আমার টিউন টি আমার বাবার লেখা আর্টিকেল থেকে নেয়া। আশাকরি ভালো লাগবে।
কৃষ্ণ বিবর বা ব্লাক হোল হল মহাকর্ষীয় কূপ যেখানে মহাজাগতিক বস্তু’ভর মধ্যাকর্ষণের প্রবল টানে অতি ক্ষুদ্রাকৃতি ধারণ করে; এমন কি আলোর কণা পর্যন্ত সেই আকর্ষনে বিলীন হয়ে যায়। আলোকীয় সকল বস্তুই ঘনত্বের আবর্তে পড়ে তার আলোকীয় গুণাগুণ হারিড়িয়ে ফেলে ফলে কোন আলোর বিচ্ছুরণ ঘটেনা, যার জন্যে এই কূপটিকে খালি চোখে এমনকি যন্ত্র চোখেও দেখা যায়না। মহাজাগতিক বস্তুনিলয়ের গতিবিধি ও হারিয়ে যাওয়া থেকে বিজ্ঞানীদের ধারণা প্রায় পাকাপোক্ত হয়ে যায় যে ছায়াপথের স্থানে স্থানে বিশেষ করে প্রত্যেকেরই কেন্দ্রে এই মৃত্যুকূপের উপস্থিতি রয়েছে।
বস্তুতঃ এই এই কূপে মহাকর্ষীয় বল এতই প্রবল যে মহাবিশ্বের অন্য যে কোন বল তার কাছে হার মানে; এর আকর্ষণ থেকে কাছাকাছি কারোরই মুক্তি নেই। মূলতঃ সকল মহাকাশীয় বস্তই যেন ধীরে ধীরে তার আগ্রাসনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
সম্ভবতঃ মহাজাগতিক বস্তু সৃষ্টির ভারসাম্যতা রক্ষার লক্ষ্যেই এই বিশ্বজগতের স্রষ্টা এই ধ্বংস কূপের সৃষ্টি করেছেন। হয়তোবা মহাবিশ্বের বিবর্তনের কোন এক পর্যায়ে নক্ষত্ররাজির ধ্বংস সাধনের মধ্য দিয়ে কেন্দ্রীভূত হয়েছে বিপুল ভর, ফলে মহাকর্ষের প্রাবল্য অনেক বেশী হয়ে আসে এবং আশে পাশের মহাজাগতিক বস্তু’ গুলিকে টেনে নিয়ে তার দেহ কলেবরকে করে তুলেছে অস্বাভাবীক,আর তার মহা আকর্ষণের গ্রাস থেকে রেহাই পাচ্ছেনা কেহই। ঘূর্ণির মত চারিদিক থেকে মহাজাগতিক বস্তু এসে তার আবর্তে তলিয়ে যাচ্ছে।
এমনি করে গোগ্রাসে উদর পূর্তি করে চলেছে এই অন্ধকূপ। যতই দিন যাচ্ছে মহাকাশীয় বস্তুর ধ্বংস সাধনের মধ্য দিয়ে তার দেহাকৃতি অসীম হতে চলেছে। এখন প্রশ্ন হল এত বিশাল যার আকৃতি তাকে কেন দেখা যায়না?
