বাফুফে ভবনের নিচে এসে গাড়ি থেকে নামলেন লোডভিক ডি ক্রুইফ। একটু আগেই শেষ ফেডারেশন কাপের চার সেমিফাইনালিস্ট দলের সংবাদ সম্মেলন। আবাহনী-শেখ জামাল, মুক্তিযোদ্ধা-বিজেএমসি চার দলের কণ্ঠেই ফাইনালে ওঠার জোরালো আশাবাদ। কিন্তু কোনো দলের প্রতি সামান্যতম পক্ষপাত নেই জাতীয় দলের কোচের। তাঁর অগ্রাধিকার তালিকায় শুধুই স্থানীয় খেলোয়াড়দের ভালো করার প্রত্যাশা।
আবাহনী-শেখ জামালের স্থানীয় খেলোয়াড়েরা নিশ্চয়ই চাইবেন জাতীয় দলের কোচের নজর কাড়তে। তবে ঢাকার ফুটবলে এখন বিদেশিদেরই জয়জয়কার। আজও আবাহনী-শেখ জামাল প্রথম সেমিফাইনালটা বিদেশিদের দাপটের আরেকটি বিজ্ঞাপন হবে হয়তো। তবে ফুটবলামোদী জনতা চায় সঙ্গে স্থানীয়রাও জ্বলে উঠুন, দারুণ আকর্ষণীয় এক ম্যাচ হোক।
আবাহনী-শেখ জামাল এ মৌসুমে কাগজে-কলমের সেরা দুই দল।
শেখ জামাল এক নম্বর, আবাহনী দুইয়ে। তবে আবাহনী এই ম্যাচের জন্য সঞ্চয় করেছে বাড়তি শক্তি। মাত্রই শিশুসন্তান হারানো আবাহনী ডিফেন্ডার ওয়ালি ফয়সাল খেলছেন আজ। ডেঙ্গু জ্বরমুক্ত ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার ডি সুজা আজই প্রথম নামতে পারেন। দর্শক সমর্থন আবাহনীর শক্তি বাড়িয়ে দেয় আরও।
শেখ জামাল অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম তো আর এমনিই বলেননি, ‘আবাহনীর পক্ষে মাঠ, ঘাস, দর্শক স্টেডিয়াম...সবই। স্রোতের বিরুদ্ধেই খেলতে হবে আমাদের!’ অবশ্য শেষ আটে আরেক দর্শকপ্রিয় দল মোহামেডানের বিপক্ষে পাওয়া ৩-১ জয় থেকে মামুনুলরা এই প্রতিকূলতাকে জয় করার সাহসও পান।
খেলোয়াড়দের ফিটনেসটা তুলনা করলে শেখ জামাল এগিয়ে থাকে। মূলত ৪-৩-৩ ছকেই বেশি খেলে জামাল। ওপরে নর্দে, ওয়েডসন ও এমেকাকে নিয়ে আজও শেখ জামাল আক্রমণাত্মক থাকবে বলে কোচের আভাস।
আবাহনী নিজেদের ৪-৪-২ ছক ভেঙে প্রায়ই একক স্ট্রাইকার হিসেবে মরিসনকে সামনে রাখছে। একটু স্থূল শরীরের ব্রাজিলিয়ান কাস্ত্রো থাকেন তাঁর নিচে।
কাগজের হিসাব পাল্টে আবাহনী আজ অতীতের অনেক বড় ম্যাচের মতো উজ্জীবিত হয়ে উঠতে পারে। তেমনই আশা এক মৌসুম পর ফেড কাপের সেমিতে ওঠা দলটির কোচ অমলেশ সেনের, ‘দর্শক সমর্থন নিয়ে আমরা নিজেদের উজাড় করে দেব মাঠে। ’
আবাহনীর প্রতিপক্ষ আসলে শেখ জামালের ১২ জন।
দ্বাদশ ব্যক্তিটি আর কেউ নন, জামালের কোচ যোসেফ আপুসি। ডাগ-আউটে দাঁড়িয়ে আপুসি দলের সঙ্গে এত বেশি একাত্ম থাকেন, খেলোয়াড়দের জন্য সেটাও একটা শক্তি হয়ে যায়। যদিও কোচের কাছে খেলোয়াড়েরাই মূল শক্তি, ‘আমার খেলোয়াড়েরা প্রতিদিনই ভালো করছে। ফাইনালে ওঠাই নয়, কাপ জয়েরও স্বপ্ন দেখছি। ’
সেই স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দিতে চান এখন পর্যন্ত গোল না খাওয়া আবাহনীর অধিনায়ক সুজন, ‘টুর্নামেন্টে আমরা গোল খাইনি।
শেখ জামালের বিপক্ষেও পোস্ট অক্ষত রাখব। ’
২০১১ ফেড কাপের ফাইনালেই আবাহনীর জালে দুটি গোল দিয়েছিল জামাল। তবে আবাহনীর ঘানাইয়ান স্ট্রাইকার ইব্রাহিমের হ্যাটট্রিকে জামাল সেদিন খেয়েছিল ৫ গোল। আজ অঘোষিত ফাইনালের আবহে এসে পড়ছে দুই বছর আগের সেই ৫-২ গোলের ম্যাচ!
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।