ভেজাল বীজ ও কীটনাশকে নাটোরে চলতি বোরো মৌসুমে চার শতাধিক কৃষক সর্বস্বান্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির কাছে ধর্না দিয়ে কয়েকজন ক্ষতিপূরণ পেলেও পাননি বেশির ভাগ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক।
সদর উপজেলা কৃষি অফিসে কৃষকদের করা অভিযোগ থেকে জানা গেছে, সিনজেনটা বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড নামের বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠান সম্প্রতি উপজেলার কসবা ও সিংহাড়দহ দক্ষিণপাড়া গভীর নলকূপভুক্ত এলাকার চাষিদের টেগরা প্রকল্পের মাধ্যমে যান্ত্রিক ও অত্যাধুনিক বিজ্ঞানভিত্তিক বোরো বীজ রোপণের পরামর্শ দেন। পরে কৃষকরা পুনরায় জমি চাষ করে বীজ সংগ্রহ করে বোরো বীজ রোপণ করতে শুরু করেন। কৃষকদের অভিযোগ, টেগরা প্রকল্পের ফাঁদে পড়ে ওই সব এলাকার চার শতাধিক কৃষক সর্বস্বান্ত হয়েছেন। সদর উপজেলার কৃষক বিজয় কুমার সাহা জানান, প্রতিষ্ঠানটির ফাঁদে পড়া কৃষকদের ৭০ শতাংশ পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এবং ২০ শতাংশ কৃষক হয়েছেন আংশিক। আর ১০ শতাংশ কৃষককে প্রতিষ্ঠানটি ম্যানেজ করেছে। কোনো কৃষকই এখনো ক্ষতিপূরণ পাননি। কসবা এলাকার কৃষক বাবু জানান, বিঘাপ্রতি দুই হাজার টাকা করে নিয়ে একটি বিশেষ প্রক্রিয়ায় প্রস্তুতকৃত ভালো বীজের কথা বলে তাদের মিনিকেট ও ব্রি-২৯ জাতের চারা বীজ নিতে বাধ্য করা হয়েছিল এবং টেগরা পদ্ধতিতে রোপণ করে দেওয়া হয়েছিল যা একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে। তবে এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করে সিনজেনটা বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেডের নাটোর আঞ্চলিক কার্যালয়ের টিজিও আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্রায় ৭০ একর জমি প্রতিষ্ঠানটির একটি প্রকল্পের আওতায় নেওয়া হয়েছিল যার মধ্যে কোল্ড ইনজুরির কারণে প্রকল্পের মাত্র ১২ বিঘা জমির চারা নষ্ট হয়েছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির পণ্য ক্রয়ে বাধ্য করার বিষয়টিও সঠিক নয় বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, আমরা যেভাবেই হোক কৃষকদের ম্যানেজ করেছি, বর্তমানে আর কোনো সমস্যা নেই।' এলাকা পরিদর্শনকারী নাটোর সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মোজদার রহমান জানান, সিনজেনটা কৃষি বিভাগের অনুমতি ছাড়াই কৃষকদের কাছ থেকে এই পদ্ধতিতে চাষাবাদের নামে টাকা আদায় করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর তার ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে কৃষকদের কিছু টাকা ফেরত দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে তবে তা মোটেও সন্তোষজনক নয়। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পুনরায় বোরো চাষ করলেও বিলম্বিত চাষের কারণে এবার ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।