‘রাস্তাঘাটগুলোর অবস্থা তো আসলেই খারাপ!’ শিশির বলল।
‘হুম, তোমাকে তো আগেই বলেছি। আসলেই যাচ্ছে-তা অবস্থা। এখানে বড় কোন খেলাধূলা হলে, অথবা এমপি’র ইচ্ছা হলে ঠিক করে, নয়তো এরকম ভাঙাচোরাই থাকে,’ ছোট একটা পাথরের টুকরায় কিক করতে করতে বলল শিশু।
শিশু আর শিশির, ভার্সিটির ফ্রেন্ড এবং রুমমেট।
উইকএন্ডে শিশির, শিশুর বাড়ি নারায়নগঞ্জের ফতুল্লায় বেড়াতে এসেছে। শিশিরের কাছে সম্পূর্ণ জার্নিটাই কেমন যেন ঝাপসা আর আর অস্পষ্ট লাগছে। কিছুটা অসুস্থবোধ করছে সে আসলে।
ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলি স্টেডিয়াম থেকে বের হয়ে হাঁটছে তারা। সূর্যটা পশ্চিম আকাশে হেলে পড়েছে অনেকক্ষণ আগেই।
তারা ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে উঠে হাঁটতে লাগল।
‘যায়গাটাকে তো একদম ডাস্টবিন বানিয়ে ফেলেছে!’ অবাক হল শিশির।
আসলেই এ যায়গাটা ময়লা ফেলে ফেলে বিশাল স্তুপ বানিয়ে ফেলেছে। শিশির ভেবে পায় না, স্টেডিয়ামের এত কাছে এরকম ময়লার স্তুপ এখানকার ইমেজ কতটা নষ্ট করছে! মানুষজন কি গাধা নাকি? এ সামান্য বিষয়টা বুঝতে পারে না? ভাবল শিশির।
নাকেমুখে রুমাল চাপা দিয়ে তারা যখন জালকুড়ির দিকে হাঁটছে, সূর্য তখন তাদের বিদায় জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
‘আচ্ছা শিশু, ফতুল্লার মধ্যে এটাই কি সবচেয়ে উন্নত যায়গা?’ শিশির অনেক কষ্টে হাঁসি গোপন করল।
শিশিরের কথার মধ্যে যে ঠাট্টার সুর ছিল শিশুর তা বুঝতে দেরি হল না। সে বলল, ‘আসলে একটা সময় এ যায়গা একরকম হন্টেড ছিল। এমন কি গরু-ছাগল দিনের বেলাতেও আসত না এখানে। স্টেডিয়ামটা বানানোর পরে যায়গাটা আসলে বেশি উন্নত হয়েছে।
’
‘তা-ও বা কি উন্নতি হয়েছে? জমির দাম কত এখানে?’
‘কি জানি? জানি না তো! কত আর হবে? ২৫-৩০ লাখ হবে হয়তো শতাংশ,’ আন্দাজ করল শিশু।
‘মাত্র! এরকম জায়গা আমাদের ময়মনসিংহে হলে শতাংশ কমপক্ষে ৮০ লাখ হত,’ মুখে একটা কৃত্তিম গাম্ভির্য ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করেও ব্যার্থ হল শিশির।
শিশিরের দিকে তাকাল শিশু। স্ট্রাইপ শার্ট আর কালো প্যান্ট পরা মোটাসোটা এই পড়–য়া ছেলেটা মাঝেমধ্যে এমনসব বাচ্চাদের মত মজা করে না! শিশুর মাঝেমধ্যে মনে হয় শিশু নামটা তার না হয়ে শিশিরের হওয়া উচিৎ ছিল। বাচ্চা শিশির!
শিশির আশ্চর্য হয়ে খেয়াল করল, শিশু মনে মনে কি ভাবছে তা সে বুঝতে পারছে! শিশু তার কথাকে বাচ্চাদের মত মনে করছে।
সে মনে মনে তাকে বাচ্চা শিশির বলেছে!
