সুপ্রিমকোর্ট এলাকায় গতকাল বিএনপি-জামায়াতপন্থি আইনজীবীদের সঙ্গে যুব মহিলা লীগের কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইট, জুতা ছোড়াছুড়ি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় লাঠিসোঁটা নিয়ে কৃষক লীগ ও মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের দুটি মিছিল মহিলা লীগের মিছিলের সঙ্গে যোগ দিলে সরকারবিরোধী আইনজীবীরা পিছু হটেন। এদিকে যুব মহিলা লীগ দাবি করেছে, জাতীয়তাবাদী আইনজীবীদের হামলায় তাদের অর্ধ শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বিএনপি-জামায়াতপন্থি আইনজীবীরা রবিবার সুপ্রিমকোর্ট এলাকায় হামলার প্রতিবাদে সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে দিতে সুপ্রিমকোর্টের প্রধান ফটকের সামনে গিয়ে হাজির হন। মূল ফটকটি আগে থেকে রশি দিয়ে বন্ধ করে রাখা ছিল। আইনজীবীরা ফটকের ভেতরে থেকে বিক্ষোভ করছিলেন। এ সময় সরকারদলীয় এমপি নাজমা আক্তার ও অপু উকিলের নেতৃত্বে আওয়ামী যুব মহিলা লীগের একটি মিছিল রাস্তা অতিক্রম করছিল। মিছিল থেকে আইনজীবীদের লক্ষ্য করে যুব মহিলা লীগের কর্মীরা জুতা উঁচিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় জাতীয়তাবাদী আইনজীবীদের মধ্য থেকে একজন যুব মহিলা লীগের কর্মীদের লক্ষ্য করে ইট ছুড়ে মারেন। যুব মহিলা লীগের কর্মীরা তখন প্রতিপক্ষকে লক্ষ্য করে জুতা ছোড়েন। এ পরিস্থিতি চলতে থাকে অনেক ক্ষণ ধরে। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন কৃষক লীগ ও মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে ওই এলাকায় যুব মহিলা লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগ দেন। তারা প্রধান ফটক দিয়ে ঢুকে ভেতরে যেতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশের বাধা ডিঙিয়েও সরকার সমর্থকরা জাতীয়তাবাদী আইনজীবীদের ওপর হামলা চালায়। সরকার সমর্থকদের হামলার মুখে টিকতে না পেরে আইনজীবীরা বার ভবনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। এদিকে সারা দেশে বিরোধী দলের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন আওয়ামী সমর্থক আইনজীবীরাও। অন্যদিকে আদালত প্রাঙ্গণে রবিবার সরকার সমর্থকদের হামলা ও অগি্নসংযোগের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি। আর ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল। যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার দাবি করেছেন, বিএনপি-জামায়াতপন্থি আইনজীবীদের হামলায় তাদের অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।
আদালতের পবিত্রতা নষ্টের অভিযোগ : সাড়ে ১২টার দিকে অ্যাডভোকেট আবদুল বাসেত মজুমদারের নেতৃত্বে মিছিল বের করেন সরকার সমর্থক আইনজীবীরা। মিছিলটি সুপ্রিমকোর্টের প্রধান গেট হয়ে আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে আবদুল বাসেত মজুমদার বলেন, আদালত অঙ্গনে বাইরের কিছু নামধারী আইনজীবী ও সন্ত্রাসীদের নিয়ে মিছিল ও তাণ্ডব চালানো হয়েছে। আদালতের পবিত্রতা নষ্ট করে এভাবে আর কোনো মিছিল মিটিং চলতে দেওয়া হবে না। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মস্থান গোপালগঞ্জের নাম পরিবর্তন করে খালেদা জিয়া দেশকে পাকিস্তান বানাতে চান। সমাবেশে অ্যাডভোকেট রবিউল আলম বুদু, আজহারুল্লাহ ভূঁইয়া, শ ম রেজাউল করিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি খন্দকার মাহবুবের : সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণ ও আইনজীবীদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। বিকালে বার কাউন্সিল মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় সুপ্রিমকোর্ট বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী উপস্থিত ছিলেন। খন্দকার মাহবুব সুপ্রিমকোর্ট ও আইনজীবীদের ওপর হামলার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানান।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।