বিশ্বের এক নম্বর মরণব্যাধি হৃদরোগ। কোনো রকম পূর্বাভাস ছাড়াই যে কোনো সময় এটি কেড়ে নিতে পারে মানুষের জীবন। বর্তমান বিশ্বে বাংলাদেশসহ অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশে সংক্রামক ব্যাধির পরিমাণ কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অসংক্রামক ব্যাধি, বিশেষ করে উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, ক্যান্সার মারাত্দক স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। প্রতি বছর লাখ লাখ লোকের হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে। এদের মধ্যে ২৫ ভাগের মৃত্যু হয় হাসপাতালে পেঁৗছার আগেই। হার্ট অ্যাটাক হয়েও অনেক সময় বেঁচে থাকতে হয় নানা অক্ষমতা আর হঠাৎ মৃত্যুর ভয় নিয়ে। মানুষ বেঁচে থাকার জন্য যেমন খাদ্যের প্রয়োজন পড়ে তেমনি রোগাক্রান্ত হলে প্রয়োজন চিকিৎসার। তাই হৃদরোগের চিকিৎসা হিসেবে প্রচলিত বহুল আলোচিত দুটি পদ্ধতি বাইপাস ও স্ট্যান্টিং। এ দুটিই অপারেশন। অনেক সময় ডাক্তাররা বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানিয়ে দেন, রোগীর বাইপাস সার্জারি বা স্ট্যান্টিং করার মতো অবস্থা নেই বা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এমনও দেখা গেছে, ৮০ বছরের বৃদ্ধের একটি আর্টারিতে ব্লক থাকায় রিং বসাতে গিয়ে সমস্যা হচ্ছে বা রোগী ভয় পাচ্ছেন। এ বয়সে বাইপাস করা রিস্ক অথবা রোগীও এ বয়সে অপারেশন করাতে অনিচ্ছুক। অন্যদিকে হেপাটাইটিস বি পজিটিভ থাকলে সার্জনরা অপারেশন করতে অনিচ্ছুক। অনেক রোগী অপারেশনের কথা শুনলে ভয় পায়। তাদের প্রচলিত পদ্ধতির চিকিৎসা দেওয়া যাচ্ছে না, এরকম পরিস্থিতিতে কি রোগীরা নিজেকে ভাগ্যের হাতে সঁপে দিয়ে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করবেন? নিশ্চয় নয়। অন্যথায় বেঁচে থাকার জন্য বিকল্প কোনো পথ খুঁজবেন। অপারেশন বা কাটা-ছেঁড়া ছাড়াও যে বিভিন্ন পদ্ধতিতে হৃদরোগের চিকিৎসা করা সম্ভব_ এক্ষেত্রেও প্রচুর সফলতার প্রমাণ রয়েছে। এ কথাগুলো এখন কারও মেনে নিতে আপত্তি থাকার কথা নয়। হলিস্টিক পদ্ধতিতে (ডায়েট ম্যানেজমেন্ট, স্ট্রেস ফ্রি টেকনিক, মেডিটেশন, যোগব্যায়াম) যে চিকিৎসা হচ্ছে তা উন্নত বিশ্বেও গ্রহণযোগ্য। আমেরিকার ডা. ডিন অরনিশই প্রথম এই পদ্ধতি শুরু করেন এবং এর ব্যাপক সফলতা পান। ভারতের ডা. সতীশ গুপ্তার নেতৃত্বে কার্ডিওলজিস্ট, যোগব্যা-য়ামবিদ, মেডিটেশন এঙ্পার্ট, ডায়েটিশিয়ানের সমন্বয়ে আর্টারি ব্লকেজ রোগীর ওপর এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন। যার অধীনে সুস্থ হয়েছেন প্রায় ২০ হাজারের অধিক হৃদরোগী। এ পদ্ধতিতে ৮ মাসে ব্লকেজ ১০% কমেছে এবং ১৮ মাসে ব্লকেজ ৫০-৬০% কমে যায। শুধু হৃদরোগ চিকিৎসাতেই নয়, অসংক্রামক বহু রোগ বিশেষত ডায়াবেটিস ও মাইগ্রেনের চিকিৎসায় এ পদ্ধতির সাফল্য আজ পরীক্ষিত।
ডা. গোবিন্দ চন্দ্র দাস, হলিস্টিক হেলথ
কেয়ার সেন্টার, ঢাকা। ফোন: ০১৭২১-৮৬৮৬০৬
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।