শিশিরের মাথাটা একটু ব্যাথা করছে। কেমন যেন ঝিমধরা অনুভূতি। সে শিশুকে বলল, ‘মাথাটা ভার ভার লাগছে। চল, তোমাদের বাসায় চলে যাই। ’
শিশু তার কথা না শোনার ভান করে বলল, ‘চল, তোমাকে একটা বিশেষ চা খাওয়াব।
ওটা খাওয়ার পরে আশা করি তোমার মাথা ব্যাথা কমে যাবে। ’ আর মনে মনে বলল, মোটা শরীর নিয়ে হাঁটতে কষ্ট হচ্ছে তা না বলে বলছ মাথা ব্যাথা, না? দাঁড়াও তোমাকে আরও হাঁটাচ্ছি।
মনে মনে বলুক, আর জোরে জোরে বলুক, শিশুর প্রতিটি কথাই বুঝতে পারছে শিশির। শিশু তাকে ইচ্ছে করে হাঁটাচ্ছে, আর এখন কোথায় না কোথায় নিয়ে যাচ্ছে চা খাওয়াতে! শিশির আরও কুকড়ে গেল। তবে শিশু বুঝতে পারছে না তার আসলেই মাথা ধরেছে।
জালকুড়ির মেইন রোড থেকে নিচে নেমে এল তারা। হেঁটে কিছুদূর যেতেই শিশিরের মন মাথা ব্যাথা থেকে অন্য দিকে সরে যেতে থাকে। রাস্তার দু-পাশে দোকানপাট কমে গিয়ে এখন শুধু খালি যায়গা। আর রাস্তাটাও কখন পীচ-ঢালাই রাস্তা থেকে মাটির রাস্তা হয়ে গিয়েছে খেয়ালই করে নি সে। রাস্তার দুপাশে একটি-দুটি করে গাছ, আর গাছের পর থেকে দিগন্ত পর্যন্ত সবুজ মাঠ, তার মাঝেমাঝে দু-একটা জলা দেখে শিশিরের মনটা ভাল হয়ে গেল।
দূরে স্টেডিয়ামের চারটা ফ্লাডলাইট-ই দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে দুটো এখন জ্বলছে। কেন কে জানে? সন্ধ্যার ঠিক আগ মুহূর্তটাকে মোটের উপর অসাধারণ লাগছে শিশিরের কাছে।
অনেকদূর হাঁটার পর শিশির যখনি জিজ্ঞেস করবে আর কত দূর, তখনি শিশু বলল, ‘এইতো আমরা এসে গিয়েছি। এ যায়গার নাম পুলপাড়।
এখানকার মালাই-চা খুবই বিখ্যাত। সারা ফতুল্লার মানুষ এখানে আসে চা খেতে। ’
শিশির চারদিকে তাকিয়ে দেখল। এক সারিতে কয়েকটা চায়ের দোকান, পাশে দুটা রেস্টুরেন্ট আর একটা ফার্মেসি। এই চায়ের দোকানের পাশে ফার্মেসির প্রয়োজনীয়তা কি? এখানের চা খেলে সাথে সাথে ওষুধ খেতে হয় নাকি? মনে মনে হাঁসল শিশির।
পাশে একটা ছোট্ট ব্রীজ চোখে পড়ল তার। ব্রীজের জন্যই কি এর নাম পুলপাড়, ব্রীজপাড় হওয়া দরকার ছিল তো। তবে তার চোখ আটকে গেল ব্রীজের নিচে ছোট্ট একটা অপ্রশস্ত খালের দিকে। যার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে কুচকুচে কালো পানি।
‘এটা কোন খাল নাকি? এদিকে কোন নদী তো দেখলাম না।
এটা কোথা থেকে এল? আর পানি এরকম কালো কেন?’
