অলসদের দিয়ে কী আর হয়। আলসেমি ছাড়া!
আজ বিশ্ব অভিবাসী দিবসে, বাংলাদেশের প্রায় এককোটি অভিবাসীকে জানাই আমার অভিবাদন।
পরভূমে, কষ্টে, আক্ষেপে এবং কখনো কখনো মানবেতর জীবন যাপন করে আপনি আপনার এই ছোট্টদেশটির প্রতি ভালবাসা, দরদ প্রকাশ করে যাচ্ছেন। আপনাদের পাঠানো রেমিট্যান্স আমাদের এই স্বদেশভূমির জিডিপির ১৩ শতাংশ। এমনকি সেটা বিদেশী বিনিয়োগের ১২গুনও বটে।
বিদেশী বিনিয়োগের কথা এজন্য বললাম যে, অনেক বিনিযোগকারী তিনলাখ ডলার বিনিয়োগ করবে বলে বিওআইতে রেজিস্ট্রেশন করে এবং মাত্র পাঁচ হাজার ডলার বিনিয়োগ করে এয়ারপোর্টে ভিআইপির মর্যাদা পান।
আর আপনি যখন দেশে আসেন তখন কাস্টম, পুলিশ কিংবা ক্যাব ড্রাইভার সবাই ভাবে "আদম" পেয়েছে। কিছু খসানো যাক।
তারপরও আপনি এই দেশকে ভালবাসেন। দেশের টানে, নাড়ির টানে আপনার উপার্জিত টাকা দেশে পাঠান, সেটি টাকায় নয়, ডলারে।
সেই ডলারে আমরা মহা আনন্দে নতুন গাড়ি কিনি!
ভাবি না, আপনাকে কেমন করে একটা বিনিয়োগের রাস্তা দেখাবো, কেমন করে আপনার অবসর জীবনটি সুন্দর আর আনন্দময় হবে। ভাবি না বলে আপনার কস্টার্জিত টাকার বেশিরভাগ চলে যায় দালালদের পকেটে, দাম বাড়ায় জমির। অথচ আপনার পাঠানো টাকার সামান্য অংশের সদ্বব্যবহারে গড়ে উঠতে পারে এমন কোন ইনস্টিটিউশন যা আগামীর অভিবাসী বলবে কী করলে আরো বেশি আয় করা যাবে, জানাবে কেবল কাজ জানলেই হয় না, সার্টিফিকেটটাও জরুরী।
আপনার হয়তো মনে আছে, বিদেশে পাড়ি জমানোর আগে আপনি আপনার বাড়ির পুকুরটিকে একটি খামার বানাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মাত্র ৫০ হাজার টাকার জন্য সেটি পারেন নি।
কিন্তু যেদন জানালেন মধ্যপ্রাচ্যে যাবেন সেদিন অনেকেই আপনাকে তিন লক্ষটাকা যোগাড় করে দিয়েছিল। এলাকার বন্ধু বান্ধব আর পিতা-মাতাকে বাড়িতে রেকে আপনি যেতে চাননি। মনোবেদনা মনে রেখেই আপনি গিয়েছিন। গিয়েছেন বলেই বাড়ি আসার সাতদিন আগে এক লহমায় ৫০ হাজার টাকার বাজার করতে পেরেছেন!
হয়তো আপনারই মতো আপনার কোন ছোট ভাই তার বাড়ির পুকুরটাকে খামার বানাতে চাই, নিজের এলাকায় গড়ে তুলতে চায় একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র যেখানে সূচীকর্ম করবে গ্রামের মেয়েরা, তাদের বানানো নকশী কাঁথা যাবে ইউরোপে। আপনি ইচ্ছে করলে এবার তার পাশে দাড়াতে পারেন।
তার মাধ্যমে পূরণ করতে পারেন আপনার সেই না পাওয়ার বেদনা।
আমি জানি, এবারও এয়ারপোর্টে আপনাকে হয়রানি করা হয়েছে, আপনার কাছ থেকে ডলার নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তারপরও আপনি আবার দেশে আসবেন, এই ছোট্ট সুন্দর দেশটাকে ভালবাসবেন।
কারণ আপনি জানেন - নিজর কাজটা সর্বোত্তমভাবেই করাটা প্রকৃত দেমপ্রেম।
প্রিয় অভিবাসী,
আমাদের ক্ষমা করবেন।
আপনাদের যোগ্য সম্মান আমরা দিতে জানি না। দেওয়ার চেস্টাও করি না।
তবে, আমি জানি, একদিন না একদিন আমরা এই সম্মানের কাজটি শিখতে পারবো। মহান সৃষ্টিকর্তা নিশ্চয়ই আমাদের সেই পথ দেখাবেন।
বিশ্ব অভিবাসী দিবসে আপনাদের জানাই আমার অভিবাদন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।