আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সোনালী ব্যাংক লুটের মামলা র‌্যাবে পাঠানোর নির্দেশ

কিশোরগঞ্জের রথখলায় সোনালী ব্যাংকের প্রধান শাখা থেকে ১৬ কোটিরও বেশি টাকা চুরির ঘটনায় মামলার তদন্ত ভার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে র‌্যাবের কাছে হস্তান্তর করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক এবং বিচারপতি এ বি এম আলতাফ হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। স্বরাষ্ট্রসচিব ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

গত ২৬ জানুয়ারি সোনালী ব্যাংকের শাখায় সুড়ঙ্গ খুঁড়ে ভল্ট ভেঙে ১৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা চুরি করে সোহেল রানা ওরফে হাবিব। এ ঘটনায় ২৮ জানুয়ারি হাবিব ও তার সঙ্গে থাকা ইদ্রিস মিয়া নামের আরও একজনকে আটক করা হয়।

তাদের কাছ থেকে পাঁচ বস্তা টাকাও উদ্ধার করা হয়। ওই টাকা চুরির ঘটনায় জঙ্গি সম্পৃক্ততার বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ সংবাদ যুক্ত করে র‌্যাবের মাধ্যমে তদন্ত করার নির্দেশনা চেয়ে জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ হাইকোর্টে রিট আবেদন করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই অর্থ চুরির ঘটনায় জঙ্গি সম্পৃক্ততার বিষয় তদন্ত এবং হোতাদের আইনের আওতায় আনতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তার কারণ জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। দুই সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্রসচিব, আইজিপি, র‌্যাবের মহাপরিচালক, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার, কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার ও কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে এ রিট দায়ের করা হয়। রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিত রায়।

উদ্ধার হওয়া টাকা ব্যবহার করতে পারছে না ব্যাংক : কিশোরগঞ্জে সোনালী ব্যাংকের টাকা লুটের পর উদ্ধারকৃত টাকা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ব্যবহার করতে পারছে না। আদালতের কোনো নির্দেশনা না থাকায় এ টাকা আপাতত কোনো কাজে লাগানো যাচ্ছে না বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে সোনালী ব্যাংক কিশোরগঞ্জ শাখার ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক এ কে এম ফজলুল হক জানান, উদ্ধারকৃত টাকা ঢাকার মতিঝিল স্থানীয় শাখায় সেইফ ডিপোজিট করা আছে। কোর্টের নির্দেশনা ছাড়া আমরা এ টাকা ব্যবহার করতে পারছি না। তবে এতে গ্রাহকদের কোনো সমস্যা হবে না বলে তিনি জানান। এদিকে ঘটনার পর ব্যাংকের ব্যবস্থাপক হুমায়ূন কবীর ভূঁইয়াসহ ব্যাংকের ১২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেওয়া হলেও এর মধ্যে তিনজনকে এখনো কোনো দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। তারা হলেন ব্যবস্থাপক হুমায়ূন কবীর ভঁূইয়া, ভল্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুজন যুগ্ম জিম্মাদার হাসান আহমেদ মঈন (সাধারণ) ও মো. মুহসেনুল হক (ক্যাশ)।

এ বিষয়ে ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক বলেন, তারা শুধু ব্যাংকে এসে হাজিরা দিচ্ছেন। তাদের এ শাখায় রাখা হতে পারে, আবার অন্যত্র বদলিও করা হতে পারে। ঊধর্্বতন কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেবেন বলে তিনি জানান। উল্লেখ্য, বাহির থেকে সুড়ঙ্গ কেটে কিশোরগঞ্জ সোনালী ব্যাংক থেকে ১৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা লুট হয়। গত রবিবার ঘটনাটি নজরে পড়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের।

এ ব্যাপারে ব্যাংকের ডিজিএম শেখ আমানুল্লাহ বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে ঢাকা থেকে র‌্যাব গত মঙ্গলবার বিকালে ১৬ কোটি ১৯ লাখ ৫৬ হাজার ৬৪ টাকাসহ সোহেল ওরফে ইউসুফ ও তার ভাই ইদ্রিস আলীকে গ্রেফতার করে। এ ছাড়া সোনালী ব্যাংক নিকলী শাখার চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী আবু বকর সিদ্দিককেও পুলিশ গ্রেফতার করে। এ তিনজন বর্তমানে পুলিশি রিমান্ডে রয়েছেন। টাকা লুটের ঘটনায় ব্যবহৃত কাভার্ড ভ্যান ও দুজন হেলপারসহ ট্রাকটিও আটক করেছে পুলিশ।

অন্যদিকে পুলিশ ঢাকা থেকে আরও আড়াই লাখ টাকা উদ্ধার এবং ঘটনার মূল হোতা সোহেল ওরফে ইউসুফের স্ত্রীকেও আটক করেছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।