আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হাঁপানি রোগ নিয়ন্ত্রণযোগ্য

সম্প্র্রতি প্রকাশিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট থেকে জানা যায়, বর্তমান বিশ্বে হাঁপানি রোগীর সংখ্যা প্রায় ২০ কোটির বেশি এবং প্রতিবছর বিশ্বে প্রায় ২৫ লাখ মানুষের মৃত্যু হয় এই রোগের কারণে। এর মধ্যে শিশুমৃত্যুর সংখ্যা ৪ লাখের মতো। অন্যদিকে একই রিপোর্টে প্রকাশিত হয় যে, বাংলাদেশে বর্তমানে হাঁপানি রোগীর সংখ্যা প্রায় এক কোটিরও বেশি। প্রতিবছর নতুন করে আরও প্রায় ৫০ হাজার লোক এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এবং মাত্র পাঁচ শতাংশ রোগী এই রোগের যথার্থ চিকিৎসা পাচ্ছে (দুই শতাংশ রোগী বিদেশে বা পার্শ্ববর্তী দেশে গিয়ে)। বাংলাদেশে এই রোগের চিকিৎসা ব্যবস্থা অপ্রতুল এবং চিকিৎসক কম হলেও আধুনিক চিকিৎসা যে নেই তা বলা যাবে না।

সরকারি হাসপাতাল এবং ব্যক্তি পর্যায়ে অনেক সংশ্লিষ্ট চিকিৎসা বিশেষজ্ঞের চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যেখানে সর্বাধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা বিদ্যমান। আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা থাকলেও মাত্র পাঁচ শতাংশ রোগী কেন চিকিৎসা পাচ্ছে? এর বড় কারণ রোগীদের অসচেতনতা , কুসংস্কার ইত্যাদি। অনেকেই রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসকের দ্বারস্থ হয় না। রোগের প্রাথমিক অবস্থায় যথাযথ চিকিৎসা নিলে সুস্থ হওয়া সম্ভব।

হাঁপানি রোগের প্রধান কারণগুলো : মাইট, মোল্ড, ফুলের রেণু বা পরাগ, ঠাণ্ডা এবং শুষ্ক আবহাওয়া, খাদ্যদ্রব্য, ঘরের ধুলো ময়লা, প্রাণীর পশম এবং চুল, ওষুধসহ কিছু রাসায়নিক দ্রব্যাদি বা দুর্গন্ধ।

প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা : রক্তের বিশেষ পরীক্ষা ও বুকের এঙ্-রে।

স্কিন প্রিক টেস্ট : এই পরীক্ষায় রোগীর চামড়ার ওপর বিভিন্ন অ্যালার্জেন দিয়ে পরীক্ষা করা হয় এবং এই পরীক্ষাতে কোনো কোনো জিনিসে রোগীর অ্যালার্জি আছে তা ধরা পড়ে।

স্পাইরোমেট্রি বা ফুসফুসের ক্ষমতা দেখা : ফুসফুসের অবস্থা সম্পর্কে সঠিক ধারণা করা যায়।

অ্যালার্জেন পরিহার : হাঁপানির হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার সবচেয়ে সহজ পন্থা হলো যে জিনিসে অ্যালার্জি তা যতদূর সম্ভব এড়িয়ে চলা।

তাই রোগীদের প্রথমেই অ্যালার্জি পরীক্ষা করে জানা দরকার কিসে কিসে অ্যালার্জি হয়। ওষুধ প্রয়োগ : নানা ধরনের হাঁপানির ওষুধ আছে। প্রয়োজন মতো ওষুধ ব্যবহার করে রোগী সুস্থ থাকতে পারেন।

অ্যালার্জি ভ্যাকসিন বা ইমুনোথেরাপি : অ্যালার্জি দ্রব্যাদি এড়িয়ে চলা ও ওষুধের পাশাপাশি ভ্যাকসিনও হাঁপানি রোগীদের সুস্থ থাকার অন্যতম চিকিৎসা পদ্ধতি। বিশ্বের অধিকাংশ দেশে, বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোতে এ পদ্ধতিতে চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে।

বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এই ভ্যাকসিন পদ্ধতির চিকিৎসাকে অ্যালার্জিজনিত হাঁপানি রোগের অন্যতম চিকিৎসা বলে অভিহিত করেন। এটাই হাঁপানি রোগীদের দীর্ঘমেয়াদি সুস্থ থাকার একমাত্র চিকিৎসা পদ্ধতি। আগে ধারণা ছিল হাঁপানি একবার হলে আর সারে না। কিন্তু বর্তমানে চিকিৎসা ব্যবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। প্রথম দিকে ধরা পড়লে এলার্জিজনিত হাঁপানি রোগ একেবারে সারিয়ে তোলা সম্ভব।

অবহেলা করলে নিরাময় করা কঠিন। বর্তমানে অ্যালার্জিজনিত হাঁপানি রোগের মাইট প্রুফ কভার, ফিল্টার মাঙ্ ও ভ্যাকসিনসহ উন্নত চিকিৎসা দেশেই হচ্ছে।

ডা. গোবিন্দ চন্দ্র দাস, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা।

ফোন : ০১৭২১৮৬৮৬০৬, ০১৮৪৩৭০৮৯৪৫।

 

 



সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/index.php     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.