আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পৃথক বেতন কাঠামোর আশা পূরণ হলো না ব্যাংকারদের



পৃথক বেতন কাঠামোর আশা পূরণ হলো না রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। একই অবস্থা কেন্দ্রীয় ব্যাংকেরও। প্রধানমন্ত্রীর চূড়ান্ত অনুমোদনের পর আশায় বুক বেঁধেছিলেন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সরকারি চার বাণিজ্যিক ব্যাংকের (সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ১৪ নভেম্বর নতুন বেতন কাঠামো চূড়ান্ত অনুমোদনের পর ব্যাংকারদের আশা ছিল দু-এক দিনের মধ্যে তারা ঘোষণা পাবেন। জারি হবে প্রজ্ঞাপন।

কিন্তু ১৯ দিন পেরিয়ে গেলেও তার কিছুই হয়নি। নীতিনির্ধারকরা জানান, এখনই তা বাস্তবায়নের সম্ভাবনা নেই। পৃথক পে-স্কেলের জন্য দীর্ঘ আট বছরের চেষ্টা শেষে আটকে গেছে নির্বাচনী আচরণবিধির ফাঁদে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ড. এম আসলাম আলম জানান, সব কিছুই চূড়ান্ত। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদনও দিয়েছেন।

কিন্তু নির্বাচনী বিধির কারণে পৃথক পে-স্কেলের প্রজ্ঞাপন জারি করা সম্ভব হচ্ছে না। একই কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বতন্ত্র বেতন কাঠামোর প্রজ্ঞাপন জারির সম্ভাবনা নেই বলে জানান সচিব। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বতন্ত্র এবং রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের পৃথক বেতন কাঠামো নির্ধারণ করার জন্য ২০০৫ সাল থেকেই চেষ্টা চলছে। কিন্তু এ উদ্যোগ সীমাবদ্ধ থেকেছে সচিবালয়-ব্যাংকের চিঠি আদান-প্রদানের মধ্যে। চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতার শেষের দিকে তা বাস্তবায়নের ঝুঁকি নেয়নি।

সাবেক গভর্নর ড. ফখরুদ্দীন আহমদ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হয়ে এলে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা আবারও আশায় বুক বাঁধলেন নিজেদের মানুষ পেয়ে। কিন্তু তিনিও আমলাদের বোঝাতে ব্যর্থ হলেন। শেষে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর পদে ড. আতিউর রহমান যোগ দেওয়ার পর আবারও এ নিয়ে আশায় বুক বাঁধেন তারা। গত পাঁচ বছরে এ নিয়ে একাধিকবার ড. আতিউর রহমান প্রধানমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেন। গত ২৭ এপ্রিল সরকারের চার বছরে বাংলাদেশ ব্যাংকের অগ্রগতি নিয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভিন্ন বেতন কাঠামোর আশা করেছিলেন।

কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেষ পর্যন্ত ওই অনুষ্ঠানে যাননি। অতঃপর মহাজোট সরকারের মেয়াদ শেষে ১৪ নভেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও রাষ্ট্রায়ত্ত চার বাণিজ্যিক ব্যাংকের পৃথক বেতন কাঠামোর চূড়ান্ত অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অর্থ বিভাগ জানিয়েছিল দু-এক দিনের মধ্যে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারির কথা। ২৪ নভেম্বর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সচিবালয়ে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, 'কিছু জটিলতার' কারণে ব্যাংকের পৃথক পে-স্কেলের প্রজ্ঞাপন জারি করা যাচ্ছে না। দু-এক দিনের মধ্যে তা হবে বলে ওই দিন সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছিলেন মন্ত্রী।

কিন্তু তা আর হয়নি। চূড়ান্ত অনুমোদনের পর পৃথক বেতন কাঠামো বাস্তবায়নে কী এই জটিলতা? ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব জানান, 'ব্যাংক কর্মকর্তারা যেহেতু নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবেন, তাই নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী এ মুহূর্তে তাদের কোনো সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো যাবে না। এখন পৃথক পে-স্কেলের ঘোষণা দিলে আচরণবিধি লঙ্ঘন হবে,' জানান সচিব। তিনি বলেন, 'নির্বাচনের পর নতুন সংসদকেই এটা করতে হবে। অথবা নির্বাচন অনুষ্ঠানের পর রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমেও করা যেতে পারে।

' প্রসঙ্গত, সর্বোচ্চ ৯৩ হাজার ৭৫০ এবং সর্বনিম্ন ১২ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করে গত মাসে রাষ্ট্রায়ত্ত চার বাণিজ্যিক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পৃথক বেতন কাঠামোর চূড়ান্ত অনুমোন দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুমোদিত বেতন কাঠামোয় ১১টি স্কেল রয়েছে। এখন চালু আছে ১৯টি স্কেল। ১৯টি বেতন-স্কেলকে সমন্বয় করে ১১টি স্কেলে রূপান্তর করা হয়েছে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।