'পাকিস্তান' নামটা এবং দেশটা কখনোই আমার পছন্দ ছিল না। ছোটবেলায় খেলাতেও কেউ এই দেশ সাপোর্ট করলে মুক্তিযুদ্ধ এনে তর্ক করতাম। ওরা আনত ধর্ম। আমি নাকি আনতাম রাজনীতি। পরে বড় হয়ে পাকিস্তান বিদ্বেষ এতটা তীব্র ছিল না।
কিন্তু পছন্দ কখনোই হয় নাই। অনেকেই(পাকিস্তান প্রেমিকেরা) বলত যারা এখন আছে, তাঁরা তো আর বাংলাদেশের খারাপ চায় না। যারা অন্যায় করেছিল তাঁরা তো আর এখন নাই। এই যুক্তি আমি কখনোই মেনে নেইনি। কারণ প্রত্যেকটা মানুষ তাঁর নিজের, নিজের পরিবারের, নিজের দেশের প্রতিনিধি।
তাঁকে নিজের জন্য, পরিবারের জন্য এবং দেশের জন্য জবাবদিহি করতে হবে। এই যুক্তির পরেও কিছুটা মনে নরম ভাব চলে এসেছিল। আগে যতটা ঘৃণা করতাম বড় হয়ে ততটা করতাম না। মানুষের বয়স বাড়লে মানুষ আর নিজের সিদ্ধান্তের উপর অটল থাকতে পারে না। আদর্শ থেকে কিছুটা হলেও সরে আসে।
রক্তে ‘গোয়ারগোবিন্দ’ ভাবটা থাকে না। আমারও ছিল না। কিন্তু আজকে যখন দেখলাম যে যেই একটা মানুষকে আমি পাকিস্তানী সত্ত্বেও পছন্দ করতাম। ইমরান খান। সে কিনা বলছে কাদের মোল্লা নির্দোষ।
তাও কিসের ভিত্তিতে!! কোন এক মানবাধিকারকর্মীর কথার উপর ভিত্তি করে? এরপর দেখা গেল তাঁরা নিন্দা প্রস্তাব পাস করায়। (কত বড় সাহস!!) পাকিস্তান পিপলস পার্টি ছাড়া সবাই সেটায় সমর্থনও করে!!! আমার মনে পাকিস্তানের প্রতি আর কোন নরম ভাব রইল না। আর আসবেও না। পাকিস্তান জাতি হিসেবে নির্লজ্জ ছিল এবং থাকবে। এই দায়ভার তাঁদের সকল সৎ নারী-পুরুষদেরও বহন করতে হবে।
তাঁদের দোষ এই যে তাঁরা পাকিস্তানী। আর কিছু না। আমি ভাবতে চাইতাম যে ৭১ এ সেনাবাহিনীরা এরকম বর্বর ছিল। সাধারণ মানুষরা জানতো না। কিন্তু এখন তো ওঁদের গনতান্ত্রিক রাষ্ট্র।
কোন নির্লজ্জ মুখে ওরা বলে যে “বাংলাদেশের উচিত হবে না ৪২ বছর আগের পুরোনো ক্ষতকে নতুন করে জাগিয়ে তোলা। “ কত বেশী ধৃষ্টতা থাকলে তাঁরা এই কথা বলতে পারার মত সাহস রাখে। এতটুকু খারাপ লাগা, এতটুকু আন্তরিক দুঃখ যদি তাঁরা পেত তাহলে কী তাঁরা এই কথা বলতে পারে!! বাংলাদেশী যারা এখনো পাকিস্তানের ভালোবাসায় মূর্ছা যাচ্ছেন তাঁদেরকে বলি যে মূর্ছাটা পাকিস্তানে গিয়েই যান।
পাকিস্তানের কাছে বাংলাদেশের একটা আনুষ্ঠানিক ক্ষমা প্রার্থনা প্রাপ্য। বাংলাদেশ পাকিস্তানকে আদৌ ক্ষমা করবে কী না!! তা পরে বিবেচ্য।
কিন্তু তাঁরা তা না করে যে নির্লজ্জপনা আর বেহায়াপনার নজির স্থাপন করছে তাঁর বিরুদ্ধে আমি ধিক্কার জানাই। আমি লজ্জিত যে আমার ভিতরে কখনো এই জাতির প্রতি কিছুটা হলেও নম্রতা কাজ করেছিল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।