আমরা জানি কোন বস্তুর দৃষ্টিলভ্যতার পূর্ব সর্ত হল কোন না কোন উপায়ে তা থেকে দর্শণার্থীর চোখে আলো আপতিত হওয়া। মহাজাগতিক বস্তু থেকে আলো আমাদের চোখে পড়ে বলেই আমরা এগুলোকে দেখতে পাই। আমরা জেনেছি ব্লাক হোলের অভিকর্ষ থেকে আলো মুক্ত হতে পারেনা তাই তাদের অবস্থান আমরা দেখতে পাইনা; কিন্তু তাদের উপস্থিতি অত্যান্ত প্রকট।
আমরা ছায়াপথ গুলোর ছবিতে দেখেছি প্রায় প্রতিটির কেন্দ্রে এবং বিভিন্ন অবস্থানে ঘূর্ণির মত আবর্ত রয়েছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা ঐ আবর্তই কৃষ্ণ বিবর।
১৭৮৩ খৃষ্টাব্দে ভূতত্ত্ববিদ জন মিচেল বিজ্ঞানী হেনরী ক্যাভেন্ডিসকে লেখা এক চিঠিতে জানান যে,বিশাল আকৃতির ভর বিশিষ্ট কোন বস্তুর মহাকর্ষের প্রভাব থেকে আলোক তরঙ্গ পর্যন্ত বেরিয়ে আসতে পারেনা। ১৭৯৬ সালে গণিতবিদ পিয়েরে সিমন একই মতবাদ প্রদান করেন। পরবর্তী শতাব্দীর বিজ্ঞানীরা এই মতবাদকে উপেক্ষা করে বলেন যে আলোর মত ভরহীন তরঙ্গ মহাকর্ষের শক্তিতে প্রভাবিত হতে পারেনা।
ফলে এই ধারণা অনেকটা ফিকে হয়ে যায়। দীর্ঘ সময়ের পথ বেয়ে বিজ্ঞান ১৯ শতকে এসে সেই পুরানো ধারনাকে নিয়ে উঠেপড়ে লাগলেন;তারা মহাবিশ্বের নতুন নতুন অসংখ্য তথ্য আবিস্কার করে গোটা মানবজাতিকে চমকিয়ে দিলেন; তন্মধ্যে একটি হলো ব্লাক হোল বা কৃষ্ণগহব্বর (Black Hole) । ১৯৬৯ সনে আমেরিকান পদার্থবিদ জন হুইলার সর্বপ্রথম ব্লাকহোল কথাটি উত্থাপন করেন। আগে আমরা অনুমান করতাম যে, আমরা বোধহয় সকল তারাই দেখতে পাই। কিন্ত না,পরে দেখা গেল পতনশীল তারাদের আলো দেখা যায়না;ব্লাকহোল থেকে আলো নির্গত হতে পারেনা বলেই এই অবস্থা।
আসুন দেখি এই প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআন কি বলে।
وَالنَّازِعَاتِ غَرْقًا সূরা-আন-নযিয়াত আয়াত-১
৭৯:১ ‘শপত সেই ফেরেস্তা গণের যারা ডুব দিয়া আত্মা উৎপাটন করে। ’
