রহস্য
একটু চিন্তা করুন তো, বৃহস্পতি গ্রহ থেকে এক এলিয়েন এসে আপনাকে বলল- “সুপ্রিয় পৃথিবীর অধিবাসী, আমাদের রাজা একাদশ জুপিটোরাস আপনাদের হোমো স্যাপিয়েন্সদের জন্য নতুন বছরের উপহার হিসেবে আমাদের গ্রহের স্পেশাল ফ্রেঞ্চ ফ্রাই পাঠিয়েছেন। খেয়েই দেখুন না একবার”!!!
কেমন হতো তাহলে? আজীবন আপনি গল্প করতে পারতেন আপনার নাতি-পুতিদের কাছে। আর আপনার নাতি-পুতিরাও গল্প করতো তাদের পরবর্তী বংশধরদের কাছে।
থাক, কল্পনা বাদ দিয়ে এবার বাস্তবে ফিরে আসা যাক। তবে এলিয়েন এসে দিয়ে না গেলেও বৃহস্পতির ফ্রেঞ্চ ফ্রাই কিন্তু আমরা ঠিকই পেতে যাচ্ছি! কীভাবে? চলুন জানা যাক বিস্তারিত...
‘কেমন হতে পারে বৃহস্পতির ফ্রেঞ্চ ফ্রাই?’- এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য ইতিমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে European Space Agency।
তবে তাদের লক্ষ্য কিন্তু আসলে বৃহস্পতি গ্রহ নয়। বিজ্ঞানীদের এই গবেষণার মূল লক্ষ্য হলো, অভিকর্ষ বলের পরিবর্তনের সাথে সাথে খাবারের মানের কেমন পরিবর্তন হয় সেটা জানা। আর এর ফলে ভবিষ্যতে মহাকাশচারীদের জন্য আরো ভালো মানের খাবার সরবরাহ করা যাবে বলেই তারা আশা করছেন।
কিন্তু কেমন ছিল সেই ফ্রেঞ্চ ফ্রাই? সেগুলো কি আসলেই বৃহস্পতি গ্রহে গিয়ে ভেজে আনা হয়েছিল?
এই পরীক্ষাটির জন্য বিজ্ঞানীরা প্রথমে আলুকে চিকন চিকন করে কাটলেন। এরপর অলিভ অয়েল দিয়ে বেশ কড়া করে প্রত্যেক পাশ ভাজলেন।
আর কৃত্রিম অভিকর্ষ বল তৈরী করার জন্য এখানে ব্যবহার করা হয়েছিল একটি সেন্ট্রিফিউজ মেশিন। এর ফলে পৃথিবীর প্রায় ৯ গুণ বেশি অভিকর্ষ বল পাওয়া গিয়েছিলো ওখানে, আর এরকম পরিবেশেই তৈরী করা হয়েছিল সেই ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ।
যা-ই হোক, রান্নার কাজ শেষ হওয়ার পর দেখা গেল এই অতিরিক্ত অভিকর্ষ বলের প্রভাবে আলু এবং গরম তেলের মাঝে তাপ স্থানান্তরের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল, ভাজতে তাই সময় লেগেছিল বেশ কম। আর ওই গবেষণায় নিযুক্ত বিজ্ঞানীদের মতে, অতিরিক্ত অভিকর্ষ বলের প্রভাবে ভাজা এই ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ছিল বেশ সুস্বাদু!
আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বিজ্ঞানীরা বের করলেন- অভিকর্ষ বল যতই বাড়ানো হোক না কেন, পৃথিবীর ৩ গুণ হবার পর তা আসলে স্থিতিশীল অবস্থায় পৌঁছে যায়। এরপর অভিকর্ষ বলের মান যতই বাড়ানো হোক না কেন তা আর ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের স্বাদের মান বাড়াতে পারেনি! তাই এটাকে বলা হচ্ছে ‘বৃহস্পতি গ্রহের ফ্রেঞ্চ ফ্রাই’, কারণ বৃহস্পতির অভিকর্ষ বল পৃথিবীর প্রায় ৩ গুণ (24.79 m/s^2)।
তবে এখনই আবার বৃহস্পতি গ্রহের ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খেতে বসে যাবেন না যেন! কারণ এই ফ্রেঞ্চ ফ্রাই-এ কিন্তু বেশ কিছু সমস্যাও ছিল...
আলুর টুকরোগুলো যখন ভাজা হচ্ছিল তখন এর ভেতর থেকে বের হওয়া জলীয় পদার্থ বাষ্পে পরিণত হয়ে আলুর টুকরোগুলোকেই তেল থেকে পৃথক করে রাখছিল। ফলে ফ্রেঞ্চ ফ্রাইটি খেতে গিয়ে বিজ্ঞানীদের কাছে মনে হয়েছিল, এটি যেন পানি দিয়ে একেবারে ভারী হয়ে আছে!
তাই এখন বিজ্ঞানীরা নেমে পড়েছেন নতুন মিশনে- “কীভাবে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই থেকে পানি দূর করা যায়?”...
এমন যদি চলতে থাকে, তাহলে তো আর চিন্তাই থাকবে না। কিছুদিন পর থেকে হয়তো দেখা যাবে, রাস্তার মোড়ে নানান নামের রেস্টুরেন্ট- ‘Jupiter Restaurant’, ‘Mars Restaurant’ এবং আরো কত কি!!!void(1);
সূত্রঃ http://news.sciencemag.org
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।