আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রযুক্তির সালতামামি ০২

বর্ণমালা শেখা থেকে শুরু করে যোগাযোগ, কেনাকাটা সবই করা যাচ্ছে অনলাইনে। ঘর থেকে বের হতে গাড়ি প্রয়োজন! গাড়িই খুঁজে নেবে আপনাকে যদি আপনার স্মার্টফোনে ইনস্টল করা থাকে লিফ্ট অ্যাপলিকেশন। বছরজুড়ে এ রকম আলোচিত শীর্ষ ১০ স্টার্টআপের তালিকা প্রকাশ করেছে টাইম ম্যাগাজিন। শীর্ষ ১০-এ থাকা আলোচিত অ্যাপ্লিকেশনগুলো নিয়ে এবারের প্রতিবেদন।
১০. ডুলিংগো
অনলাইনে বিনামূল্যে শিক্ষাব্যবস্থার এ যুগে সামষ্টিক অর্থনীতি থেকে কম্পিউটার কোডিং সবই শেখা যাচ্ছে ঘরে বসে।

যারা ঘরে বসে বিদেশি ভাষা শিখতে চান তাদের জন্য ওয়েলকাম এডিশন নিয়ে এসেছে ডুলিংগো। এ সাইট থেকে আপনি ছয়টি বিদেশি ভাষা শিখতে পারবেন। মাসে ৫০ লাখ ভাষাশিক্ষার্থী এ ওয়েবসাইটের সাহায্যে বিদেশি ভাষা শিখছে। ডুলিংগো ডেভেলপ কোর্সের মাধ্যমে লেখাকে অনুবাদ করে আপনি নিজেই সহজে বিদেশি ভাষাকে রপ্ত করতে পারবেন। এ প্রকল্পে ডুলিংগোর সঙ্গে যোগ দিয়েছে বাজফিড কোম্পানি।

কোনো ফি ছাড়াই ইংরেজি, জার্মান, ইতালিয়ান, পর্তুগিজ, স্প্যানিশ ও ফ্রেঞ্জ ভাষা শেখাচ্ছে ভাষা শেখার এ ওয়েবসাইট।
৯. প্যাট্রিয়ন
কিকস্টার্টারের মাধ্যমে অর্থসংস্থান করতে যেসব প্রতিষ্ঠান ব্যাপক সাড়া পেয়েছিল প্যাট্রিয়ন তার মধ্যে একটি। এ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে শিল্পীদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়। ইউটিউবে যেসব আর্টিস্ট ভিডিও রিলিজ করেন তাদের নিয়মিত পেমেন্ট দেয় প্যাট্রিয়ন। ২০১৩ সালে যাত্রা শুরু করা এ ওয়েবসাইটটি কমপক্ষে ২১ লাখ মার্কিন ডলার ভেনচার ফান্ডিংয়ের ব্যবস্থা করেছে।


৮. বিয়ন্ড মিট
বিশ্বব্যাপী খাদ্য সরবরাহেও রয়েছে প্রযুক্তির ছোঁয়া। এ ধরনের অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান থাকলেও বিয়ন্ড মিট বিশ্বজুড়ে খ্যাতি অর্জন করেছে। মটর ও সয়াবিন মিক্স করে তারা তৈরি করেছে ফউক্স-চিকেন। খাবারটি খেতে মনে হবে আপনি মুরগির মাংস দিয়ে তৈরি কোনো খাবার খাচ্ছেন। খাবারটি তৈরিতে মুরগির খুব একটা প্রয়োজন হয় না।

এ জন্য খামারিদের উপর বেশি মুরগি উৎপাদনের চাপ কমতে শুরু করেছে। ভবিষ্যতে বিশ্বজুড়ে এটি মানুষের জন্য অতিপ্রয়োজনীয় খাদ্যের উৎস হিসেবে বিবেচিত হবে।


৭. পিবল
কিকস্টার্টারের মাধ্যমে অর্থ জোগাড় করতে গিয়ে আগের রেকর্ডগুলোকে ছাড়িয়ে গেছে পিবল। ২০১২ সালে এ প্রকল্পের জন্য অর্থ জোগাড় করতে গেলে ৩৭ দিনে এক কোটি ডলারেরও বেশি অনুদান আসে পিবলের জন্য।
স্মার্টওয়াচ সরবরাহের জন্য তারা অর্থায়ন শুরু করলেও বেশ কিছু কারণে নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু করতে পারেনি তারা।