উপরের আয়াতটি লক্ষ্য করুন,আমাদের সহজলভ্য বাংলা বা ইরেজী যে কোন তরজমায় উপরিউক্ত অনুবাদই করা হয়েছে, মহামান্য অনুবাদকারীগণ প্রায় সকলেই একই অনুবাদ করেছেন। সূধী পাঠক,আয়াতস্থিত শব্দগুলির অভিধানিক বিশ্লেষণ অতীব জরুরী। ছোট্ট দুইটি শব্দের সমন্বয়ে একটি অত্যান্ত তাৎপর্যপূর্ণ আয়াৎ।
শব্দ হল وَالنَّازِعَاتِ غَرْقًا,
وَالنَّازِعَاتِ – ঐ সকল বস্তু যারা সজোরে টানে,, ( those who extract) শব্দটির সঠিক অর্থ সজোরে টানা; নাযউন ধাতু থেকে উৎপন্ন। শব্দটির ধাতুগত অর্থ খামছে ছিড়ে টেনে আনা ইত্যাদি। غَرْقًا- গারকুন ধাতু থেকে উৎপন্ন এই শব্দটির অর্থ হল,নিমজ্জিত হওয়া,ধ্বংস হওয়া,সবেগে ধাবিত হওয়া। তা’হলে শব্দ দু’টির অর্থ হয় প্রবল আকর্ষণে কোথাও নিমজ্জিত হয়ে ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়া। এমতাবস্থায় উপরোক্ত আয়াতের মর্মার্থ দাঁড়াতে পারে ‘ঐ সকল বস্তু যাদের প্রবল আকর্ষণে অন্যেরা নিমজ্জিত হয়ে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় (আল্লাহ্ই ভাল জানেন)।
অথচ প্রচলিত তরজমায় দুইটি শব্দেরই শাব্দিক অর্থই অনুপুস্থিত। আমরা পরিস্কার দেখতে পাচ্ছি শব্দ দুইটির কোনটির সাথেই ফেরেস্তা শব্দের সংশ্লিষ্টতা নেই,এমনকি কোন প্রাণীদেহের বা আত্মার সংশ্রব নেই। তার পরেও তরজমায় স্থান পেল চমকপ্রদ কথা! হতে পারে উপরুক্ত বাক্যে শব্দ দু’টি দ্বারা ব্যাক্ত বাণী ভাবের পূর্ণঙ্গতা পাচ্ছেনা। এমতাবস্তায় বলতে হচ্ছে, থাকনা এর মর্মার্থ গোপনে নিহিত, যেমন রয়েছে আলিফ, লাম, মিম্ এর মধ্যে। সামঞ্জস্যহীন তরজমায় বিভ্রান্তির আশঙ্কা থাকে বেশী।
সূধী পাঠক আসুন,আমরা একবার চেষ্টা করে দেখি বাস্তবতার সাথে এই আয়াতের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পাই কিনা। আমরা উপরের আলোচনায় ব্ল্যাকহোল নামক এক মৃত্যু কূপের খোঁজ পেয়েছি,আসুন তার সাথে এই আয়াতের ব্যবহৃত শব্দ غَرْقًا , وَالنَّازِعَاتِ সার্থক প্রয়োগ হয়েছে কিনা!
