ঠাকুরগাঁওয়ে কনকনে শীতের মধ্যেই সদর হাসপাতালের ওয়ার্ডের মেঝেতে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। যারা ওয়ার্ডের মেঝেতেও জায়গা পায়নি, তারা ঠাঁই নিয়েছেন হাসপাতালের বারান্দায়।
হাসপাতালের নবজাতক ও শিশু বিভাগের চিকিৎসক শাহজাহান নেওয়াজ বলেন, শয্যা না থাকায় শিশু ওয়ার্ডে ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টের রোগীদেরও বারান্দায় থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অথচ ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টের রোগীদের প্রচুর গরম প্রয়োজন। উল্টো যখন ওই সব শিশুকে বারান্দার মেঝেতে থাকতে দেওয়া হচ্ছে, তখন খুব খারাপ লাগে।
হাসপাতালের শিশু ও নবজাতক ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, ৩৬টি শয্যার বিপরীতে ভর্তি আছে ১১৬টি শিশু। এদের মধ্যে ৪৬ জন ডায়রিয়া ও ৩৮ জন শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত। অধিকাংশ শিশুই ছিল ওয়ার্ডের মেঝে ও বারান্দায় পাতা বিছানায়। বারান্দায় বিছানা পেতে ১০ মাস বয়সী সুজনকে শ্বাসকষ্টের চিকিৎসা করাচ্ছেন পঞ্চগড়ের আটোয়ারি উপজেলার বলরামপুর গ্রামের কৃষক আবদুল হাইয়ের স্ত্রী রোকেয়া বেগম। তিনি জানান, বাইরের ক্লিনিকে চিকিৎসা করানোর মতো টাকা তাদের নেই।
নিরুপায় হয়ে প্রচণ্ড ঠাণ্ডার মধ্যেও শিশুটিকে নিয়ে বারান্দায় আশ্রয় নিয়েছেন।
জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার মধুপুর গ্রামের জোগেশ নাথ বলেন, তার নয় মাস বয়সী ছেলের ডায়রিয়া হয়েছে। দুই দিন ধরে হাসপাতালের বারান্দায় থেকে চিকিৎসা করাচ্ছেন। রাতে ঝিরঝির ঠাণ্ডা বাতাস অনেক সময় কাবু করে দেয়। তখন বাড়তি কম্বল দিয়ে ছেলের শরীর ঢেকে দেন।
সদর উপজেলার সিন্দুনা গ্রামের আবদুল বারেক তিন দিন ধরে মেয়ে অর্পণাকে নিয়ে ওয়ার্ডের বারান্দায় বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি বলেন, 'স্যারলাক (হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ) কয়ে মোক একখান সিট নিয়ে দিবে এমন লোক মুই কুনঠে পাম। শীতে কষ্ট লাগিলে আর কী করিবেন? তবুও হাসপাতালে থাকিবা হবে। ' হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও ঠাকুরগাঁওয়ের সিভিল সার্জন আফজাল হোসেন তরফদার বলেন, '১৯৯৭ সালে হাসপাতালটি ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও আগের জনবল ও অবকাঠামো দিয়েই কার্যক্রম চলছে। শুধু শিশু ওয়ার্ডে নয়, সব ওয়ার্ডেই প্রতিদিন ধারণক্ষমতার দ্বিগুণের বেশি রোগী ভর্তি হয়।
এখন হাসপাতালে ২৩৭ জন রোগী রয়েছেন। অতিরিক্তদের মেঝেতেই চিকিৎসা হচ্ছে। '
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।