ফুটবল ফেডারেশনকে নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। কিন্তু একটা ব্যাপার সত্যি যে লোকাল আসরগুলো সক্রিয় রেখেছে তারা। গেল মৌসুমে লিগসহ চার টুর্নামেন্ট সুষুমভাবে শেষ করেছে। এবারে ফেডারেশন কাপ শেষ হয়ে গেছে। লিগও চলছে।
এরপর আবার সুপার কাপ ও স্বাধীনতা কাপ রয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে এবারে চার টুর্নামেন্ট সম্পন্ন করা যাবে কিনা? কেননা দেশের বর্তমান যে পরিস্থিতি তাতে লিগ যে কবে শেষ হবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। এখন পর্যন্ত লিগে ছয় ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল থেকে খেলা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও হতে পারেনি। বুধবার থেকে মাঠে গড়ানোর কথা।
কিন্তু এভাবে লিগ শেষ হবে কবে? লিগ কমিটির চেয়ারম্যান বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাম মুর্শেদী বলেছেন, বিশ্বকাপ ফুটবলের আগে লিগ শেষ করবেন। তার কথা যদি বাস্তবায়িত হয় তাহলে জুনের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে লিগ শেষ হয়ে যাবে। কেননা ১২ জুন থেকে বিশ্বকাপের পর্দা উঠবে। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে লিগ শেষ হবে কীভাবে?
এবারেও ১০টি দল অংশ নিলেও লিগ তিন রাউন্ডে অনুষ্ঠিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগে দুই রাউন্ড লিগ শেষ করতে প্রায় ৪ মাস পার হয়ে যেত।
লিগ কমিটি অবশ্যই দ্রুত লিগ শেষ করতে চাইবে। কেননা সামনে তাদের আরও আয়োজন রয়েছে। কিন্তু দেশের পরিস্থিতিতো কোনোভাবে স্বাভাবিক হচ্ছে না। অনেকের আশা ছিল জাতীয় নির্বাচন হয়ে গেলে উত্তপ্ত পরিবেশ ধীরে ধীরে কেটে যাবে। কিন্তু রবিবার নির্বাচন শেষ হলেও দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি তাদের আন্দোলনের কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে।
দেশে একই সঙ্গে অবরোধ ও হরতাল চলছে। ঘোষণা আসছে নির্বাচন বাতিল না হওয়া পর্যন্ত কঠিন আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার। অর্থাৎ রাজনীতি আরও সহিংস রূপ ধারণ করতে পারে। নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে এ অবস্থায় লিগ চালানো সম্ভব কিনা তা দেখার বিষয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লিগ কমিটির এক কর্মকর্তা জানালেন, আমরা তো চাইব দ্রুত লিগ শেষ করতে।
কিন্তু দেশের পরিস্থিতি যে দিকে মোড় নিচ্ছে তাতে আমি নিশ্চিত বেশ ক'বার খেলা বন্ধ রাখতে হবে। এ অবস্থায় লিগ কবে শেষ হবে তা বলাটা সত্যিই মুশকিল। তিনি বলেন, লিগ দেরি হলে হয়তো এবার সুপার কাপ বা স্বাধীনতা কাপ নাও হতে পারে। এদিকে পুরো ব্যাপারটি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছে ক্লাবগুলো। কেননা মৌসুমের সময় যত বাড়বে ততই তাদের বাজেট বাড়াতে হবে।
শীর্ষ পর্যায়ের ক্লাব কর্মকর্তারা বলছেন, দল গড়তেই তাদের অনেক কষ্ট করে অর্থ যোগাড় করতে হয়। এরপর আবার আবাসিক ক্যাম্পের পেছনে বিশাল অর্থ ব্যয় হয়। এ জন্য সব ক্লাবই নির্দিষ্ট বাজেট নির্ধারণ করে। কিন্তু মৌসুম যদি বড় হয় তাহলে ভোগান্তির শেষ থাকে না। এ জন্য বাড়তি খরচের প্রয়োজন পড়ে।
মোহামেডানের এক কর্মকর্তা জানান, বাফুফের টার্গেট অনুযায়ী জুন মাসের আগেই লিগ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু দেশে যে পরিস্থিতি চলছে তা অব্যাহত থাকলে ক্লাবকে বড় ধরনের মাসুল দিতে হবে। লিগের পর সুপার কাপ ও স্বাধীনতা কাপ হলে ফুটবল মৌসুম শেষ করতে আগস্ট বা সেপ্টেম্বর লাগবেই। তাও আবার বলা যায় না। এই অবস্থায় ক্লাবগুলো ক্যাম্প চালাতে বাড়তি অর্থ কোথা থেকে পাবে।
কেননা মোহামেডান, আবাহনী ছাড়াও কিছু দল ক্রিকেট ও হকিতেও শক্তিশালী দল গঠন করে। এ অবস্থায় ক্লাব চালাতে নির্ঘাত বিপর্যয়ের পড়তে হবে। বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ বলেন, নির্দিষ্ট সময়ে আমরা লিগ শেষ করতে পারব বলে আশা রাখি। তিনি বলেন, আগামীকাল থেকে লিগ শুরুর পর যাতে থামাতে না হয় সেই ছক আমরা তৈরি করেছি। বিশেষ করে গুরুত্বহীন ম্যাচগুলো আমরা দু'টো করে আয়োজনের চিন্তা করছি।
সে অবস্থায় লিগ নিয়ে কোনো জটিলতা হওয়ার কথা নয়। আশা রাখি এ ব্যাপারে ক্লাবগুলোও সহযোগিতা করবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।