ফ্রান্সে রাজনৈতিক আশ্রয়লাভের আবেদন বিবেচনার সময়সীমা কমানোর বিষয়ে আইন প্রণয়ন করতে যাচ্ছে সরকার। আশ্রয়প্রার্থীদের আবেদন যত দ্রুত সম্ভব সুরাহা করতে সরকার নতুন পদক্ষেপ নেবে। এক্ষেত্রে আবেদনের ছয় মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানতে পারবেন আবেদনকারী। এর ফলে নিজ দেশে নানা ধরনের বঞ্চনার শিকার হয়ে দেশত্যাগে বাধ্য একজন রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী দ্রুত জানতে পারবেন তার মানবাধিকার সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে কি সিদ্ধান্ত হচ্ছে। আশ্রয়প্রার্থীদের আবেদন বিবেচনার ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রিতা কমিয়ে আনার জন্যই এ পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যানুয়েল ভালস।
গত বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের জাতীয় সংসদে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সমাজবাদী দলীয় সংসদ সদস্য জ্যা লুই তুরেন ও সিনেটর ভ্যালেরি লেতার্দের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন ম্যানুয়েল ভালস।
আশ্রয়প্রার্থীদের আবেদন বিবেচনার সময়সীমা কীভাবে কমানো যায় সে বিষয়ে সরকার ইতোমধ্যে কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অন্য বছরগুলোর তুলনায় ২০১৩ সালে রেকর্ড সংখ্যক শরণার্থী ফ্রান্সে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের জন্য আবেদন করেছে। আশ্রয় প্রার্থনার সংখ্যা এ বছর ছাড়িয়ে গেছে ৭০ হাজার।
এর আগে ২০০৪ সালে ফ্রান্সে রেকর্ড সংখ্যক ৬৫ হাজার শরণার্থী আবেদন করেছিল। এত বেশি আবেদন বিবেচনা করা ফ্রান্সের শরণার্থী ও রাষ্ট্রবিহীন নাগরিক বিষয়ক কার্যালয়ের (অফরা) পক্ষে সম্ভব নয়।
আবেদন পর্যালোচনা ও নিরীক্ষার পরই একজন আশ্রয়প্রার্থীকে মৌখিকভাবে নিজের সমস্যা প্রমাণের জন্য উক্ত কার্যালয়ে একজন কর্মকর্তার সামনে উপস্থিত হতে হয়। সন্তোষজনকভাবে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে পারলে সে কার্যালয় থেকেই আবেদন মঞ্জুর করা হয়। আবেদন না-মঞ্জুর করা হলে আবেদনকারী জাতীয় আদালতে তা পুর্নবিবেচনার জন্য আবেদন করতে পারেন। এসবের জন্য প্রচুর সময় ব্যয় হয় জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আবেদন পর্যালোচনা ও সিদ্ধান্ত দ্রুত নেওয়ার ক্ষেত্রে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র জার্মানের নীতি গ্রহণ করার বিষয়ে সরকার চিন্তা-ভাবনা করছে।
এদিকে, রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের খণ্ডকালীন অবস্থান ভাতা এবং আবাসন ব্যবস্থার বিষয়েও কিছু কঠোর নীতি সরকার গ্রহণ করতে পারে বলে জানা গেছে।
ফ্রান্সের উদ্বাস্তু বিষয়ক বাজেটের সিংহভাগ অর্থ দীর্ঘসূত্রিতার জন্য ব্যয় হয়। এ কারণেই আবেদনের পর দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে সরকার কঠোর অবস্থানে যেতে পারে।
প্রসঙ্গত, ফ্রান্সে ১৯৮১ সালে এক যোগে এক লাখ ৩১ হাজার অবৈধ বিদেশিদের অভিবাসী মর্যাদা দেওয়া হয়। ১৯৯৭ সালে এ সংখ্যা ছিল ৮০ হাজার। ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুয়ায়ী বর্তমানে দেশটিতে তিন লাখ থেকে চার লাখ অবৈধ বিদেশি রয়েছে।
রাজনৈতিক কারণে গণহারে এদের অভিবাসী মর্যাদা না দিলেও এ সংখ্যা আগের বছরগুলোর তুলনায় কম হবে না বলে একটি মহল মনে করছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।