়াজ পায়, এমনকি মহিলা কণ্ঠে “মার্ডার!” আর্তনাদও শুনতে পেরেছিল কেউ কেউ ।
পরের দিন গ্রে রা ফিরে আসল ।
এন গ্রে একটি বিছানার কাছে তার মোজা ফেলে গিয়েছিলেন, কিন্তু বার্ক ছল-ছুতা দেখিয়ে সেখানে যেতে না দেওয়ায় তার মনে সন্দেহ দানা বেঁধে ওঠে । সন্ধ্যার দিকে বার্কেরা বেরুলে গ্রে রা বিছানার নিচে মিসেস ডকহার্টির মৃতদেহ দেখতে পায় । সাথে সাথে তারা পুলিশে খবর দিতে রওয়ানা হয়ে যান, মিসেস ম্যাকডুগাল তাদের প্রতি সপ্তাহে ১০ পাউন্ড ঘুষ দেওয়ার লোভ দেখিয়ে পুলিশের কাছে খবর দেওয়া থেকে তাদের নিবৃত করতে চেষ্টা করে । কিন্তু তারা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে ।
পুলিশ আসার আগেই বার্ক ও হেয়ার মৃতদেহ সরিয়ে ফেলে ।
কিন্তু পরবর্তীতে পুলিশই জেরার মুখে বার্ক বলে, মিসেস ডকহার্টী সকাল ৭টার দিকে বেরিয়ে গেছেন, অন্য দিকে মিসেস ম্যাকডুগাল বলে মিসেস ডকহার্টি সন্ধ্যার দিকে বেরিয়ে গেছেন । এই তথ্যের গড়মিল দেখে দেরি না করে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে । গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ নক্সের ডিসেকশন রুমে গিয়ে মিসেস ডকহার্টির মৃতদেহ খুঁজে পায়, জেমস গ্রে এই মৃতদেহ শনাক্ত করেছিলেন । এডিনবার্গের একটি পত্রিকায় নিখোঁজ ব্যক্তিদের ব্যাপারে লেখালেখি শুরু হওয়ার পরে জ্যানেট ব্রাউন এসে মেরি প্যাটারসনের পরিধেয় শনাক্ত করেন ।
বার্কদের বিরুদ্ধে ১৬টির মত খুনের সন্দেহ পড়লেও তখন তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ বলতে ছিল কেবল মিসেস ডকহার্টীর মৃতদেহ ।
তাছাড়া অন্যদিকে জুরিরা বুঝতে পারছিলেন না খুনগুলোর জন্য ক্যাপিটাল অফেন্সের দায় কার ওপর আসলে পড়ে, এমতাবস্থার এডভোকেট স্যার উইলিয়াম রে হেয়ারকে ইমিউনিটির বিনিময়ে “রাজসাক্ষী” হতে প্রস্তাব দিলেন । পরববর্তীকালে বার্ক ও হেয়ারের আচার-আচরণ নীতিনির্ধারকদের আতস কাঁচের তলায় যাচাই বাছাই হয় । বার্ক ছিল পুরোদস্তুর ঠাণ্ডা মাথার খুনি, অন্যদিকে হেয়ার ছিল অপরাধ প্রবণ অথচ স্বল্পবুদ্ধির চরিত্র যাকে বার্কের সহযোগী হিসেবে চিহ্নিত করা হয় । অন্যদিকে তুলনা করা হয় দুই মহিলা সহযোগীর মাঝেও, এক্ষেত্রে কিন্তু ম্যাকডুগাল নয়, মিসেস হেয়ারই সম্ভবত এগিয়ে ছিলেন ।
শুনানির পর মিসেস ডক হার্টিকে খুনের দায়ে বার্ককে ফাঁসি দেওয়া হয় ।
মিসেস ম্যাকডুগালের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় তাকে খালাস দেওয়া হয় । মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার আগে রায়ে বার্ককে উদ্দেশ্য করে লেখা হয়-
“You now stand convicted, by the verdict of a most respectable jury of your country, of the atrocious murder charged against you in this indictment, upon evidence which carried conviction to the mind of every man that heard it. (...) In regard to your case, the only doubt that has come across my mind, is, whether, in order to mark the sense that the Court entertains of your offence, and which the violated laws of the country entertain respecting it, your body should not be exhibited in chains, in order to deter others from the like crimes in time coming. But, taking into consideration that the public eye would be offended with so dismal an exhibition, I am disposed to agree that your sentence shall be put in execution in the usual way, but accompanied with the statutory attendant of the punishment of the crime of murder, viz.- that your body should be publicly dissected and anatomized. And I trust, that if it is ever customary to preserve skeletons, yours will be preserved, in order that posterity may keep in remembrance of your atrocious crimes.”
যে পত্রিকাটি বার্ককে ফাঁসি দেওয়ার ঘটনাটি কাভার করেছিল তাদের সেই দিন অতিরিক্ত ৮০০০ কপি বেশি বিক্রি হয়েছিল । ১৮২৯ সালের ২৮ জানুয়ারি সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে মুষলধারে বৃষ্টির মাঝেই বার্কের ফাঁসি কার্যকর করা হয় । ২০০০০ থেকে ২৫০০০ মানুষ এই ঘটনার সাক্ষী হয়েছিল বলে জানা যায় । পরের দিনই জনসমক্ষে বার্কের দেহ ব্যবচ্ছেদ করা হয় ।
কিন্তু এই ব্যবচ্ছেদ দেখা নিয়ে লোকজনের ঠেলাঠেলিতে সেখানে ছোটখাট একটা দাঙ্গা বেঁধে যায়, অবস্থা বেগতিক দেখে ৫০জন করে করে পর্যায়ক্রমে দলে দলে এসে ব্যবচ্ছেদ দেখে যাওয়ার বন্দোবস্ত করা হয় ।
প্রফেসর আলেকজান্ডার মনরো বার্কের রক্তে পালকের কলম ডুবিয়ে লিখেন- "This is written with the blood of Wm Burke, who was hanged at Edinburgh. This blood was taken from his head”
বার্কের কংকাল, তার চামড়া থেকে তৈরি কিছু জিনিসপত্র এডিনবার্গের পুলিশ ইনফরমেশন সেন্টারে সংরক্ষিত রয়েছে ।
মিসেস ম্যাকডুগালকে ছেড়ে দেওয়া হলেও রাস্তাঘাটে তাকে মানুষজন চিনে ফেললে তাদের মারাত্নক রোষের স্বীকার হতে হত । একপর্যায়ে তাকে পুলিশের হেফাজতে চলে যেতে হয় । কোনভাবেই ইংল্যান্ডে টিকতে না পেরে দেশান্তরী হতে মিসেস ম্যাকডুগাল বাধ্য হয় বলে শোনা যায় ।
১৮৬৮ সালে মহিলা অস্ট্রেলিয়ায় মারা গেছে, এমন একটা বর্ণনাও পাওয়া যায় । অন্যদিকে মার্গারেট হেয়ারও একইভাবে ইংল্যান্ডে টিকতে না পেরে প্রথমে গ্লাসগো পরে আয়ারল্যান্ডের বেলফাস্টের কাছে নিজের বাড়ীতে চলে যায় । বার্কের সহযোগী হেয়ার ১৮২৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসেই মুক্তি পায়, তার পরিণতি নিয়ে নানা ধরণের গল্প প্রচলিত আছে কিন্তু কোনটিই প্রমাণের অভাবে সত্য বলে প্রতিষ্ঠিত হয়নি ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।