আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছন্নছাড়া ভুলগুলো ছিনিয়ে নেয় ফসল এবার জাগো চেতনা




আওয়ামিলীগ নিজেদের কুলিন মনে করে। তারা সবার উপরে তারা যা করবে তাতে কোন ভুল নাই। তাদের সব কিছু নির্ভুল। তারাই দেশের স্বাধীনতার মুখ্য দল। দেশ স্বাধীন হওয়ার জন্য তাদের অবদান সর্বোচ্চ।

কিন্তু বিষয়টা এভাবে না ভেবে যদি ভাবা যায়। সময়টা এমন হয়ে পড়েছিল যে স্বাধীনতা ছাড়া আর কোন পথ ছিল না। সাত কোটি মানুষের অল্প কিছু পাকিস্থান পন্থি মানুষ বাদে সবার মনে পাকিস্থানের সাথে থাকা আর চলবে না এমন একটা মনোভাব জন্মে ছিল। তাও বাঙালিরা নিজেরা কোন লড়াই বাঁধায় নাই। প্রতিবাদ করে যাচ্ছিল শুধু।

কিন্তু র্নিবিচারে সব বাঙালি নিধন করে শুধু সুজলা সুফলা ভূমিটাকে নিয়ে নেয়ার ইচ্ছাটা বাঙালি জান দিয়ে লড়ে রুখে দিয়েছে পাকিদের সাথে স্বদেশীর অনেকের বিরোধীতার মধ্যেও নয়মাসের যুদ্ধে। মায়ের সম্মান বাঁচাতে কোন দল হিসাব করে নয় সবাই মাথা উঁচিয়ে দাঁড়িয়েছে ১৯৭১এ আপামর জন সাধারন। সাত কোটি মানুষের সাপোর্ট সে সময় শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে ছিল। অবশ্যই পাকিস্থানপন্থি দল বাদে। বেশীর ভাগ জনগনই আসলে কোন দল করে না।

তবে সময় মতন দেশের কল্যাণে তারা সার্পোট দেয় ন্যায়ের পক্ষে।
আওয়ামিলীগ সেই সময়ে নির্বাচিত বড় দল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নেতা। কিন্তু আওয়ামিলীগের ভিতরে যেমন তাজউদ্দিন আহমেদের মতন নেতা ছিলেন তেমন ছিলেন খন্দকার মোস্তাক আহমদের মতন নেতারা। তাই আওয়ামিলীগ মানেই পুত পবিত্র কুলিন ব্রাক্ষ্মণ এমন ধারনা নিয়ে যদি আজ পর্যন্ত আওয়ামিলীগের নেতারা বড়াই করেন তবে বড় বেশী ভুল করা হয় এই ২০১৩ তে।

সময়টা সদ্য স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশ নয়। ৪২ বছর পেরিয়ে গেছে। স্বাধীনতা মানেই আওয়ামী কৃতিত্ব এটাও অনেকে মানতে চান না। এটা রাজনৈতিক রেষারেষি। তার উপর দুঃশ্চরিত্রের আওয়ামী নেতাদের জোড় জুলুমের চিত্রটা অস্বীকার করা যায় না।

যখন এমন মানুষের দ্বারা ভুগান্তি ঘটে তখন পুরো দলের উপর অভক্তি হয়ে যায়। আত্মিয় স্বজন সমেত। আবার অন্য পক্ষে নেতাদের আত্মিয় স্বজন পাড়া প্রতিবেশীও অনেক সময় মামার তালইর ছেলের শালা সম্পর্কেও ক্ষমতাবান হয়ে উঠে। রাজনীতির বলয় থেকে এই স্বার্থপর ক্ষমতা লোভীদের দূরে রাখতে পারলে অনেকটা উপকার পাওয়া যেত। কলঙ্ক মোচন হতো দলের।


এটা এক ধরনের ট্রেড মার্ক হয়ে গেছে। ক্ষমতায় থাকলে জোড় দখল চাঁদাবাজি, ভোগ দখল করবে নেতারা সাথে সাঙ্গ পাঙ্গরাও। এই ওপেন সির্কেট সবাই জানে। আর নিরীহ বাঙালি নিরবে তা মেনে নেয়। ওরা নেতা ওরা কিছু খাবেই তো, এমন ভেবে।

এই ধরনের একেবারেই ভণ্ড বদ যে ধারনা চেপে আছে এখন পর্যন্ত। যা একদমই সঠিক নয় তা আজ অনেকের কাছে পরিষ্কার ঝকঝকে ফর্সা। তবে কেউ এখনও এই ধারনায় নেতা হন আর জনগণ তাদের নেতা বানায়ও। হয়তো বা সামান্য একচিমটি সাময়িক মধু খাওয়ার লোভে। এই ভুল ধারনা সাধারন জনসাধারনের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।

এবং সচেতন করে তুলতে হবে আম জনগনকে। নিজের স্বার্থে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা মানুষকে পয়সার লোভে যেন ভোট না দেয় নির্বাচিত না করে।
বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র দল আওয়ামিলীগ বলা যায়। পাশে আরো অনেক দল যদিও ছিল। ভাষানী ন্যাপ, ছাত্র ইউনিয়ন তার মাঝে উল্লেখ যোগ্য।

কালক্রমে সব বিলুপ্তি হয়ে গেছে বা একের মধ্যে অপরে মিলে মিশে গেছে। যদিও নামে গন্ধে এখনও আছে কিন্তু আগের গমগম রমরমা ভাবে নেই। আরো নতুন দল গজিয়েছে। তবে জনসাধারনের জন্য কাজ নয়। নিজেদের বিশেষ কেউ কেটা প্রমাণ আর ভোগ দখলটা সবাই এক ভাবে করে যাচ্ছে রাজকীও হাল হকিকতে।

কেউ আসে নাই শুধু সাধারণ মানুষের জন্য, তাদের কথা বলার জন্য। এর ভিতর ছিটে ফোঁটা কিছু ভালো মানুষ সব দলের ভিতর আছে। তারা নিজ দলেই কোনঠাসা থাকে সততার জন্য।
জমিদারী থেকে ব্রিটিশ তোষন থেকে গ্রাম্য মোড়লি প্রক্রিয়ার বাঙলির স্বভাব অনেক বদলে গেছে। পুরানো বিশ্বাস এঁটে মানুষের উপর ক্ষমতার জোড় খাটানোর অবস্থা আর নাই।

