সোনার হরিণ
[শাফিক আফতাব]
শীতে মারা যাক অশীতিপর বৃদ্ধ
দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধিতে নাভিশ্বাস উঠুক প্রান্তিক মানুষের
হাসপাতালের সফেদ বিছানায় কুঁকুড়ে মরুক বুলেটবিদ্ধলোক
বার্ন ইউনিটে জ্বলেপুড়ে মুরুক একমাত্র উপার্জনক্ষম যুবকের মা
কারখানাগুলো ঝিমোক বৃদ্ধ বলদের মতোন__
বাস ট্রেন ট্রাক টেক্সি আর অনাহারী মানুষগুলো ভীতপদে পা ফেলাক পথে, রাজপথে ;
আমলাগুলো আরামে কেদারায় পা তুলে অলস সময় কাটাক,
আর সোনার হরিণের জন্য মুষ্টিযুদ্ধ বাঁধুক নেতায় নেতায়, রাজনীতির রাজহাসেঁর ডিমের জন্য
অলক্ষ্যে চলুক সংলাপ,
আর আমজনতার যাপিত জীবন হোক ভীষণ বিপর্যস্ত।
একদিন আমরা নিজকে বুঝতে আর সুপ্তবৃত্তি বিকাশের জন্য বাল্যশিক্ষা হাতে নিয়েছিলাম
একদিন আমরা আমাদের চারপাশকে বোঝার জন্য স্কুলে গিয়েছিলাম
একদিন আমরা দেশটার সেবার জন্য নিজকে সপেঁছিলাম
একদিন আমরা আর্তমানতার সেবায় নিজকে উৎসর্গ করেছিলাম __
এখন আমরা কলাকৌশল খুজিঁ
আবালবৃদ্ধবণিতাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখাতে অভিনয় শিখি
এখন আমরা অনেকেই ক্ষমতার দাপট দেখাই
এখন আমরা সাহেব হয়ে চিনি না কুদ্দুসের মাকে
এখন আমরা ক্যাডার সার্ভিসে তুখোর ক্যাডার হয়ে উঠেছি।
রাজনীতির পরিচয়ে বড় ক্ষমতাশালী হয়ে উঠেছি।
লেখাপড়ার লক্ষ্য এখন সৃপ্তবৃত্তিবিকাশ নয়
চারপাশটাকে দেখা নয়
অনাহারির মুখে দুমুঠো ভাত দেয়া নয় , অন্যের অধিকারকে সম্মান করা নয়
এখন লেখাপড়া মানে অহঙ্কার, অর্থঅর্জন আর ক্ষমতার দাপটের ঝাঁঝ।
আন্ডারগ্রাউন্ডে অজস্র কাজ।
এখন লেখাপড়া মানে রাজনীতির লেজুড়বৃত্তি
কিংবা ক্ষমতাশালী আমলার ভীষণ দাপট
এখন লেখাপড়া মানে অন্যের অধিকার লুটে খাওয়া, ধোকা দেয়া
এখন লেখাপড়া মানে আয়েশ আর আরামের জন্য, বিলাস আর বিনোদনের জন্য ঘুষ, বিকল্পঅর্থঅর্জন
এখন লেখাপড়া মানে উদার প্রেম, পরকীয়া শয্যা, কথায় কর্মে বিস্তর ব্যবধান।
এখন লেখাপড়া মানে পক্ষপাতিত্ব
এখন লেখাপড়া মানে প্রকৃতিমানবকে হেয় করা,
এখন লেখাপড়া মানে সোনার হরিণ কিনতে যাওয়া।
দেশ গোল্লায় যাক__আমি বাঁচলে বাপের নাম
দেশ জ্বলে পুড় খাক হয়ে যাক__আমার তো আরাম
হরতালে অবরোধে জ্বলে যাক শস্য-পাট-পণ্য, বোমায় ঝঁলছে যাক শ্রমমানবীর পেলব হাত
অকালে প্রাণ দিক কাজের খোঁজে বেরিয় পডা রমিজ
খসে যাক নববর্ধর শেমিজ
আমি শুধু বাঁচতে চাই, ক্ষমতা চাই, অর্থ চাই
'যে যাই বলুক ভাই, আমার সোনার হরিণ চাই'।
০৭.১২.২০১৩
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।