রেস্টুরেন্ট এ গেছেন খাবার খেতে। সেখানে যেয়ে দেখলেন সেখানকার ওয়েটার বাদর। সে পরিবশেন করছে খাবার। ভাবলেই খাবার খাবেন না দৌড় দিবেন? হ্যাঁ এমন ঘটনা ঘটেছে জাপানের একটি রেস্টুরেন্টে। তারা মানুষের পরিবর্তে বানরকে নিজেদের রেস্টুরেন্টের ওয়েটার হিসেবে নিয়োগ দিচ্ছে।
তবে রেস্টুরেন্টে আগত গ্রাহকরা যেন ভড়কে না যান সেজন্য বানরগুলোর মুখে মানুষের মুখের আদলে মুখোশ পড়ানো হয়। অদ্ভুত কিন্তু সত্য!
জাপানের টোকিওর উত্তরে উতসোনোমিয়ার মিওকিহোনচোর কায়াবুকিতে এই রেস্টুরেন্টটি অবস্থিত। যে কোন গ্রাহক এ রেস্টুরেন্টে এসে খাবার টেবিলে বসলেই চমকে যাবেন। কারণ কিছুক্ষণ পরেই খাবারের অর্ডার নিতে আসবে দুটি বানর, যাদের একটির নাম ইয়াত-চ্যান, অন্যটির নাম ফুকু-চ্যান। এর মাঝে ইয়াত-চ্যানের বয়স ১৬ বছর ও সে ফুকুর চেয়ে বড়।
ইয়াত নামের বানরটি বেশ দ্রুত গতিতে রেস্টুরেন্টে আসা অতিথিদের দেয়া পানীয়ের অর্ডার সংগ্রহ করে। আর ফুকু-চ্যানের কাজ হচ্ছে খাবারের আগে গ্রাহকদেরকে গরম তোয়ালে সরবরাহ করা ও হাত ধোয়ার সময় তাদেরকে সহযোগিতা করা। এটা জাপানী রীতি। আর বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বানর দুটিকে কাজ করার অনুমতিপত্রও প্রদান করেছেন। আর রেস্টুরেন্টে আসা মানুষরা এ বানর দুটিকে খুব পছন্দ করেন।
টিপ হিসেবে এদেরকে দেয়া হয় সয়াবিন। রেস্টুরেন্টের একজন নিয়মিত গ্রাহক তাকাইয়োশি সোয়েনো বলেন, অনেক বাজে মানুষের চেয়ে এই বানরগুলোই ভালো এবং তারা ওয়েটার হিসেবেও দক্ষ।
বানর দুটির মালিক কাওরু ওৎসুকা। তিনি নিজের বাড়িতে বানর দুটি পুষতেন। কাওরু দেখলেন ইয়াত-চ্যান নামের বানরটি রেস্টুরেন্টের বিভিন্ন কাজ খুব মনোযোগ দিয়ে খেয়াল করছে ও কিছু কিছু কাজ নিজেই করছে।
তখন কাওরু বুঝলেন, বানরটি আসলেই রেস্টুরেন্টে কাজ করতে সক্ষম। একদিন কাওরু ইয়াত-চ্যানকে একটি তোয়ালে দিয়ে দেখলেন সে সেটা গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দিতে পারে কিনা। বলাই বাহুল্য ইয়াত-চ্যান সে কাজটি বেশ ভালভাবেই সম্পন্ন করে। অনেক গ্রাহকের কাছেই এই বানর দুটি একদম শিশুদের মতোই, তারা এদেরকে পছন্দ করে।
৬২ বছর বয়স্ক শিওচি ইয়ানো বলেন, মানুষের চেয়ে এই বানর দুটি ভালো।
আমার ছেলে আমার কথা শোনে না, কিন্তু এ বানরগুলো শোনে। শুধু তাই নয়, রেস্টুরেন্টে আসা গ্রাহকরা যে পানীয়ের অর্ডারই দেন, ইয়াত-চ্যান সেটা ঠিকভাবে মনে রাখতে পারে ও সে অনুযায়ী সেটা যার যার টেবিলে পৌঁছে দেয়।
জাপানের প্রাণী অধিকার সংরক্ষণ আইনের অধীনে এই বানরগুলোকে দিনে মাত্র দুই ঘণ্টা কাজ করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। কিন্তু কাওরু ইতোমধ্যে আরো বানর ওয়েটার নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছেন ও তিনটি বানরকে একাজের জন্য তৈরি করে তুলছেন।
।অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।