সময় বদলে গেছে নতুন জোয়ারে। প্রাচীন এবং সদ্য গজানো একই অনুভূতির নেতারা তা মানুক আর নাই মানুক। যদিও ক্ষমতার জোড়ে নিরীহদের উপর অত্যাচার ভোগ দখল চলছে। ইদানিং আবার নারীদের গনহারে ধর্ষনও যোগ হয়েছে রাজনৈতিক ক্ষমতা দেখানোর র্নিলজ্জ নেশার মতন।
ক্ষমতা দখলিকরনের প্রার্দূভাব নতুন প্রজন্ম এই মান্ধাতা চিন্তা থেকে অনেকটাই বেড়িয়ে এসেছে।

মানুষ সত্যিকারের স্বাধীন চিন্তা নিয়ে বাঁচতে চায়, মুক্ত জীবনে নিজের মতন চলতে চায়। এখনকার মানুষ রাজনীতি নিয়ে খুব পরওয়া করে না। একটা সময় শুনতাম এই প্রজন্ম বলছে হেইট পলিটিক্স। কারণ তারা এই নোংরামি পছন্দ করে না। ছোট থেকে বড় হতে হতে,এই দুই বড় দলের কাঁদা ছুঁড়াছুড়ির অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে রাজনীতি থেকে দূরে থাকার পণ করেছে নতুন প্রজন্ম।

তবে তারা অনেক বেশী সচেতন। অনেক বেশী জ্ঞানী। তারা বোঝে দেশে যে দুই দলের রাজনীতির খেলা চলছে এটা অনেকটা ক্ষমতার দাপট। কিন্তু যা দরকার ছিল জনগনের একটা দল তৈরী করা। এই রাজনীতি ঘৃণা করা নতুন প্রজন্ম, তেমন কিছুর দিকে যায় নাই।

আবারও অবশ্যই সচেতন যারা। অধিকাংশ মানুষই জানে না কে এলো কে গেল কার কী নীতি। তবে বিশাল কথা বার্তায় চায়ের কাপে ঝড় তুলতে পারে অনেকে জেনে না জেনে। ফলে রাজনৈতিক অঙ্গন দখল করে আছে ক্ষমতা লোভী, সুবিধাবাদীরাই বেশীর ভাগ। এরমাঝে ছিটে ফোঁটা দুচারজন ভালো মানুষ আছে রাজনীতিতে বিচ্ছিন্ন ভাবে।

যারা তেমন কোন সুবিধা করতে পারে নাই।
তাই বলে এই প্রজন্ম দেশের ক্রান্তি লগ্নে সমস্যা নিয়ে তারা ঠিক পথটি দেখার চেষ্টা করে। কিন্তু তারা লোভী নয় ক্ষমতা দখল করতে চায় না। এটা একটা সমস্যা এখনের সময়ে। তারা ভাবছে দুই মহান দল আছে তারা দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে গনতন্ত্রের ধারায়।

কিন্তু সে ধারনা ঠিক নয়। যুদ্ধ পরবর্তি সময়ে। আওমিলীগের নেতারা সবটাই তাদের মনে করে অনেক জমিদারের মতন ব্যবহার শুরু করলে প্রতিবাদে জাসদ নামে বাম পন্থী নতুন দল তৈরী হয় আওমিলীগ ভেঙ্গে সিরাজুল আলম খান, মেজর জলিলের নেতৃতে । খ্যাতিমান চার খলিফাও এই দলে চলে আসেন।
অনেকবার সেনা উত্থানের মাঝ দিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কে সপরিবারে হত্যা করা হয়।

স্বাধীন হওয়ার চার বছরের মাথায়। ভুল ছিল দেশ পরিচালনায় ভুল ছিল বেশী উদার হওয়ার। তবে যত যাই হোক চার নেতাকে জেলে নেয়ার বিষয়টা আমার কখনই পছন্দের না। যারা এক তীব্র সংকটময় সময়ে তীর হারা উত্তাল সাগরে তরঙ্গের সাথে মোকাবেলা করতে হাল ধরেছিলেন। অন্ধকারে পথ খুঁজে আলোর দিশা তুলে এনেছিলেন।

তাদের বীরের সম্মানে সম্মানিত করে না রেখে। জেলে পাঠিয়ে দেয়া অন্যায় ছিল। কিছু মানুষকে সম্মান দিতে হয়। মাথায় করে রাখতে হয়। প্রতিষ্ঠা
করতে হয় মর্যাদার সাথে।

তা না করাটা ছিল সময়ের প্রতি অবিচার। সেই সাথে আমার একটাই ধারনা যদি ঐ কাণ্ডারীরা বঙ্গবন্ধুর চারপাশে থাকতেন হয়ত আজকের এই ইতিহাস রচিত হতো না।
সদ্য স্বাধীনতা পাওয়া দেশে কোন কিছুই সঠিক ভাবে যাচ্ছিল না। স্থির হয়ে বসার অবস্থাই তৈরী হচ্ছে না। কেবল অস্থিরতা।

সবাই যখন আশা করে ছিল যুদ্ধ এবং তার আগের আন্দোলনের সময় নয়, দেশ স্বাধীন হয়েছে এখন সুন্দর এবং সুস্থ সময়ে বসবাস। তখন সময়টা ছিল ছটফটে অস্থিরতার কখন কি হয় কেউ জানে না। যে কোন সময় একটা পরিবর্তন। আর্মি ক্যু হয়ে যেতে পারে। কোন দিক থেকে কী আঘাত আসবে কে কী করবে এমন আশংকা অস্থিরতায় মানুষ দিন কাটাচ্ছিল।

ভিতরে অপেক্ষা ছিল পরিবর্তন হোক। সদ্য স্বাধীনতা পাওয়া দেশটা সুন্দর ভাবে এগিয়ে যাক। সাধারন মানুষ সেই বাহাত্তর সন থেকে আজ পর্যন্ত একই আশা করে যাচ্ছে।
স্বাধীনতা বিরোধীদের চক্রান্ত চলছিল ক্রমাগত ভিতরে ভিতরে গোপনে। প্রতিটি ঘটনার মধ্যে দিয়ে আজ এতদিন পরে যা বোঝা যায় সুস্পষ্ট।