আজকের বিজ্ঞানের কাছে এই অন্ধ কূপ অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কোন তারকা পুঞ্জকে ছায়াপথের মর্যদা পেতে হলে তার মধ্যে এই কৃষ্ণ গহব্বর অবশ্যই থাকতে হয়। নইলে এটি হয় ছোট খাট তারকা নিকুঞ্জ। সম্ভবত সুপারনোভা বিস্ফোরনে উৎপন্ন প্রথম দিকের নক্ষত্ররা ধ্বংস প্রাপ্ত হয়ে কালগহ্বর বা ব্লাকহোল তৈরী করে।
কালগহ্বর গ্যাস ও অন্যান্য নক্ষত্র সমুহকে উদরস্থ করে ছোট আকৃতির কোয়াসার তৈরী করে। এইগুলি বড় হতে হতে একত্রিত হয়ে প্রকাণ্ড কাল গহ্বর তৈরী হয়। আমাদের পরিচিত প্রায় সকল ছায়াপথের কেন্দ্রে এই কাল গহ্বর দেখা যায়।
ব্লাকহোল হল মহাজাগতিক বিবর্তনের একটি বিশেষ ধাপ। বিশাল আকৃতির নক্ষত্রগুলো (কমপক্ষে সূর্যের আকৃতির দশগুণ) তাদের জীবনচক্রের কোন সময়ে যখন জ্বালানী সঙ্কটে পরে অর্থাৎ তার জ্বালানীসম্ভার হাইড্রোজেন রূপান্তরিত হতে হতে প্রায় নিঃশ্বেষ হয়ে আসে তখন তার কেন্দ্রে বহির্মূখী চাপ যায় কমে।
অপরদিকে রূপান্তরিত ভারী মৌলের পরিমান বৃদ্ধি পেয়ে উৎপন্ন হয় প্রচণ্ড শক্তির মধ্যাকর্ষন বল। শুরু হয় সঙ্কোচণ; আর এই সঙ্কোচনের ফলে উপন্ন হয় প্রচুর তাপ ভারী মৌলগুলি বিবর্তিত হয়ে পর্যায়ক্রমে কার্বণ,ম্যাগনেশিয়াম সর্বশেষে লৌহ মৌলের সৃষ্টি করে যা তাপ উৎপাদনের চেয়ে তাপ শোষন প্রক্রিয়ায় মত্ত হয়। কেন্দ্রে বহির্মূখী চাপ নিতান্তই কমে যায়। শুরু হয় অভিকর্ষ সঙ্কোচনের এক অস্বাভাবিক ধ্বংসলীলা। নক্ষত্রটির বাইরের অংশ প্রবল টানে তীব্র ভরবেগে কেন্দ্রের দিকে প্রবাহিত হতে থাকে,তখন কেন্দ্রে উৎপন্ন হয় অপরিমেয় তাপ যার ফলশ্রুতিতে ঘটে বিস্ফোরণ।
নক্ষত্রের বাইরের অংশ টুকরো টুকরো হয়ে ছড়িয়ে পড়ে মহাশূণ্যের বিভিন্ন স্থানে। অনেক ক্ষেত্রে সেই প্রবল মধ্যাকর্ষণ সৃষ্টিকারী কেন্দ্রটি পরিনত হয় নিউট্রন ষ্টার বা পালসারে। কখনো বা কোন দৃশ্য মহাজাগতিক বস্তু’ না হয়ে মহাসঙ্কোচনের ফলে নিজের দৃশ্য অস্তিত্ব হারিয়ে তৈরী করে কালগহ্বর বা ব্লাকহোল যার মধ্যাকর্ষণের প্রবল স্রোতে আশেপাশের সকল দৃশ্য বস্তু অদৃশ্য হয়ে যায়। অর্থাৎ সঙ্কোচনের অসীম শক্তির প্রভাবে বিশালকায় নক্ষত্র পর্যন্ত সঙ্কুচিত হয়ে সেই ব্লাকহোলের উদরে হারিয়ে যায়। নীচের চিত্রে ব্লাকহোলের ছবি দেওয়া হল।
At left is an optical view of M83. At right is a composite image showing X-ray data from Chandra in pink and optical data from the Hubble Space Telescope in blue and yellow
নীচের চিত্রটি আমাদের প্রতিবেশী ছায়াপথ অ্যান্ড্রোমিডায় একটি মহাকর্ষীয় কূপ বা ব্লাকহোল।
Andromeda Galaxy, our neighbor Added by Ferasder a gravitational pull in the center of the gravity
নীচের চিত্রটি এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত ব্লাকহোলের মধ্যে সর্ববৃহত ব্লাকহোল যার মধ্যে বহু কোটি সূর্য অনায়াসে হারিয়ে যেতে পারে।
বৃহদাকার ব্লাকহোল গুলি আমাদের সৌরজগতের চেয়েও বড় হতে পারে যেখানে কোটি কোটি সূর্যের স্থান সঙ্কুলান অতীব সাধারণ ব্যপার। মহাজাগতিক বস্তু সমুহকে গিলে খাওয়ার ফলে দেহ কলেবরে বৃদ্ধি পেয়ে এক পর্যায়ে প্রতিবেশী নক্ষত্র সমুহকে টেনে হিঁচড়ে তার উদরে নিয়ে আসে। মহাশূন্যের স্থানে স্থানে এসকল ব্লাকহোল স্থান করে নিয়েছে মহাজাগতিক বস্তু নিলয়ের ধ্বংস সাধনের উদ্যেশ্যে।