শিশিরের কথা শুনে দাঁত বের করে হাঁসল শিশু। ‘আসলে এটা একটা ড্রেন। এদিকে অনেকগুলো ছোটছোট ইন্ডাস্ট্রি আছে তো, ওগুলোর বর্জ্য নিষ্কাশিত হয় এটা দিয়ে। অবশ্য ড্রেন হিসেবে অনেক বড়। এর উপর দিয়ে ব্রীজও করতে হয়েছে।
সম্ভবত অনেক বছর আগে এখানে পুল ছিল। তাই নাম হয়েছে পুলপাড়। ’
চোখমুখ কুঁচকে আরেকবার ড্রেনটার দিকে তাকিয়ে শিশির শিশুর সাথে একটা দোকানে বসল। ডেকচিতে করে দুধ জ্বাল দেয়া হচ্ছে। শিশু দু কাপ মালাই চা অর্ডার করল।
যদিও শিশিরের ইচ্ছে হল চায়ের সাথে কিছু টা খাওয়ার, কিন্তু কিপ্টা শিশু আর কিছুই নিল না। তবে চা’টা বেশ ভাল হয়েছে। শিশির মনে করতে পারল না এরকম সুস্বাদু চা সে শেষবার কবে খেয়েছে।
তাদের চা পান শেষ হতে হতে চারদিক মোটামুটি অন্ধকার হয়ে এল। চায়ের দোকান থেকে বেড়িয়ে তারা আবার হাঁটতে লাগল।
শিশু বা দিকের একটা ছোট রাস্তায় নামতে লাগলে শিশির জিজ্ঞেস করল, ‘এদিকে কেন যাচ্ছ অন্ধকারের মধ্যে?’
‘এখানে একটা চমৎকার যায়গা আছে। চারদিকের ভিউটা অসাধারণ। আমি মাঝেমধ্যেই এখানে এসে বসে থাকি। তুমিও চল, আমি নিশ্চিত, তোমার পছন্দ হবে যায়গাটা। ’
শিশুর এসব ফালতু কাজকর্মে শিশির মহাবিরক্ত হল।
তার প্রচন্ড বলতে ইচ্ছে হচ্ছে, ভাবের গপ্পো করো মিয়া? ততক্ষণে অনেকদূর চলে গিয়েছে শিশু। তাই কিছুই না বলে সেদিকে হাঁটতে থাকল শিশির। পাঁচ মিনিট কোন কথা না বলেই শিশুর পাশে পাশে হাঁটতে লাগল সে। অবশেষে শিশু একটা চারফুট উচু দেয়ালে বসে বলল, ‘বসো। ’
শিশির কোন কথা না বলেই শিশুর গা ঘেষে বসল।
‘চাঁদটা কোথায়? কোথাও দেখছি না তো!’ শিশু উপরের দিকে তাকিয়ে বলল।
শিশির আকাশের দিকে তাকাল। আকাশে চাঁদ নামক কোন বস্তু দেখা যাচ্ছে না। হঠাৎ করেই পুরো আকাশ মেঘে ঢেকে গিয়েছে। আর দক্ষিণ দিকে অনেক দূরে কোথাও বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে।
শিশির আশেপাশে দেখার চেষ্টা করল। অন্ধকারে তেমন কিছু দেখা না গেলেও তার বুঝতে সমস্যা হল না যে আশেপাশে কোন বাড়িঘর নেই। একপাশে ঘন গাছপালার একটা বাগানের মত যায়গা। আর তাদের পাশেই বাউন্ডারি করা একটা বিশাল যায়গা। এছাড়া অন্ধাকারের মধ্যে সে যা দেখতে পাচ্ছে তা হল খোলা বিস্তীর্ণ মাঠ।
অনেক দূরে দু একটা ইন্ডাস্ট্রির হলুদ বাতি দেখা যাচ্ছে।
সত্যি বলতে অনেকক্ষণ আগ থেকেই শিশিরের ভয় করছে। সেটা এরকম একটা অদ্ভূতুরে যায়গায় এসে আরও বেশি করতে লাগল। শিশির শিশুর আরেকটু কাছাকাছি চেপে বসার চেষ্টা করল।
‘শিশু দেখেছ? বৃষ্টি পড়ছে?
‘কোথায়?’