সেই সময়ে তা অনুধাবন করা সহজ ছিল না।
একে একে নিহত এবং হারাতে থাকে ইতিহাসের অনেক সাক্ষী নানান রকম চক্রান্তে মৃত্যু বরণ করে কেবল মুক্তি যুদ্ধের পক্ষের লোক। নানান ঘটনার উত্থান পতনের মধ্য দিয়ে নাম শুনা যায় মেজর জিয়া নামের একজনের। সেই সময়ে সেনাঘাটি থেকে কখন কী ঘটে মানুষ বরাবর উৎকণ্ঠিত থাকত। তো মেজর জিয়া নাকি অনেক জনপ্রিয় সিপাহীদের মধ্যে।

সিপাহীরা তাকে আটক অবস্থা থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। ৭৫ থেকে ৭৭ এই সময়ে অনেক নেতৃত্বর ঘন ঘন পরিবর্তন হতে থাকে । হঠাৎ সিপাহীদের কাঁধে ভর করে উঠে আসা মেজর ধীরে ধীরে বেশ জাঁকিয়ে বসতে শুরু করেন। এসময়ে খালেদ মোশারফ নামের একজন মুক্তিযোদ্ধা রাজপথে মিছিল করার সময় গাড়ি চাপা পরে তিনি নিহত হন। খুব আশ্চর্যজনক ভাবে।

সুপরিকল্পিত খুন কী ভাবে রাজপথে ঘটানো যায় তা এখন জনগন অনুধাবন করে হয়তো কিন্তু তখন মানুষ দূর্ঘটনা ভেবে নিয়েছে।
মেজর জিয়া কিছুদিন পর এক অদ্ভুত নির্বাচনের আয়োজন করেন। নির্বাচনের নাম হ্যাঁ না। আর কোন দল নয় ব্যাক্তি নয় এক মাত্র তিনি ভোটে দাঁড়াবেন আর হ্যাঁ বা না বলে তাকে নির্বাচন করা হবে। আবেগ প্রবন বাঙালি এই মানুষের প্রেমে পরে গেছে ততদিনে।

তিনি কালো চশমায় চোখ ঢেকে সাধারন কৃষকের সাথে খাল কাটেন। ব্রিলিয়ান্ট ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে নৌবিহারে যান। গ্রামের মানুষটির খুব কাছে মাটিতে বসে আপনজনের মতন কথা বলেন। বাংলার মানুষ হ্যাঁ বাক্সে ভোট দিয়ে তাকে নেতা বানিয়ে দিল। বাংলাদেশের ভাগ্য তার ঘাড়ে ন্যস্ত করে দিল।

তিনি আপন মনে নিজ প্রয়োজনে ইতিহাস বদল করতে থাকেন। সেক্টর কমান্ডার জেড ফোর্সের প্রধান মুক্তিযোদ্ধা হয়েও তিনি বিভিন্ন পদ থেকে মুক্তি যোদ্ধাদের অপসারন করে দেশ দ্রোহী রাজাকার প্রতিষ্ঠায় মনোনিবেশ করেন।
আওয়ামিলীগের ঘাড়ের উপর দিয়ে তিনি নিজের একটি দল গঠন করে ফেলেন। আওয়ামিলীগরা কোন প্রতিবাদ করতে পারে না। সব কিছুই দাবীয়ে রেখে একক গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা চলতে থাকে দেশে সেই সময়।

বিপ্লবী দল জাসদও তাকে থামাতে পারে না। গনতন্ত্রের নতুন প্রক্রিয়া শুরু করেন তিনি অন্যদলের মুখ চেপে রেখে। তার কালো চশমায় ঢাকা চোখের ভিতরে কী দূরভিসন্ধী তা সাধারন মানুষ ধরতে পারে না। তারা তার সাধারন চলা ফেরায় মুগ্ধ হয়। তার ভালোবাসায় তার নবগঠিত দলে, দলে দলে যোগদান করে।

আবেগ প্রবণ বাঙালি দুচারজন সচেতন নাগরিকের কথাবার্তা সতর্কতা না শুনে ভেসে যায় নতুনের স্রোতে। একটি অশুভ মিথ্যার উপর ভিত্তি করা দল ঠাঁই করে নেয় বাংলায় বাঙালির আবেগ প্রবনতার আর কিছু সুযোগ সন্ধানীর সুযোগ নেয়ার পথ বেয়ে।
তিনি যখন একজন পঙ্গু মুক্তি যোদ্ধা কর্নেল তাহের কে ফাঁসী দেন তখন মানুষের মনে খটকা লাগে।
সাধারান মানুষ তার স্ত্রীকে দেখতে চায় কিন্তু তিনি তার স্ত্রীকে কোথাও নিয়ে যান না। পাবলিক প্লেসে।

তিনি নাকি যুদ্ধ শেষে তার স্ত্রীকে নিয়ে আর ঘর করতে চাননি। কারন তিনি যুদ্ধের সময স্বামীর কাছে না গিয়ে পাকিস্তানী আর্মিদের সাথে থেকেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তখন তাকে স্ত্রী কে তালাক না দিয়ে তার সাথে ঘর করতে বলেন। বোঝা যায় তিনি বঙ্গবন্ধুর আদেশ মেনে স্ত্রীর সাথে ঘর করলেও তার উপর নাখোস ছিলেন। তাই স্ত্রীকে সাথে করে কোথাও যেতে হয়তো উনার বাধো বাধো ঠেকত।


কালো চশমায় ঢাকা চোখের চাহুনী কতটা ক্রড়ো ছিল তা বাংলাদেশী কখনো দেখেনি। কিন্তু তারা আঁচ করতে শুরু করে যখন তিনি বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত নাগরিকত্বহীন রাজাকার গোলাম আযমকে দেশে নিয়ে এসে নাগরিকত্ব প্রদান করেন। বিভিন্ন পদ থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের অপসারণ আর রাজাকারদের উচ্চপদাসনে প্রতিষ্ঠিত করতে থাকেন। ইতিহাস কাউকেই ছাড়ে না। তাকেও জীবন দিতে হয় চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে গুলিতে ঝাঝরা হয়ে।

