শান্ত-সৌম্য চেহারা, শ্মশ্রুমণ্ডিত। চোখে চশমা। তাঁকে ক্রিকেটারের চেয়ে সাধু-সন্ত হিসেবেই বেশি মানায়। আচার-আচরণেও ওই সাধু-সন্ন্যাসীদেরই প্রতিনিধি তিনি। হাশিম আমলার কথাই বলা হচ্ছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার এই ব্যাটসম্যান যে ইতিমধ্যেই ‘গ্রেট’দের কাতারে নাম লেখাতে চলেছেন, সেটা মনে করিয়ে দিতেই নাকি লজ্জায় লাল হয়েছেন তিনি। পরশু ডারবানে ভারতকে ১৩৪ রানের পরাজয়ের লজ্জায় ডোবানোর অন্যতম হাতিয়ার ছিলেন তিনি। নিজের দ্বাদশ ওয়ানডে সেঞ্চুরিটি করে তিনিই ভারতকে লজ্জায় ফেলার শুরুটা করেছিলেন। কিন্তু ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে আমলার সঙ্গে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথোপকথনটি যেন হলো ধর্মালোচনা। কোনো অর্জনই যেন আমলাকে ছুঁয়ে যায় না।
মননে-হূদয়ে এতটাই বিনয়ী তিনি! কিংসমিডে বড় জয় আর নিজের অসাধারণ ব্যাটিংয়ের পরও যেন আমলা অবিচল নিজের মধ্যে। বলেছেন, ‘যা করেছি, তা তো নিজের দায়িত্ব ভেবেই করেছি। ’
সেদিনের সেঞ্চুরিটিতে আমলা ছাড়িয়ে গেছেন স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডসকে। মাত্র ৮১টি ম্যাচ খেলে তিনি পূর্ণ করেছেন চার হাজার ওয়ানডে রান। ক্যারিবীয় গ্রেট রিচার্ডসের এই মাইলফলক পার হতে ৮৮টি ম্যাচ লেগেছে—এই তথ্যে যেন অসম্ভব বিব্রত আমলা, ‘কী বলছেন, আমি খুবই বিব্রত বোধ করছি।
আমি স্যার রিচার্ডসকে ছাড়িয়ে গেছি! তিনি তো সর্বকালের সেরাদের একজন। ’
টেস্ট ও ওয়ানডে—দুই ফরম্যাটেই আমলার গড় ৫০ ছাড়িয়েছে। গ্রেট ক্রিকেটার হওয়ার পথে প্রায় সবকিছুই করা সারা তাঁর। কিন্তু তাতেও যেন রা নেই তাঁর। এসব গ্রেট-ফ্রেট তাঁর অভিধানে নেই, ‘দেখুন, আমি কেবল আমার কাজ করে যাচ্ছি, আমার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি।
এর বেশি কিছু না। ’
ভারতীয় বোলিংকেই ছত্রখান করেছেন। কিন্তু তাঁর নিজের কোনো অসম্মান বা তাচ্ছিল্য নেই ভারতীয় বোলিং আক্রমণের প্রতি, ‘ভারতীয় বোলিংকে হেলাফেলা করার সাহস আমার নেই। কারও বাজে দিন আসতেই পারে। ’
হালে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের অ্যাশেজ সিরিজে যেন গালির মহোত্সব বসেছে।
স্লেজিং কী তাহলে ক্রিকেটের অংশ হতে চলেছে, আমলা উদাহরণ টেনেছেন চলমান দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারতের মধ্যকার ওয়ানডে সিরিজের, ‘দারুণ বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে এ সিরিজটি হচ্ছে। ক্রিকেটীয় স্পিরিটের পুরোপুরি বলবত্ এই সিরিজে। দুটো দলই একে অন্যের সামর্থ্যের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেই মাঠে নেমেছে। এটাই তো ক্রিকেটের স্পিরিট। ’
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।