সূধী পাঠক তাহলে উপরিউক্ত আয়াতের মর্মবাণী কি এই হতে পারেনা যে, শপত সেই বস্তুর যার মধ্যে কোন বস্তু ধ্বংস প্রাপ্ত হয়। শুধু তাই নয় মহাবিজ্ঞ দয়াময় আরো পরিস্কার করে বলছেন, فَلَا أُقْسِمُ بِمَوَقِعِ النُّجُومِ
অতএব, আমি তারকারাজির অস্তাচলরে শপথ করছি,
৫৬:৭৫‘শপত সেই পতন স্থানের,যেখানে নক্ষত্র সমুহ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। ’(কজী জাহান মিয়া কতৃক গৃহিত),এখানে ‘ওয়াকায়া’শব্দের প্রকৃত অর্থ ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়া,অস্ত যাওয়া নয়।
Then I swear by the setting of the stars,
সূধী পাঠক লক্ষ্য করুন, প্রাপ্ত তরজমায় ইংরেজীতে বলা হয়েছে ‘by the setting of the stars’ অর্থ দাঁড়ায় তারকার অস্তগমনের আর বাংলায় তরজমা করা হয়েছে ‘অস্তাচলের’ অর্থাৎ অস্তগমন স্থানের। আবার مَوَقِعِ শব্দটি একটি পুরুষবাচক সম্মন্ধ পদ (বহুবচন)।
তাহলে শব্দটির অর্থ কোন রকমেই অস্ত যাওয়া নহে বরং অস্তাচল বা অস্তগমন স্থান হওয়াটাই বাঞ্চনীয়; যার সাথে সম্মন্ধ রয়েছে ‘শপত” নামপদের। আবার ভূৎপত্তি অনুযায়ী শব্দটি উৎপন্ন হয়েছে وقع (ওয়াকাওয়া) শব্দ থেকে যার প্রকৃত অর্থ ধ্বংস প্রাপ্তি। এ ক্ষেত্রে مَوَقِعِ শব্দটির অর্থ হতে পারে ‘ধ্বংসপ্রাপ্তি স্থানে’। এবার দেকা যাক উদয়-অস্ত নিয়ে বিজ্ঞানের কি ভাবনা- বিজ্ঞানের ভাষায় এই মহাবিশ্বে উদয় – অস্ত বলে কোন ঘটনা নেই। মহা বিশ্বে সকল মহাজাগতিক বস্তু যার যার পথে সঞ্চরণশীল।
উদয় বলতে আমরা যেমন বুঝি কোন আলোকিত বস্তু অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আসা,আবার অস্ত বলতে যেমন বুঝি কোন আলোকিত বস্তু অন্ধকারে হারিয়ে যাওয়া- মহাকাশে কোন মহাজাগতিক বস্তুর বেলায়ই তেমনটা ঘটেনা। বাস্তবে যা ঘটে তাহল পৃথিবীর আহ্নিক গতির কারণে কোন আলোকিত বস্তু যখন আমাদের দৃষ্টি সীমায় আসতে থাকে তখন আমরা সেই আলোকিত বস্তুটিকে উদয়ের পথে বলি;আবার কোন এক সময়ে তা যখন আমাদের দৃষ্টিসীমা থেকে হারিয়ে যেতে থাকে তখন তাকে অস্ত যাওয়া বলি। আহ্নিক গতির কারণে প্রতি মুহুর্তে পৃথিবীর কোন না কোন স্থান থেকে এই উদয় অস্তের ঘটনা দেখা যায়। যেহেতু কোন বস্তুই প্রকৃতপক্ষে উদিতও হয়না অস্তও যায়না ফলে উদয়াচল বা অস্তাচল বলেও কোন সুনির্দিষ্ট স্থান নেই। আমাদের অবস্থানর প্রেক্ষিতে দিগন্তরেখায় যে দর্শনুভূতির সৃষ্টি হয় তাই হল উদয়-অস্ত।
শব্দ দু’টির শুধু ভাষাগত ব্যবহার হয়। মহাশূণ্যে এমন কোন ঘটনা বা স্থানের সন্ধান বিজ্ঞানের কাছে নেই। বিজ্ঞান শুধু জানে মহাজাগতিক বস্তুনিলয়ের সৃষ্টি এবং দ্বংস সম্পর্কে। মহাবিশ্বে সৃষ্টি প্রক্রিয়ার পাশাপাশি ধ্বংস প্রক্রিয়াও চলছে। তাই এ কথা বললে হয়তোবা অত্যুক্তি হবেনা যে, مَوَقِعِ শব্দের ভূৎপত্তিগত অর্থ ‘ধ্বংসপ্রাপ্তি’ হওয়াই বাঞ্চনীয় আর এ ক্ষেত্রে কাজি জাহান মিয়া কর্তৃক গৃহিত তরজমাই অধিকতর সামঞ্জস্যপূর্ণ (আল্লাহ্ই ভাল জানেন )।
وَإِنَّهُ لَقَسَمٌ لَّوْ تَعْلَمُونَ عَظِيمٌ
And indeed, it is an oath – if you could know – [most] great.