একের পর এক তার হাতে মৃতের আত্মা তাকেও তাদের মাঝে টেনে নেয়।

তার রচিত বি এন পি, দলটিতে এমন যুক্তি বুদ্ধিওয়ালা লোক ছিল যারা যে লোক তার স্ত্রীকে কখনো মর্যাদা দেয়নি। সেই মর্য়াদাহীন মহিলাকে নিয়ে এসে তার দলের প্রধান বানায়। সেখানে ডাক্তার ব্যরিস্টারসহ অনেক শিক্ষিত লোক ছিলেন কিন্তু একজন অশিক্ষিত স্কুল পাশ না করা মহিলার অধীন হতে তারা ইচ্ছুক হন। গৃহবধুকে কী যোগ্যতায় মনোনয়ন করে দল প্রধান বানায় দলের লোকরা, এসব বোদগম্য হয়না! ঐসব একাডেমিক শিক্ষিত লোকদের অশিক্ষিত ভাবতে আমার এতটুকু বাঁধছেনা।

যারা আজ দেশের মানুষকে একজন অযোগ্য মহিলার হাতে নিঃসপেশিত হওয়ার অবস্থার জন্য দায়ী। কি ভয়াবহ কারণে কিছু মুক্তিযোদ্ধরাও ঐ দলে যোগ দেন এবং এখন যখন খালেদা জিয়া নামের তাদের নেত্রী সরাসরি রাজাকারদের পক্ষ অবলম্বন করে চলেছেন। তখনও তারা পক্ষ অবলম্বন করছে বিএনপির । তাদের মুক্তিযুদ্ধ করা এবং চিন্তার স্বচ্ছোতায় বিশাল প্রশ্ন জাগে।
দেশের হিসাব নিকাশ পারিবারিক তন্ত্র না।

দেশ চালাবে সে যার দেশ সম্পর্কে যথেষ্ট ধারনা আছে আইন শৃঙ্খলা, নিয়ম নীতি সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত। নিয়ম নীতি জানা শিক্ষিত মানুষ। কিন্তু আমরা এমন এক সোনার দেশের মানুষ আর আমাদের এমন র্দূভাগ্য যে অনেক স্বপ্ন সাধের স্বাধীন দেশে আমাদের পরাধীনের মতন জীবন যাপন করতে হয়। নিজের মনে করে খোলা হাওয়া খেতে গেলেও আমাদের কখন জানি কী হয় এই অতংকে শংকিত থাকতে হয়। আমরা একজন পতিত গৃহবধুকে পারিবারিক সুত্রে নেতা হিসাবে পেয়ে যাই।

আর বাংলার মানুষ তা মেনে তার অধিনে রাজনৈতিক অজ্ঞতার অঙ্গনে বিচরণ করতে থাকেন। খুশী মনে বারবার তাকে নির্বাচন করেন। এখনও দেশের অধিকাংশ মানুষ অজ্ঞতার ঘোর অন্ধকারে থেকে এই সব দলের পক্ষ অবলম্বন করে।
জাসদ নামের যে দলটি আওয়ামিলীগ ভেঙ্গে বেড়িয়ে আসে টগবগে তাজা তরুণ প্রাণ বিপ্লবের সন্ধানে, বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র কায়েমের সন্ধানে, রক্ষি বাহিনীর হাতে হাজার হাজার সমাজতন্ত্রে উজ্জবিত তরুণ প্রাণ নিহত হয় বলে কথিত আছে। দল যখন রক্ত ঢেলে দিয়ে রজপথ রাঙ্গিয়ে দিচ্ছে, মায়ের কোল খালি হচ্ছে।

এর মাঝে তাদের দুই বৈজ্ঞানিক নেতা নিজের দায় দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান এক এক করে। সিরাজুল আলম খান যার রহস্য ভরা চরিত্র এখনও রহস্যময়। তিনি নিজেকে সব বিপ্লবের দায় থেকে গুটিয়ে নেন। আর মেজর এম এ জলিল তিনিও হঠাৎ বিজ্ঞান ছেড়ে ইসলামে দীক্ষা নেন। ধর্মের টুপির আড়ালে তার লম্বা চুল ঢেকে যায়।

অপর দিকে চার খলিফা সবাই নিজেদের মধ্যে সমোঝতায় এক না থাকতে পেরে ভাগ হতে থাকেন। জাসদ ভেঙ্গে বাসদ, বাসদ ভেঙ্গে আরো দুটো দল। এভাবে একজন নেতা আর অনেকগুলো দল বাংলাদেশের খাতায় শোভা পেতে থাকে অনেক রাজনৈতিক দলের নাম। মাঝে মাঝেই তারা আবার এর ওর সাথে মিলে মিশে এক হয়ে যান। আবার বেড়িয়ে নতুন দল করেন।

হিসাব আদর্শ মিলে না বলে। নীতির দ্বন্দ্বে অথবা ব্যক্তিগত স্বার্থে।
স্বাধীনতা পরবর্তি একমাত্র বড় বিরোধী দল জাসদের ভাঙ্গাভাঙ্গির মাঝে জিয়ার বি এনপি মাথা তুলে দাঁড়াতে থাকে সুকৌশলে অন্যদের দমিয়ে রেখে। একটি অশুভ মিথ্যার উপর ভিত্তি করা দল ঠাঁই করে নেয় বাংলায়।
জিয়ার মৃত্যু পরবর্তি আশির দশকে বিএনপির প্রেসিডেন্ট আব্দুস সাত্তারের কাছ থেকে সেনা ছাউনীর এক মুরগী খামার করার অভিলাষ সমৃদ্ধ জেনারেল লেজে হোম এরশাদ দেশের মানুষের খামার করার অভিলাষের অভিপ্রায়ে ক্ষমতার গদি ছিনিয়ে নেয় জিয়ার দলের থেকে।


জাসদ, বাসদ, বিএনপি, আওয়ামিলীগসহ সব দল মিলে ছিনিয়ে নিল ছিনিয়ে নিল চিৎকারে হোম কে স্বৈরাচারী আখ্যা দিয়ে তাকে গদি থেকে তাড়াতে ব্যাস্ত হলো।
র্নিবিচারে পাখির মতন মানুষ মেরে আর প্রেম করে তিনি দশ বছর তার শাসন আমল বিস্তার করেন। সাথে গামবুটের সুরে গান ও কবিতা লিখে আরো একটি দলের নাম লেখায় বাংলাদেশের খাতায় জাতীয় পার্টি নামে। জিয়ার প্রথিত পথে ইসলামের কায়েমে রাজাকারদের প্রতিষ্ঠার সুযোগ দিয়ে। বাংলাদেশের জনগণ পায় র্ফাষ্ট লেডি রওশন এরশাদকে।