‘এই যে আমার হাতে একফোঁটা পড়ল।
’
শিশিরের কথা শেষ না হতেই কাছাকাছি কোন এক যায়গায় প্রচন্ড শব্দে বাজ পড়ল। শব্দে শিশির যতটা না ভয় পেয়েছে তারচেয়ে অনেক অনেক বেশি ভয় সে পেল তার হাতের দিকে তাকিয়ে। ধবধবে সাদা আলোয় সে স্পষ্ট দেখতে পেল বৃষ্টির যে ফোঁটা তার হাতে পড়েছে সেটা পানির ফোটা না, টকটকে লাল রক্তের ফোঁটা। সে আতঙ্কে অস্থির হয়ে উঠল। কিন্তু শিশুকে কিছুই বলল না, পাছে শিশু বিশ্বাস না করে।
অবশ্য বিশ্বাস করার কথাও না। এটা নিশ্চয়ই হেলুসিনেশন, নিজেকে বলল শিশির।
শিশির একরকম স্তম্ভিত হয়ে বসে রইল। নিজের মনকে বোঝানোর ব্যার্থ চেষ্টা চালাল; কোন লাভ নেই। অনেক কষ্ট করে তার মুখ থেকে বেরোল, ‘চল শিশু, বাসায় চলে যাই।
’
‘চল,’ বলল শিশু।
তারা দুজন উঠে দাঁড়াতে যাবে এমন সময়ে হঠাৎ করে বৃষ্টি শুরু হল। বিড়াল-কুকুর টাইপ বৃষ্টি।
‘হায় হায় শিশু, এটা কি হল? বৃষ্টি তো শুরু হয়ে গেল!’
‘তো কি হয়েছে? চল ভিজি। ’
‘পাগল হয়েছ, ভিজলে জ্বর হবে না?’
‘আরে ধুর, বৃষ্টিতে ভিজলে জ্বর হয় নাকি? কিচ্ছু হবে না।
’
শিশির করুণ কণ্ঠে বলল, ‘ভেজা একেবারেই অসম্ভব। আম্মু বলেছে ভিজলে জ্বর হবে। জ্বর হবেই। আমি ভিজতে পারব না। তুমি একটা ব্যাবস্থা কর তারাতারি।
’
শিশিরের কথা শুনে শিশুর প্রচন্ড হাঁসি পেল। এই বুড়ো বয়সে বাচ্চাদের মত কথা বললে হাঁসি আসাটাই স্বাভাবিক। শিশু বলল, ‘ঠিক আছে, আসো। এদিকে কিছু যায়গা আছে, ওখানে গিয়ে বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচার চেষ্টা করব চল। ’
শিশির মাথাগুঁজার মত কোন যায়গাই দেখতে পেল না।
তবুও শিশু হাঁটতে লাগলে সে-ও হাঁটতে লাগল। শিশু সেই বাউন্ডারি করা যায়গাটার মধ্যে ঢুকে পড়ল।
বাউন্ডারির মধ্যের যায়গাটা বড়বড় ঘাসে ঢাকা। কিছুকিছু যায়াগায় ঘাস নেই। আর কিছু কিছু যায়গায় ছোটবড় নানা গর্ত।
শিশির অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখল শিশু এরকম একটা গর্তের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে। অর্ধেকটা ঢুকে হাঁসি হাঁসি মুখে তাকে হাতের ইশারায় ঢুকে যেতে বলল। শিশির ওই গর্তের কাছাকাছি যেতেই তার চোয়াল ঝুলে পড়ল। এটা একটা কবর, আর সে এখন কবরস্থানে। কিন্তু আরও বেশি অবাক হল শিশু একটা কবরের মধ্যে ঢুকে পড়ল! ইতোমধ্যেই শিশু পুরোপুরি ঢুকে গিয়েছে কবরের মধ্যে।
কবরের উপরে ভাঙাচোরা বাঁশ বের হয়ে আছে। আতঙ্কে, ভয়ে শিশির দুচোখে অন্ধকার দেখতে লাগল। সে বুঝতে পারছে না তার কি করা উচিৎ। সে কি ঐ কবরে ঢুকে যাবে, নাকি বাইরে দাঁড়িয়ে থাকবে? নাকি ঝেড়ে দৌড় দিবে? অন্ধকার, বৃষ্টি, ব্যাঙের ডাক, বাতাসের শব্দ আর হঠাৎ হঠাৎ বজ্রপাতের শব্দ তার মাথাটাকে একেবারে ফাঁকা করে দিয়েছে। একরকম সম্মোহিতের মত কবরে ঢুকে গেল শিশির।