৫৬:৭৬ যদি তোমরা জানিতে,ইহা অবশ্যই মহা গুরুত্বপূর্ণ শপত।
সূত্র-ব্লাকহোল উইকিপিডিায়া,আলকোরআন দ্যা চ্যালেঞ্জ,বিভিন্ন ওয়েভ সাইট।
NGC1277তে রয়েছে এক দানবীয় কৃষ্ণগহ্বর
আন্তর্জাতীক এক জ্যোতির্বিদ দল এক কৃষ্ণ গহ্বর খুঁজে পেয়েছেন যা ছায়াপথ বিবর্তনের বর্তমান কাঠামোকে নাড়িয়ে দিতে পারে। এই অসাধারণ কৃষ্ণ গহ্বরটির উপস্থিতি লেন্টিকুলার ছায়াপথ NGC1277, তে পাওয়া গেছে। ছায়াপথ NGC1277, আমাদের পৃথিবী থেকে ২২০ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে পার্সিয়াস তারামণ্ডলে অবস্থিত।
এটি আকৃতি ও পদার্থ ভরে আমাদের মাতৃছায়াপথের ১০ শতাংশ। এই ক্ষুদ্র আকৃতি সত্যেও এর হৃৎপিণ্ডে অবস্থান নিয়েছে এক ভয়ঙ্কর কৃষ্ণ গহ্বর; যার পদার্থ ভর ১৭ বিলিয়ন সৌরভরের সমান এবং প্রস্থে সূর্যের চারিদিকে নেপচুনের কক্ষপথের ১১গুণ। অস্টিনে টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের Dr Karl Gebhardt বলেন,‘এটি প্রকৃতই এক অদ্ভূত গোলাকার ছায়াপথ, এর প্রায় সবটাই এক কৃষ্ণ গহ্বর। ’ তাছাড়াও সবচেয়ে বড় কৃষ্ণ গহ্বর দেখা গেছে দানবীক স্ফীতাকার ছায়াপথ ইলিপ্টিক্যালে। তবে,একটি ছায়াপথ ও ব্ল্যাকহোল যুগপথ বেড়ে উঠার বিষয়টি বুঝা খুবই কঠিণ।
সূধী পাঠক,উপরের সার্বিক আলোচনা থেকে যে বিষয়টি পরিস্কার হয়ে এসেছে তা হল মহাবিশ্ব শুধু সূতিকাঘারই নয়,এটি ধ্বংসযজ্ঞেরও এক মহাক্ষেত্র। এই বিচিত্র প্রকৃতির নিয়ন্ত্রা সৃষ্টির সূচনা থেকেই প্রোথিত করে দিয়েছেন ধ্বংসের মহা সুড়ঙ। আমরা বৈজ্ঞানীক আলোচনার পাশাপাশি ধর্মীয় চেতনা থেকেও দেখেছি সৃষ্টির শতধারায় ধ্বংসও অনিবারয। আমরা বৈজ্ঞানিক আলোচনায় দেখেছি ব্লাকহোল অভিকর্ষের প্রবল প্রতাপে সকল বস্তুভরকে গলাধঃ করণ করে তার নিজের উদর পূর্তী করে। মহাজগতের বিশাল সম্ভার অন্তরালে হারিয়ে যায়।
এখন প্রশ্ন হল,এই অসীম ভর জড়ো হয়ে অদৃশ্য হয়ে যায় কনে? বিজ্ঞান বলছে,ব্লাকহোলের করালগ্রাস থেকে আলো বিমুক্ত হতে পারেনা,তাই তাকে দেখা যায়না। কিন্তু আমাদের মনে যে আরও একটি চিন্তা উদিত হচ্ছে; এমনওতো হতে পারে যে,এই ধ্বংস প্রক্রিয়ায় জাগতিক বস্তু ভর কৃষ্ণগহ্বরে পরে রূপান্তরিত হয়ে যায় কৃষ্ণশক্তিতে, যা তার আদী রূপ?
চাইলে আমার বাবার ব্লগটি ঘুরে আসতে পারেন।
http://sciencewithquran.wordpress.com
অথবা,
hccme.tk
________________________________________
আমি ফেসবুক এ ,
https:www.facebook.com/hridoy.khandakar1
সূধী পাঠক,
বই পড়ুন;বই আপনার চিত্তকে সমৃদ্ধ করবে। জ্ঞানের আলো আপনাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে অনেক দূর,আপনার মনের অন্তস্থল থেকে বেরিয়ে আসবে নতুন নতুন তত্ত্ব,যা পৃথিবীর জ্ঞানভাণ্ডারকে পরিপূর্ণ করে তুলবে!
আমার বাবার লেখা কিছু বই,
১. পবিত্র কোরআনের গাণিতিক সমন্বয়
২. পবিত্র কোরআনের আলোকে আধুনিক বিজ্ঞান
৩. রহস্যময় আকাশ
৪. নদির গল্প
৫. মুক্তিযোদ্ধার ডায়েরী
৬. মুক্তির স্বাদ
৭. টোকাই
গ্রন্থকার
আব্দদুল আজিজ খন্দকার
প্রাপ্তিস্থান
জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র
২১ শে বই মেলা-২০১৪,
__________________________________________--
বিদায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।