যিনি দেশের সব কিছুই তার নিজের সম্পত্তি মনে করে সব কিছুতেই ভাগ নিতে থাকেন। হয়ে উঠেন বিপুল বিত্ত বৈভবের অধিকারী। সে সময়ের ফিলিপিনের মার্কসের স্ত্রী ইমেলদা মার্কোসের মতন তিনি বাংলাদেশের ইমেলদা রওশন। অবশেষে জনগণের আন্দোলনের কাছে নতী শিকার করে ক্ষমতা হস্তান্তর করে দেন নিরপেক্ষ সরকারের কাছে হোম এরশাদ।
শুরু হলো আরেক নিরপেক্ষ সরকারের খেলা।

এই এরশাদ যখন পাঁচ বছর পরে নির্বাচনের আয়োজন করে, তখন স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন ভেঙ্গে শেখ হাসিনা নির্বাচনে চলে যান। তিনি হয়ত ভেবেছিলেন জনগণ আওয়মিলীগ কে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে ফেলবে। কারণ আওয়ামিলীগ স্বাধীনতার পক্ষের দল। গৃহ বঞ্চিত আওয়ামিলীগ কে তাদের গৃহে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে। কিন্তু জনগণ তাকে নির্বচিত করল না।

জনগন আন্দোলন ছেড়ে স্বৈরাচারীর সাথে নির্বাচনে যাওয়াটা সুনজরে নিল না হয়তো। স্বৈরাচারীর সাথে আঁতাতকারী হিসাবে তাকে দেখল। উপরন্ত স্বৈরাচারীর দল জাতীয় পার্টি পাকাপোক্ত করতে সহায়তা দিল আওয়ামিলীগ। আর নিজের অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ দোদুল্যমান হয়ে গেলো হাসিনার। যার ফলে নব্বইয়ের সফল আন্দোলনের পর আওমিলীগের শেখ হাসিনা নির্বাচনে জয়ি হতে পারলেন না।

ফসল চলে গেলো বেহাতে নীল নকশা অনুযায়ী।
বরঞ্চ গৃহবধু বিএনপির নেত্রী এরশাদের সাথে নির্বাচনে না গিয়ে আন্দোলনের সাথে রয়ে গিয়ে নিজের অবস্থানটা পাকা করে নিলেন দলে এবং দেশের জনগণের মাঝে। বি এনপির কাছ থেকে ছিনিযে নেয়া স্বৈরশাসকের সাথে নির্বাচনে না যাওয়াটায় গৃহবধুকে আপোষহীন নেত্রীর পর্যায়ে নিয়ে গিয়ে প্রায় রাজনীতিবীদ বানিয়ে দেয়।
হোম এরশাদের স্বৈরশাসনের পতনে নব্বইয়ের শতস্ফূর্ত বিজয়ে জনগণ দারুণ খুশি হয়েছিল। এবার দেশ সত্যিকারের মুক্তি পেলো এবং স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা পেলো।

জনগন আন্দোলনের ফসল খুশি মনে তুলে দিল আঁকাবাঁকা পথে আসা খালেদা জিয়ার বিএনপিকে। আবেগ প্রবণ বাঙালী বুক ভরে নিঃশ্বাস নিল। বি এনপির জন্ম ইতিহাস মনে না রেখে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলো দেশে এই ধারনায় নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে গেল।
খালেদা জিয়া জিতে দেশের প্রধানমন্ত্রী হলে ভেবেছিলাম। এই মহিলার আর কী চাওয়ার রইল।

এত ভাগ্য হবে দেশের প্রধানমন্ত্রীত্ব পাওয়ার সে নিজেই কল্পনা করেনি হয়তো কোন দিন। কিন্তু মানুষের লোভ বড় খারাপ জিনিস। লোভের জিভ তাকে এখন রক্তের নেশায় মাতিয়ে তুলেছে। দেশের প্রধানমন্ত্রীত্ব তিন বার পেয়েও দেশ চালনা বা মানুষের প্রতি মমত্ব কি জিনিস তা শেখা হয়নি। বা ইচ্ছে জাগে না দেশের রাজনীতি থেকে সরে সাধারন জীবন যাপন করার।

হবেই বা কেমন করে সে তো নীজেই নীল নকশার মাফিয়াদের হাতে জিম্মি এখন। তার চার পাশে সাপরা পাহারায় আছে এর বাইরে আসবে কী ভাবে। যেমনে নাচাচ্ছে তেমন নাচচ্ছে। ইতমধ্যে তার পুত্ররা বড় হয়ে রাজনীতির রাজপরিবারের বংশধর হওয়ার স্বপ্নে বিভোর হতে শুরু করে, দেশের দায় ভাড় নিজের কাধে তুলে নিয়ে সব কিছুই নিজেদের নামে জমাতে শুরু করে, নিয়ম নীতি লেখতে থাকে ভবিষ্যত যুবরাজাদ্বয়।
একটু ভুল অনেক দূরে নিয়ে গেল দেশের স্বাধীনতার অস্তিত্ব।

জিয়ার পেতে দেয়া পথে। এরশাদের সাজানো অট্টালিকায় গর্তে লুকিয়ে থাকা জামাতি রাজাকাররা ততদিন বেশ গুছিয়ে বসেছে। স্বাধীনতা বিরোধীরা স্বাধীন দেশের পতাকা গাড়িতে লাগিয়ে ঘুরে বেড়াতে লাগল হোমর সহায়তায়। হাসিনার অনভিজ্ঞ রাজনৈতিক প্রজ্ঞায়। খালেদার আঁচলের আড়ালে থেকে।


অসহায় মুক্তিযুদ্ধের মানুষ অসহায় স্বাধীনতার পক্ষের মানুষ দাঁত কিড়মিড় করে আর নিজের হাত কামড়ায়। ঘুমিয়ে থাকা প্রতিবাদ না করা বাঙালিকে জাগিয়ে তুলেন। যুদ্ধে সন্তানহারা, স্বামীহারা জাহানারা ইমাম। রাজাকারদের বিচারের ডাক দিয়ে। প্রায় ভুলতে বসা বাঙালিদের মনে রাজাকার শব্দটা বাসা বাঁধতে থাকে।

আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে এতটাই শক্ত ভীত রাজাকারদের হয়েছে ততদিনে। উল্টা জাহানারা ইমামের বিরুদ্ধেই মামলা করার সাহস পায়।
জিয়ার ছিনিয়ে নেয়াটা সূচারু কারুকার্যময় ছিল। তাই কারো চোখে তেমন ব্যথা লাগে নাই। অথবা তখনকার অবস্থাটা ছিল না প্রতিবাদের পক্ষে।

সেনা ছাউনির ব্রিলিয়ান্ট কত অফিসারকে র্নিবিচারে মেরে ফেলা হয়েছে নিজের ইচ্ছা মতন এবং প্রয়োজন মতন বিচারের প্রহসনে। হাজার হাজার সে সব অফিসারের আত্মিয় স্বজনদের করুণ মুখ প্রেস ক্লাবের সামনে অনশনরত আজো চোখে ভাসে। আর কর্নেল তাহের তো এক কিংবদন্তী। যার খবর এখন সবার জানা। প্রহেলিকার বিচার করে একজন গুণি মানুষকে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোন সুযোগ না দিয়ে।

কি ভাবে রাতারাতি ফাঁসি দিয়ে দেয় মেজর জিয়া পঙ্গু একজন মানুষকে মানবতার সকল নিয়ম ভঙ্গ করে, এ এক দারুণ উদাহরণ স্বৈরতন্ত্রের।
জিয়ার বড় ভয় ছিল কর্নেল তাহের কে। সিপাহীরা কর্নেল তাহের কে সিপাহী বিদ্রোহের মাধ্যমে নেতা বানাতে চেয়েছিল। কিন্তু যেহেতু তাহেরের একটি পা যুদ্ধের সময় সেলের আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়েছিল। তাই তিনি নিজেই এক পা হীন পঙ্গু মানুষের দেশের প্রধান হওয়া মানায় না।

তাই তাকে বাদ দিয়ে জিয়ার নাম প্রপোজ করেন সিপাহীদের। জিয়ার মনে পড়ে যায় পুরানো ঘটনাও যুদ্ধের সময়কার। সম্মুখ যুদ্ধে পাকিদের আক্রমণ না করতে যেয়ে কেমন পিছনে বসে থাকতে, কালক্ষেপন করতে ভালো বাসত জিয়া আর কর্নেল তাহের পাকিদের শেষ করে দেয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠত। এই নিয়ে প্রায়ই উত্তেজিত বাকবিতণ্ডা লেগে যেত দুজনের মধ্যে। তাই অনেক কিছুরই সাক্ষী তাহেরকে যত তাড়াতাড়ি সরানো যায় সেই পদক্ষেপ নিতে কোন দেরী হলো না।

ক্ষমতায় বসেই কর্নেল তাহেরকে বন্ধী করেই ক্ষান্ত হয়নি তাকে র্নিমম ভাবে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করে ইতিহাসের জগন্যতম কাজটি করে।

জিয়ার গড়া দল আজ দেশ বিরোধী রাজাকারদের বিচারকে সুষ্ঠ নয় আর্ন্তজাতিক মানের নয়, স্বচ্ছো নয় বলে দাবী করে। সাধারন মানুষ মেরে পুড়িয়ে দেশে অস্থিরতা কায়েম করে, গনতন্ত্রের নামে হরতাল , অবরোধ দিয়ে রাজাকার পার্টি জামাতে ইসলামের সহায়তায়। আর বি এন পি, জামাতে ইসলাম পন্থী পাকিবাঙালি, তাদের সর্ব শক্তি দিয়ে সেই অসতদের সহযোগীতা করে নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মেরে। আহারে বাঙলি! অবশ্য তাদের যারা সার্পোট করে তার বড় হয়েছে ভুল ইতিহাস পড়ে।

তারা তো দেশের ইতিহাস নিজের প্রয়োজনে লিখে ফেলেছে তাদের সুবিধা মতন। একদল সচেতন যদিও বুঝানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে তোমরা যা জানো তাহা ভুল। কিন্তু কী আলৌকিক শক্তিতে তারা থাকে নিজের অজ্ঞতায় সঠিক। তারা মনে হয় কানে দিয়েছে তুলো। শুনবে না জানবে না আর কিছু।

তারা পক্ষপাত দুষ্ট দেশ দ্রোহীর পক্ষ হয়ে কাজ করে নিজের ভাতে ছাই দেয়। যে দেশে থাকে সে দেশকে অবমাননা করে। যে দেশের প্রধানমন্ত্রী হয় সে দেশের বিপক্ষে তাদের অবস্থান। এরা কখনো জনগনকে ভালোবাসে না নিজেদের ছাড়া, ক্ষমতা ছাড়া।
নতুন প্রজন্ম ইতিহাস জানে ইতিহাস শিখে বংশ পরমপরায় গল্প শুনে ভায়াবহ যুদ্ধ সময়ের।

শত্রু পক্ষের হিংস্রতার, মুক্তিযোদ্ধার অসীম সাহসের গল্প, রাজাকারদের নৃশংসতার কাহিনী হৃদয়ে এঁকে নেয়। নতুন করে চেতনা জাগে তারুণ্যের মাঝে। তাদের পূর্ব পুরুষরা যুদ্ধ করে এতগুলো বছর ধরে বিভিন্ন রকম বিপত্তি বাধা, দাবীয়ে রাখার সম্মুখিন হয়ে প্রতিবাদ করেছে আরো মৃত্যু আরো নির্যাতনে তবু সাহসটা ছড়িয়ে দেয় সন্তানের মাঝে। নতুন প্রজন্ম কৌতুহলী, আরো অনেক বেশী জানার আগ্রহে কঙ্কালের করোটি খুঁড়তে থাকে অসীম আগ্রহে। ভয়াবহ সব রহস্যময় গা শিউরে উঠা খবর তারা বের করতে থাকে ইতিহাস ঘেটে দক্ষ গোয়েন্দার মতন।

স্বাধীন দেশে চলছে কি ভয়াবহ শত্রুর খেলা। আবিষ্কার করে, এগিয়ে আসে সামনা সামনি তুই রাজাকার বলার সাহস নিয়ে। তারা বদলে দেয়। হাওয়া ভবনের হাওয়ায় উড়া জনগণের চাওয়ায়। রাজাকারের বিচারের জন্য তারা আবার ফিরিয়ে নিয়ে আসে আওয়ামিলীগকে।

