আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঢাকার কাছে নবাবগঞ্জ

ইছামতি নদী
প্রথমেই বেড়াতে পারেন এখানে। নবাবগঞ্জ শহরের মহাকবি কায়কোবাদ মোড় থেকে পশ্চিম দিকে কলাকোপার দিকে শহরের সঙ্গী হয়ে বয়ে চলেছে ইছামতি। নদীর বুকে নৌকায় কিছুটা সময় বেড়াতে পারেন।
 
গান্ধী মাঠ
গান্ধী মাঠ
গান্ধী মাঠ
নবাবগঞ্জের কলাকোপায় রয়েছে ঐতিহাসিক গান্ধী মাঠ। সর্বভারতীয় সম্মেলন উপলক্ষে মহাত্মা গান্ধী ১৯৪০ সালে এই মাঠে এসেছিলেন।

তারপর থেকেই গান্ধী মাঠ নামে পরিচিতি পায়। বর্তমানে বিশাল এই মাঠ পড়ে আছে অযত্ন আর অবহেলায়।
আর এন হাউজ
গান্ধী মাঠ ফেলে কিছুটা সামনে রয়েছে প্রাচীন একটি বাড়ি। এরই নাম আর এন হাউজ। ইট থেকে চুন সুরকি খসে ধ্বংসের প্রহর গুণলেও এখনও স্বগর্বে বাড়িটি তার জৌলুস জানান দিচ্ছে।

জানা যায়, আড়াইশ বছর আগে রাধানাথ সাহা নামে হিন্দু এক জমিদার মুর্শিদাবাদ থেকে এসে এ বাড়ি তৈরি করেছিলেন। চারিদিকে কক্ষ ঘেরা এই বাড়ির সামনের অংশে ছিল অতিথিশালা, পেছনে অন্দর মহল এবং পাশেই মন্দির। মাঝে ছোট একটি খোলা জায়গা। বাড়ির সামনের দিকে বিশাল তোরণ আকৃতিতে তৈরি। আর এন হাউজের সামনে একেবারে ইছামতির তীর ঘেঁষে রয়েছে সুন্দর দোতলা বাড়ি।

রাধানাথ সাহার ছেলের ছিল লবণের ব্যবসা। লিভারপুল থেকে লবণ আমদানি করতেন তিনি। সে ব্যবসার গদিঘর ছিল এ বাড়ি।
আর এন হাউসের বাইরের দিক জগবন্ধু সাহা হাউস
আর এন হাউসের বাইরের দিক
জগবন্ধু সাহা হাউস
জগবন্ধু সাহা হাউজ
আর এন হাউজ থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার সামনে রয়েছে আরেকটি প্রাচীন ভবন জগবন্ধু সাহা হাউজ। এ বাড়ির বাসিন্দা কমলারানীর কাছ থেকে জানা যায় তার দাদা শ্বশুর জগবন্ধুসাহা তৈরি করেছিলেন এ প্রাসাদোপম বাড়ি।

বিশাল আকৃতির দ্বিতল এ বাড়ির নির্মাণশৈলী খুবই আকর্ষণীয়।
 
খেলারাম দাতার বাড়ি
খেলারাম দাতার বাড়ি
খেলারাম দাতার বাড়ি
কলাকোপা থেকে ছোট্ট একটি সড়ক চলে গেছে বান্দুরার দিকে। সেখানে গাছগাছালিতে ঢাকা ধ্বংসপ্রায় প্রাচীন বাড়ির নাম খেলারাম দাতার বাড়ি। খেলারামকে নিয়ে এ অঞ্চলে অনেক কাহিনী প্রচলিত আছে। যেমন, খেলারাম দাতা ছিলেন বিখ্যাত ডাকাত সর্দার।

তবে তার দানের হাত ছিল বেশ বড়। সে ডাকাতি করে গরিব-দুঃখীদের সাহায্য করত।
এই বাড়ি থেকে ইছামতির পার পর্যন্ত একটি সুড়ঙ্গ পথ ছিল। নদীপথে ধনসম্পদ এনে এ সুড়ঙ্গ পথেই বাড়িতে নিয়ে আসত খেলারাম দাতা। দোতলা বাড়ির নিচতলায় এখনও সুড়ঙ্গ পথের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।

নিচতলায় অনেকগুলো কক্ষ থাকলেও এখন প্রায় সবই আবর্জনা আর মাটিতে ঢেকে আছে। দোতলায় চারপাশে ও ৪ কোণে বাংলা ঘরের আকৃতিতে এক কক্ষ বিশিষ্ট ৮টি ঘর। মাঝে রয়েছে মঠ আকৃতির আরেকটি ঘর। লোকমুখে শোনা যায় এই ঘরে অনেক মূল্যবান মূর্তি ও ধনসম্পদ ছিল।
ব্রজ নিকেতন
বান্দুরা-দোহার সড়কের পাশেই রয়েছে প্রাচীন একটি বাড়ি।

দ্বিতল সুন্দর এ বাড়ির নাম ব্রজ নিকেতন। তবে হালে এ বাড়ি সবাই চিনেন জজ বাড়ি নামে। চোখ ধাঁধানো নির্মাণশৈলী দেখে  কিছুক্ষণের জন্য হলেও যেকোনো পথিকের পা থমকে যাবে।
ব্রজ নিকেতন নতুন বাড়ি
ব্রজ নিকেতন
নতুন বাড়ি
নতুন বাড়ি
জজবাড়ির লাগোয়া পুবে আরেকটি প্রাচীন বাড়ি। বিশাল পুকুরের সামনে সুপারি বাগানের মাঝে দ্বিতল এ বাড়ির নাম ‘নতুন বাড়ি’।

পুকুর পারে একটি বাংলো আকৃতির বাড়িও আছে।
জপমালা রানীর গীর্জা
জপমালা রানীর গীর্জা
জপমালা রানীর গির্জা
নবাবগঞ্জের কলাকোপা থেকে কিছুটা সামনে বান্দুরায় আছে প্রাচীন গির্জা। জপমালা রানীর গির্জা নামে খ্রীস্টান ধর্মাবলম্বীদের এ উপসনালয় সর্বপ্রথম নির্মিত হয় ১৭৭৭ সালে। পরে ১৮৮৮ ও ২০০২ সালে দুইবার এর সংস্কার করা হয়। গির্জার পাশেই রয়েছে খ্রীস্টানদের একটি কবরস্থান ও সেন্ট ইউফ্রেটিজ কনভেন্ট নামে সিস্টারদের একটি থাকার জায়গা।

একজন ফাদার ও একজন ডিকন পরিচালনা করেন এই গির্জার কার্যক্রম। বড়দিন, ইস্টার সানডে’তে এখানে বড় উৎসবের আয়োজন থাকে।
যেভাবে যাবেন
নিজস্ব পরিবহন নিয়ে যেতে পারলে নবাবগঞ্জের জায়গাগুলো বেড়ানো সহজ হবে। আর সে ব্যবস্থা না থাকলে যেতে পারেন বাসে। ঢাকার গুলিস্তান ও নয়াবাজার থেকে যমুনা, শিশির ও নবাবগঞ্জ পরিবহনের বাস চলাচল করে এই রুটে।

ভাড়া জনপ্রতি ৫০ টাকা। নবাগঞ্জ নেমে ব্যাটারি চালিত রিকশা নিয়ে ঘুরতে পারবেন জায়গাগুলো।
আলোকচিত্র: মুস্তাফিজ মামুন

সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।