২০১৩ সালে পিবল আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করে। পিবল অনলাইনে কেনাবেচার ওয়েবসাইট বেস্ট বাইয়ের মতো ক্রেতাদের খুচরা পণ্য সরবরাহ করে। এ পর্যন্ত দুই লাখ ৫০ হাজার পিবল ওয়াচ বিক্রি করেছে তারা।
৬. আপওয়ার্থি
২০১২ সালের মার্চে যাত্রা শুরু করে আপওয়ার্থি। এটা মূলত নিউজ সাইট।

বিনোদন, সেলিব্রেটি গসিপ নিয়ে সংবাদ ও ভিডিও প্রকাশ করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে এ ওয়েবসাইট। সেপ্টেম্বরে এ ওয়েবসাইটে ইউনিক ভিজিটরের সংখ্যা ছিল তিন কোটি ৮০ লাখ।
৫. লিফট
কোথাও যেতে ট্যাক্সি প্রয়োজন? ব্যবহার করুন লিফট অ্যাপ্লিকেশন। এটা মূলত রাইড-শেয়ারিং প্রোগ্রাম। মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে জানা যাবে নিকটবর্তী কোথায় ট্যাক্সি আছে।

অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে ট্যাক্সি ডাকলে ঘরের দুয়ারে চলে আসবে ট্যাক্সি। এ জন্য রাস্তায় গিয়ে অপেক্ষার দরকার নেই। এটা ব্ল্যাক কার সার্ভিস ‘উবার’ এর লো-কস্ট ভার্সন। মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে যখন তখন প্রয়োজনে গাড়ি ডাকতে অ্যাপলিকেশনটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
২০১২ সালে লিফ্ট যাত্রা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রানসিসকো শহরে।

মে মাসে কিকস্টার্টারের মাধ্যমে এ প্রকল্পের জন্য ছয় কোটি ডলার সংগ্রহ করা হয়।
অগাস্ট নাগাদ লিফট অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে ১০ লাখের বেশি মানুষ পরিবহন সেবা গ্রহণ করেছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ১৮টি শহরে এ সেবা বর্ধিত করা হয়েছে। তবে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে প্রতিযোগিতা। একই ধরনের রাইড শেয়ারিং অ্যাপস বনিয়েছে উবার এবং সাইডকার নামের দুটি প্রতিষ্ঠান।


৪. টিনডার
টাইম-অনার্ড বাইনারি স্কেলে কাজ করে হুক-আপ অ্যাপ্লিকেশন টিনডার। ব্যবহারকারীর সঙ্গে এলাকার অন্যান্য টিনডার ব্যবহারকারীদের ছবি শেয়ার করে জানা হয়, তিনি তাকে চেনেন কি না। সেখানে আপ অর ডাউন ভোট দিয়ে চ্যাট করা যায় নতুন কিংবা পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে। দুজন টিনডার ব্যবহারকারী পরষ্পরের ছবি চিনতে পারলে তারা একজন আরেকজনের সঙ্গে চ্যাট করতে পারেন।
এ প্রযুক্তি এখন পাত্রপাত্রী খুঁজতেও ব্যবহার হচ্ছে।

অ্যাপ্লিকেশনটির নির্মাতারা জানিয়েছেন, টিনডার-এর মাধ্যমে মানুষের মাঝে বিভিন্ন সম্পর্ক তৈরির কাজ চালানো হবে। এছাড়া ব্যবসায়ীদের জন্যও টিনডার বিজনেস নেটওয়ার্কিং চালুর কথা রয়েছে।
৩. লিপ মোশন
এক দশক আগে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, কম্পিউটার একসময় মানুষের বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি বুঝতে পারবে। সে প্রযুক্তি এখন হাতের নাগালে। লিপ মোশন ৮০ ডলারে সে প্রযুক্তি পৌঁছে দিচ্ছে একেবারে বাড়িতে।