তারা বুঝতে পারে এক আওমিলীগ ছাড়া আর কেউ রাজাকারের বিচার করবে না, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষদল। বিচার শুরু হয় কিন্তু সময় শেষ। ওদিকে বি এনপি জোট,ঘুট, ভালোবাসা যা বাঁধার সব জড়িয়ে আছে আস্ট্রেপৃষ্টে রাজাকারদের সাথে। এবার গোলাপী বেগমের ঘাড়ে ভর করে আছে তারা আচ্ছা মতন। তাদের সাহস বেড়েছে চরম।

আবার তাদের ক্ষমতায় ফিরে আসা মানে দেশের পিছন ফিরে চলে যাওয়া।
সচেতন নাগরিকরা নতুন কোন দল গড়ে তুলেনি, ”আই হেইট রাজনীতি” মাধ্যমে তাই এখন একা একা জিয়ার প্রবর্তিত হ্যাঁ না ভোট করতে হয় আওমিলীগকে। বি এন পির নেত্রী তত্ববধায়কের গো ধরে আছেন। সত্যিকারের জনসমর্থিত আন্দোলন না করে মানুষের জনজীবন দূর্বিসহ করে তুলছে সহযোগী রাজাকারদের সহয়ায়তায়।
নির্বাচন কমিশন নিয়ম অনুযায়ী ভোটের দিন তারিখ ঘোষনা দিয়ে যাচ্ছে।

বিরোধী দল ভোটে না এলে কি করার আছে। নিয়ম মতন নির্বাচন বিনা ভোটারের অবস্থানেই বিনা প্রতিদ্বন্দীতায় যদি নির্বাচন হয়ে যায় কী করার আছে আর।
গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচন করার জন্য আরো দলের অংশ গ্রহণ প্রয়োজন। সেটা অনুধাবন করে শেষ মুহুর্তে প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দল নেত্রী কে আলোচনায় বসার আহ্বান করেন। শেষ পর্যন্ত তিনি তাঁর শেষ চেষ্টা করে গেছেন।

এটা প্রশংসনীয়। তবে হোম এরশাদের সাথে নির্বাচন প্রক্রিয়াটাও হাস্যকর। তবে বিপরীতি কিছু থাকছে উপায়হীন অবস্থায় যার অবস্থান টলমলে। কারণ অনেক বড় বড় কথা বলা, দল করা সুশীল সমাজ তো জনগনের বা দেশের পক্ষের আর কোন দল খাড়া করতে পারলেন না নির্বাচনে দাঁড়ানোর জন্য। এ দায় কাকে দেয়া যায়? এখন সবাই সব বুঝে কিন্তু কাজে কে এগিয়ে আসবে।

হাস্যকর সব সিদ্ধান্ত থেকে চরম নৈরাজ্যের একটা অবস্থা শুরু হয়েছে। ষোল কোটি মানুষ জানে এই অবস্থা তারা চায় না। কিন্তু জিম্মি হয়ে আছে সরকার আর বিরোধী দলের কাছে। খেলা খেলছে দেশ বিরোধী স্বাধীনতার শত্রুরা আজও কিন্তু সহজ চর্মচোখে সরকার আর বিরোধী দলকেই দেখতে পায় জনতা।
রাজাকারদের বিচার হয়েছে এখনও শাস্তি হয়নি।

স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি আবার সরকার না হলে দেশে ভয়াবহ অবস্থা হবে। এটা সর্বজন স্বীকৃত। কিন্তু সেই অবস্থাটাকে সুন্দর ভাবে জনগনকে না বুঝিয়ে, জনগণের মনে প্রশ্নবিদ্ধ কিছু বিপর্যস্ত অবস্থার আলোচনা করে, এমনি কিছু জায়গায় জনগনের মনে স্বস্থি দিয়ে, জনগনের মনে আস্থা ভাজন না হয়ে কেন আওয়ামিলীগ একক নির্বাচনের খেলায় মাতল। তাদের ভয় পৌরসভার নির্বাচনে তাদের বিপুল হেরে যাওয়ার। তাদের ভয় জনগন এক দলের পর অন্য দল দেখতে চায় তার? অথচ তারা সবচেয়ে সহজ জনগনের শক্তি অর্জনের সুন্দর পথটি বর্জন করে নানান রাজনৈতিক খেলা খেলতে শুরু করলেন।

যার ফল ভয়াবহ থেকে ভয়াবহ রূপে ছড়িয়ে পরছে দুই পক্ষে আর বলি হচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষ, সাধারন দেশের জনগন। সাধারন মানুষ চোখে দেখছে বিএনপির হরতাল অবরোধ। পিছনে কল কাঠি নাড়ছে দেশ দ্রোহী জামাতে ইসলাম নামের রাজাকার। যারা এত বছর পরও হুমকি দেয় ”পঞ্চান্ন হাজার বর্গ মাইল” জ্বালিয়ে দেয়ার। যারা বাংলাদেশ নামের দেশটিকে সহ্যই করতে পারেনা।

অথচ ওরা এই দেশটাতেই বাস করে, এই দেশেরই আলো বাতাসে বাঁচে। কী অসম্ভব ভাবে পেয়ে যায় তাদের সহযোগী এত বছর পরেও। দারিদ্রতার মধ্যে দিয়ে, লোভের মধ্যে দিয়ে, অজ্ঞতার মধ্য দিয়ে। আর নীল নকশা সেতো তারা করেছে সেই শুরুতেই কিছুতেই এ দেশকে বাংলাদেশ থাকতে দিবেনা। কী অদ্ভুত চাওয়া! তাদের লোক একের পর এক ক্ষমতায় সূচারু রূপে পাতানো এবং চোরাগুপ্তা হিসাবে।

এই দেশের বিরেুদ্ধে তাদের অবস্থান বিরোধী দল যাদের সরূপ এখন জন সমুখে উন্মোচিত। কিছু সচেতন মানুষের কারণে বাধাগ্রস্ত হয়ে বারেবারে ভেস্তে যায় তাদের চূড়ানšÍ বিজয় ।
উন্নতির পথে এগিয়ে নেয়া কাজ বন্ধ। দেশের উন্নতি যারা করবে তারা ক্ষতি করছে দেশের চুড়ান্ত রূপে। জনগণের শক্তিতেই তো নির্বাচিত হয়েছিল সরকার তবে জনগণের আস্থা অর্জন না করে উল্টা বিরাগ ভাজন হলো কেন? এ দায় তাদের নিজেদেরই।

