উত্তরা, গাবতলী, যাত্রাবাড়ী, কেরানীগঞ্জসহ রাজধানীতে প্রবেশের সবগুলো পথেই পুলিশ ও র্যর্যাবের সতর্ক প্রহরায় দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ব্যক্তিগত গাড়ি, রিকশা ও অটোরিকশার মতো যানবাহনেও চালানো হচ্ছে তল্লাশি।
সোমবার সকাল থেকে সদরঘাটে কোনো লঞ্চ ভেড়েনি, ছেড়েও যায়নি। বুড়িগঙ্গায় খেয়া নৌকা পারাপারও বন্ধ।
বিআইডব্লিউটিএর ট্রাফিক পরিদর্শক সৈয়দ মহফুজুর রহমান জানান, রোববার সারা দিনে ঢাকা থেকে ১০টি লঞ্চ বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যায়, আর সদরঘাটে পৌঁছায় একটি লঞ্চ।
বিরোধী দলের কর্মসূচিকে ঘিরে ট্রেন চলাচলও শনিবার থেকেই অনিয়মিত হয়ে পড়েছে।
সোমবারও রাজধানীতে নগরপরিবহনের বাস চলাচল এক প্রকার বন্ধ রয়েছে। তবে অটোরিকশা ও টেম্পো চলাচল আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। বিভিন্ন মোড়ে কর্মজীবী মানুষকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে যানবাহনের আশায়।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঘিরে ফকিরাপুল থেকে কাকরাইল পর্যন্ত সড়কে আগের দিনের মতোই রয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা।
দুই দিকে পুলিশের ব্যারিকেড থাকায় ওই সড়কে সাধারণ যানবাহন চলাচল করছে না। সন্দেহ হলেই চলছে তল্লাশি।
বিএনপি কার্যালয়ের কাছেই প্রস্তুত রাখা হয়েছে পুলিশের রায়ট কার, জল কামান।
নয়া পল্টন ছাড়াও নগরীর প্রতিটি মোড়ে আইন শৃংখলাবাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থান রয়েছে।
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বাড়ির সামনেও পুলিশের নিশ্ছিদ্র অবস্থান বহাল রাখা হয়েছে।
মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান বলেন, মানুষের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে সব ধরনের ব্যবস্থাই পুলিশ নিয়েছে।
নির্বাচন ঠেকাতে ‘ঢাকামুখী অভিযাত্রার’ পর রোববার নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে খালেদা জিয়ার সমাবেশ করার কথা থাকলেও পুলিশের বাধায় তিনি বাসা থেকেই বের হতে পারেননি।
নয়া পল্টনে সারা দিন বিএনপি বা ১৮ দলীয় জোটের কোনো তৎপরতাও দেখা যায়নি।
বিএনপির কার্যালয়ের সামনের সড়কের দুই পাশের উঁচু ভবনগুলোতেও আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়ে আছেন। ওই সড়কের অধিকাংশ দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শনিবার রাত থেকেই বন্ধ।
রোববার বিএনপি-জামায়াতপন্থী আইনজীবীদের একটি মিছিল সুপ্রিম কোর্ট থেকে প্রেসক্লাবের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পরে সরকার সমর্থকরা গেইট খুলে ভেতরে ঢুকে পড়ে এবং বিএনপি সমর্থক কয়েকজন পিটুনির শিকার হন।
আর প্রেসক্লাবে বিএনপি-জামায়াত সমর্থক সাংবাদিক ও পেশাজীবীদের এক অনুষ্ঠানের মধ্যেই আওয়ামী লীগ কর্মীদের সঙ্গে ব্যাপক ঢিল ছোড়াছুড়ি হয়। ভেতরেও বিএনপি ও আওয়ামী লীগপন্থী সাংবাদিকরা সংঘর্ষে জড়ান।
জামায়তকর্মীরা মিছিল নিয়ে নয়া পল্টনের দিকে এগোনোর সময় মালিবাগে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়।
এ সময় এক শিবিরকর্মীর মৃত্যু হয়।
নিজের বাড়ির ফটকে প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষার পরও বের হতে না পেরে রোববার বিকালে ক্ষুব্ধ কণ্ঠে কর্মসূচি অব্যাহত রাখার কথা জানিয়ে বাসায় ফিরে যান বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া।
তিনি বলেন, “গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। … আজ না হয় কাল, কাল না হয় পরশু কর্মসূচি চলবে। ”
পরে সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সহসভাপতি হাফিজউদ্দিন আহমেদ বলেন, “পুলিশি বাধায় নয়া পল্টনে গণতন্ত্রের অভিযাত্রার যে সমাবেশটি হয়নি, তা সোমবার হবে।
সকাল ১০টায় এই সমাবেশের কার্যক্রম শুরু হবে। এতে নেতৃত্ব দেবেন বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া। ”
সারাদেশে নির্বাচন পর্যন্ত রাজপথ-রেলপথ-নৌপথে অবস্থান কর্মসূচি চলবে বলেও তিনি ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে বের হওয়ার পরপরই হাফিজকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।