লিপ মোশন কোম্পানি ম্যাক ও পার্সোনাল কম্পিউটারের জন্য দুটি আলাদা ভার্সন চালু করেছে। এতে ব্যবহারকারীর হাত ভার্চুয়াল মাউসের মতো কাজ করে। এতে হাতের বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গিতে ভিডিও গেইম খেলাসহ ক্লিক, ড্র্যাগ এবং ড্রপ করে নিয়ন্ত্রণ করা যায় পার্সোনাল কম্পিউটার। এ জন্য কম্পিউটার চালাতে আলাদা মাউস ব্যবহার না করলেও চলে।  
২০১০ সালে এ প্রতিষ্ঠান যাত্রা শুরু করে।

এ বছর হিউলেট-প্যাকার্ডের একটি কনজিউমার ল্যাপটপে এ প্রযুক্তিতে আরও নতুন ফিচার যুক্ত করা হয়েছে।  
২. কয়েনবেইজ
সারাবছরই ছিল ডিজিটাল কারেন্সি বিট কয়েন নিয়ে আলোচনা। আবার বিটকয়েনের দাম ওঠানামাও ছিল লক্ষণীয়। এপ্রিলে প্রতিটি বিটকয়েনের দাম ছিল ২৬৫ ডলার। নভেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৯০০ ডলারে।

বিটকয়েন নিয়ে অবৈধ ব্যবসায়ের জন্য ড্রাগ ওয়েবসাইট সিল্ক রোডের কাছ থেকে দুই কোটি ৮৫ লাখ ডলার মূল্যমানের বিটকয়েন আটক করে এফবিআই।
জরুরি প্রয়োজনে মানুষকে সহায়তার জন্য বিটকয়েন ব্যবহার শুরু হলেও, বিভিন্ন দোকানে কেনাকাটায় ভার্চুয়াল মুদ্রা হিসেবে এর প্রচলন শুরু হয়। এছাড়া বিটকয়েন ব্যবসার প্রতি মানুষের ঝুঁকেপড়া ছিল লক্ষনীয়। অনেক নামকরা ব্যবসায়ী বিটকয়েন কেনা ও জমা রাখতে শুরু করেন। এদিকে ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ শুরু করেন বিটকয়েনে বিভিন্ন পণ্য কেনাবেচা।

এ বছর ১৩ হাজার ব্যবসায়ী বিটকয়েনের মাধ্যমে বাণিজ্য সম্পাদন করেন বলে জানিয়েছে টাইম ম্যাগাজিন।
স্টার্টআপের মাধ্যমে বিটকয়েনের জন্য ৬০ লাখ ডলার অনুদান সংগ্রহ করা হয়। স্যান ফ্র্যানসিসকোতে কয়েনবেইজ ডটকমের (বিটকয়েন) প্রধান কার্যালয় অবস্থিত।


১ স্ন্যাপচ্যাট
স্ন্যাপচ্যাটের জনপ্রিয়তা এতটাই বেশি যে কিছুদিন আগে সোশাল নেটওয়াকিং সাইট ফেইসবুক প্রতিষ্ঠানটির মালিকানা কিনে নিতে চেয়েছিল। এ অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে কোনো বন্ধুকে ছবি পাঠানোর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে তা আপনি আপনি অদৃশ্য হয়ে যায়।


এ নিয়ে অর্থনীতিবিষয়ক পত্রিকা ব্লুমবার্গ বিজনেস উইকে বের হয় প্রচ্ছদ প্রতিবেদন।
নেতিবাচক ব্যবহারের কারণে অ্যাপ্লিকেশনটি নিয়ে বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ে অভিভাবকদের মাঝে। এ নিয়ে অভিযোগে বলা হয়, টিনএজরা স্ন্যাপচ্যাট অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে বন্ধুদের সঙ্গে অশ্লীল ছবি আদান-প্রদান করে।
এদিকে, নভেম্বরে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইভান স্পাইজেল অ্যাপ্লিকেশনটি বিক্রিতে ফেইসবুককে অনাগ্রহ দেখান। যদিও ফেইসবুক অ্যাপ্লিকেশনটি কিনতে ৩০০ কোটি ডলার দেওয়ার অফার করেছে।


সোর্স: http://bangla.bdnews24.com     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.