জোড় করে ভালোবাসা পাওয়া যায় না। বিরক্তি এবং বিদ্বেস পাওয়া যায়।
যেহেতু আর কোন দল নেই আর কোন বিপ্লবী বিপ্লব ঘটাতে এগিয়ে আসেনা এই দেশে তাই জনগনকে সহ্য করতে হয় ভুল নেতাদের ভুল সিদ্ধান্ত।
যখন বাহাত্তরে রাজাকারের বিচার শুরু হয়েছিল তা বন্ধ করার প্রয়োজনে শেখ মুজিবকে হত্যা করা হলো। এরপর এত বছর এত দল এলো গেলো কারো মনে হলো না দেশ দ্রোহীর বিচার করার কথা।

মনে হবে কীভাবে যারা বেশীর ভাগ সময় ধরে শাসন করল দেশ তারাতো দেশ দ্রোহীদের রক্ষার জন্যই ব্যস্ত থাকল। সুযোগ করে দিল সুপ্রতিষ্ঠার। আজ দেশের আনাচে কানাচে তাদের বিস্তার অজ্ঞতার সুযোগে।
এখন আর কোন দল নয় ভাগটা দুইপক্ষ। স্বাধীনতার পক্ষ আর বিপক্ষ দল।

এই হিসাবে। এই নির্বাচনে স্বাধীনতার পক্ষের দলকেই নির্বচিত করতে হবে। আর তাদেরকে শুধরাতে হবে নিজেদের সুবিধাবাদি অবস্থান। দল আর ক্ষমতা মানে নিজের সুবিধা নয় দেশের মানুষের সুবিধার জন্য কাজ করার জন্য র্নিবাচিত প্রতিনিধী এ সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে। অভিজ্ঞতা আর প্রজ্ঞায় মানুষের মনে স্থান করে নেয়ার চেষ্টা করলে কেমন হয়।

কেমন হয় অর্জন করলে মানুষের ভালোবাসা।
ক্ষমতা গেলে অর্থকড়ি সম্পদ পাওয়া যাবে এই ধারনাটা বদল করে ক্ষমতায় থেকে মানুষের কাজ করে মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হওয়া যাবে এই দৃষ্টান্ত স্থাপনের উদ্যোগ নেয়ার মনোভাব থাকতে হবে।
যারা বলছে ক্ষমতা লোভী নই। তারা কেন নির্বাচন করে জনগণের সেবা করে না তা হলে? কাজের কাজ না করে শুধু মুখে কথার খৈ ফুটিয়ে লাভ কী?

জনগন নিজের তাগিতে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে কাজ করে বিনিয়োগ করে রেমিটেনস দিয়ে আর রাজনীতিবীদরা তা ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে ক্ষমতার লোভে আর জেদে। প্রতিটি মুহুর্তে কী পরিমান অসুবিধার সম্মুখিন হয় সাধারণ মানুষ রাজনীতির কারণে এর পরিবর্তন হতে হবে।

রাজনীতি জনগণের অসুবিধা করার জন্য নয় তাদের সুবিধা দেয়ার জন্য। দেশে একটি সুষ্ঠ চলমান ব্যবস্থা তৈরী করা।
মূল মন্ত্র হওয়া দরকার মানুষের জন্য কাজ করার একটি দল। যে রাজনীতিবীদরা নির্বাচন করে সংসদে যাবে জনগণের টাকা নিবে। গাড়ী হাঁকিয়ে বেড়াবে।

লাল পাসর্পোট নিয়ে দেশ বিদেশ ঘুরবে। তাদের দায় বদ্ধ থাকতে হবে। দেশের জনগণ জানমালের সম্পদের নিরাপত্তার জন্য। সংসদে না এসে বা ওয়াক আউট করলে তার সংসদ পদ বাতিল করা হবে এমন নীতি নো টলারেন্স ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠা করা হোক। সংসদ সদস্য হয়ে সংসদে বসে কথা বলতে হবে যুক্তির মাধ্যমে।

রাস্তায় নেমে সাধারন মানুষের গায়ে আগুন দিয়ে জন সম্পদ নষ্ট করে আর হরতাল দিয়ে নয়। দেশ বিরোধীদের মদদ দিয়েও নয়। কথা বলার যুক্তি তর্কের ক্ষমতা না থাকলে সংসদ পদ না নেয়াই বাঞ্চনিয়। আর দলের অহেতুক অযৌক্তিক দাবীকে মেনে নিয়ে দল করাটাও বিবেকহীনতার পরিচয়। তাই যে দল করেন সে দল যা দাবী করছে তা কতটা যুক্তি সম্পন্য কতটা দেশের স্বার্থ বিরোধী বা সমর্থন যোগ্য তা বুঝে নিজদলের নেতার সাথে কথপোকথন করুন, সমর্থন দিন দল বা নেতাকে।


ক্ষমতার দাপটে কোন কাজ করলেও তার সংসদ পদ বাতিল করার নিয়ম থাকুক। যারা জনগণের সেবা না করে সেবা নেয়ার মনবৃত্তিতে চলবে। তাদের মতন লোকদের নির্বাচিত না করে জনগণেরও বুঝতে হবে কে তাদের সহায় হবে তাদের জন্য কাজ করবে। তেমন লোকদেরই নির্বাচন করা উচিৎ। তবে সাধারন ভালো মানুষরাও ক্ষমতায় গিয়ে বদলে যায়।

তাই তেমন বদলে যাওয়া দেখলে জনগণের কাছেই অধিকার থাক তাদের প্রশ্ন বিদ্ধ করার আর সদস্যপদ বাতিল করার। যে কোন অপরাধ সংগঠিত হলে সেখানে যদি প্রধানমন্ত্রী বা প্রেসিডেন্টও জড়িত থাকেন তাকে আইনের আওতায় নিতে যেন কোন বাধা না থাকে সে ব্যবস্থা করা হোক। মুক্ত এবং সুস্থ আইন ব্যবস্থা এবং মানুষের সুস্থ জীবন যাপন খুব জরুরী।
দেশে অনেক কিছু সময়ের সাথে আপন গতিতে মানুষের প্রয়োজনে বদলে যাচ্ছে। এখন যা বদলানো দরকার তা হচ্ছে রাজনী।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।