মুসাফির। হাঁটছি পৃথিবীর পথে পথে, অনিশ্চিত গন্তব্যে। কাগজের নৌকা দিয়ে সাগর পাড়ি দেবার দুরন্ত প্রয়াস।
শেখ হাসিনাকে দেখছি বক্তব্যে বারবার 'সংখ্যালঘু' 'সংখ্যালঘু' শব্দটি উচ্চারণ করছেন। সম্ভবত বিষয়টি না জানার কারণে অর্থাৎ অসচেতনভাবে।
মিডিয়াও শব্দটি লুফে নিয়েছে। অথচ তারা ভাবতে পারছেন না যে, মানুষের মূল্যায়ন ও বিচার কখনো "সংখ্যা" দিয়ে সম্ভব নয়। যাদের সম্পর্কে এ শব্দটি প্রয়োগ হচ্ছে, তারা এতে প্রকৃতপক্ষে অপমানিত ও অস্বীকৃত হচ্ছেন। তাই এ শব্দটি অনতি বিলম্বে আমাদের সবার পরিহার করা উচিত। যারা এ ব্যাপারে সচেতন নন, তাদের সচেতন করা আমাদের দায়িত্ব।
এক্ষেত্রে তাদের ধর্মীয় পরিচয় উল্লেখ করে কথা বলা যেতে পারে। আর ধর্মীয় পরিচয় সবার জন্যই স্বতন্ত্রতা ও গর্বের বিষয়। অন্যদিকে সংখ্যালঘু হিসেবে যেমন কেউ নিজের পরিচয় দিতে চান না, তেমনি এ মাপকঠিতে তাদের মূল্যায়ন হোক তাও চান না। প্রকৃতপক্ষে এটা যৌক্তিকও নয়।
আজ একদল মানুষকে সংখ্যালঘু হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।
মানুষের অধিকার, পরিচয় ও মূল্যায়নের ক্ষেত্রে "সংখ্যায়" আমি বিশ্বাসী নই। তাই 'সংখ্যালঘু' শব্দটি যেমন ব্যবহার করি না, 'সংখ্যাগুরুর' যুক্তিও দেখাই না। আর দেখিয়ে লাভইবা কতটুকু? বাংলাদেশের চেয়ে ভারতে মুসলমান বেশি। সুতরাং এখানে আমরা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নির্যাতন করা মানে ভারতের কোটি কোটি মুসলমান নারী-পুরুষকে জীবনের ঝুঁকিতে নিক্ষেপ করা। অন্তত মুসলমানদের প্রতিও যদি আমাদের সামান্যতম দরদ থাকে তাহলে হিন্দু ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের আমরা কোনো রকম উৎপাত করতে পারি না।
আমার ক্ষুদ্র প্রতিবাদের কোনো মূল্য কারও কাছে আছে কি না জানি না, তবুও বলছি ধর্মীয় ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে, সংখ্যালঘু হিসেবে চিহ্নিতদের উপর যে বা যারাই এসব হামলা করছে, এর প্রতিবাদের ভাষা নেই। এটা চরম পাশবিকতা। এ থেকে উত্তরণে আমরা কে কী করতে পারি তা সাধ্যের সর্বোচ্চ মাত্রায় ভেবে তারপর দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।
পৃথিবীর ইতিহাসে সংখ্যার বিচারে জ্ঞানী-গুণী, আলেম, বিজ্ঞানী, চিন্তাশীল, পরোপকারী, প্রকৃত সমাজসেবক, সাধক, আল্লাহভক্ত খুবই কম। এরা সব সময়ই সংখ্যালঘু।
এক্ষেত্রে কম সংখ্যাটা বরং গর্বের। শুধু গর্বেরই নয়, সেদিন এক বন্ধু এক জায়গায় আমার নাম দেখে জিজ্ঞেস করলেন সেটা আমারই নাম কি না। আমি বললাম, দোস্ত, সেটা আমার নামই। কেননা জাকির মাহদিন সারা বিশ্বে এক জনই। আসল কথা হচ্ছে, প্রতিটি মানুষ স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যধারী এবং এক একটা দিকের যোগ্যতা রাখেন, এক একটা দিকের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করেন, যা সামগ্রিকভাবে মানবজাতি অস্বীকার করতে পারে না।
সমাজের মাছ বিক্রেতা, রিক্সাওয়ালা, কুলি, মজুর সবার প্রতি আমরা মুখাপেক্ষি। কারও অবদান খাটো করে দেখার সুযোগ নেই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।