ভেতরের যায়গা খুবই ছোট। হামাগুড়ি দেয়া ছাড়া উপায় নেই। অন্ধকারে কিছুই দেখার জো নেই। তবে শিশু যে এখানে নেই তা শিশির খুব ভাল করেই বুঝতে পারল। আতঙ্কে চিৎকার দিতে চাইল শিশির।
গলা দিয়ে কোন আওয়াজ বেরোচ্ছে না। তার ডানপাশে একটা বড়সড় ছিদ্র দিয়ে আবছা আলো দেখা যাচ্ছে। আজব! আলো কোথা থেকে আসছে? সে ভাবল হয়তো শিশু ওখানে গিয়ে ম্যাচ-ট্যাচ জ্বেলেছে। কোনমতে সে ঐ ছিদ্রের দিকে হামাগুড়ি দিতেই তার বুকের সাথে কি যেন লাগল। কয়েক মুহূর্ত সময় লাগল তার বুঝতে এটা একটা কঙ্কাল।
চিৎকার দিতে দিতে আর হামাগুড়ি দিতে দিতে পাশের কবরে চলে এল শিশির। আলোটা এখান থেকেও আসছে না। এ কবরের পাশেও ছিদ্র আছে। শিশির পড়িমড়ি করে কয়েকটা কবরের ভেতর দিয়ে গিয়ে শেষমেষ আলোর সন্ধান পেল।
একটা বড়সড় ঘরে দাঁড়িয়ে আছে এখন শিশির।
ঘরের মাঝখানে বড়সড় একটা টেবিল। টেবিলের উপরে একটা মোমবাতি জ্বলছে। চারদিকের দেয়ালে ঝুলছে বেশ কয়েকটা কঙ্কাল। আর টেবিলের উল্টোদিকে একটা রিভলভিং চেয়ারে কেউ একজন তার দিকে পিঠ দিয়ে বসে আছে। নিশ্চয়ই শিশু, ভাবল শিশির।
এরমধ্যে অনেক ভয় পেয়েছে। তাই কিছু না ভেবেই অবয়বটার দিকে এগিয়ে গেল শিশির।
‘শিশু, তুমি এটা...’
শিশিরের কথা শুরু করতেই অবয়বটা তার দিকে তাকাল। একবার মাত্র অবয়বটার মুখের দিকে তাকিয়েই শিশিরের রক্ত হিম হয়ে গেল। সে যা দেখেছে তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না।
সঙ্গে সঙ্গে সে চোখ বন্ধ করে আর্তচিৎকার শুরু করল।
‘কি হয়েছে, কি হয়েছে শিশির?’ সৌরভের ঘুম মিশ্রিত কণ্ঠ শুনে চোখ খুলল শিশির। কয়েক মুহূর্ত সময় লাগল সে কোথায় আছে তা বুঝতে। সে তার বাসায় বিছানার উপর শুয়ে শুয়ে স্বপ্ন দেখছিল - এটা ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে শিশিরের।
‘এতরাতে চিৎকার করছ কেন? দুঃসপ্ন দেখেছ নাকি?’ তার রুমমেট সৌরভের কথা শুনে একটু ধাতস্থ হওয়ার চেষ্টা করল শিশির।
‘হ্যা, না মানে দুঃসপ্নই দেখছিলাম, ভয়ঙ্কর,’ কথাগুলো বলতে বলতে শিশিরের চোখ চলে যায় তার আরেক রুমমেট শিশুর খাটের দিকে। অদ্ভূত ভঙ্গিতে ঘুমিয়ে আছে শিশু। সাথেসাথেই শিশির চোখ সরিয়ে নিল। ‘কোন সমস্যা নেই, লাইট নিভিয়ে দাও,’ সৌরভকে বলে কাথামুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়ল শিশির।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।