আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আবারো ল্যাব এইড স্ক্যানডাল (ভিডিও সহ)

ও পথ মাড়িও না যে পথ তুমি চেননাকো----

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে একটি ভিডিও নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, একটি হাসপাতালের সিসিইউ কক্ষে একজন যুবককে কয়েকজন ধরে পেটাচ্ছেন। তানভীর খান নামের এক যুবক ১ মিনিট ৮ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি শনিবার ইউটিউবে আপলোড করেছেন। তিনি জানিয়েছে, ঘটনাটি নগরীর অন্যতম ‘আধুনিক’ হাসপাতাল ল্যাবএইডে ঘটেছে। সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন তোলায় হাসপাতালের লোকজন তাদের ওপর হামলা করেছে।

তানভীর অভিযোগ করেছেন, অনেক টাকা খরচ করে ল্যাবএইডে তার দাদাকে ভর্তি করান তিনি। সরকারি হাসপাতালে না গিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে যাওয়ার একটাই কারণ, সেটা হলো একটু ভালো মানের চিকিৎসা সেবা পাওয়া। কিন্তু সেখানে ভর্তি হওয়া রোগীর মৃত্যুর বিষয়টি মনিটরে দেখে বুঝতে পারেননি সেখানে কর্তব্যরত নার্স। উচ্চমূল্যে চিকিৎসা সেবা বিক্রি করা ল্যাবএইডের সিসিইউ রুমে নার্সের জ্ঞানের বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। ভিডিও আপলোড করে তানভীর লিখেন, “যখন সরকারি হাসপাতালের বারান্দায় রোগীরা চিকিৎসা পায় না, তখন আমার দাদা ল্যাব এইড হাসপাতালের সিসিউতে চিকিৎসাধীন।

আমার দাদা মারা যান ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪| যা প্রথম আমার চাচা লক্ষ করেন। কিন্তু কর্তব্যরত নার্স বিষয়টি বুঝতে পারেননি। যখন আমার চাচা কর্তব্যরত নার্সকে জিজ্ঞেস করেন, হার্টবিট মনিটরের সোজা দাগের কারণ কী? তখন নার্স বলেন, এমনটি হতে পারে, কারণ রোগী ঘুমাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর দায়িত্বরত ডাক্তার বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে জানান, রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক এবং তাকে লাইফ সাপোর্ট দিতে হবে। ” তিনি আরো বলেন, “এই কথার সুত্র ধরে আমার চাচা তখন তাদের সেবার মান সম্পর্কে প্রশ্ন তোলেন এবং বলেন আত্মীয়-স্বজনরা কি ডাক্তারকে রোগীর মৃত্যু সম্পর্কে অবহিত করবে, নাকি ডাক্তার তাদেরকে অবহিত করবে? কেনও একজন অদক্ষ নার্সকে সেখানে সিসিইউ-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রাখা হয়েছে, যে কিনা বলে হার্টবিট এর সোজা দাগ মানে রোগী ঘুমাচ্ছে! কেনো হঠাৎ লাইফ সাপোর্ট দরকার হল? এতো খরচ করার পরেও কি আমরা আপনাদের থেকে ভাল সেবা আশা করতে পারি না??? জবাবে ডাক্তার বলেন, তাদের আরো অনেক রোগী আছে।

আর যদি তাদের নার্স নিয়ে আমাদের এতো সমস্যা থাকে, তাহলে আমরা যেন নিজেরাই নার্সের ব্যবস্থা করি। তারপর আমাদের সিসিউ থেকে বের করে দেয়া হয়। ” তানভীর বলেন, ”কিছুক্ষণ পর আমি ও আমার এক বন্ধু সিসিইউতে গেলাম আমার দাদার ছবি তুলতে। ক্যামেরা দেখে তারা আমাদেরকে মারতে শুরু করল এবং আমাদের ক্যামেরা ভাঙ্গার চেষ্টা করলো। তারপর পুলিশ এবং ল্যাবএইডের একজন কর্মকর্তা আসলেন।

তারা আমাদের হুমকি দেন, যদি আমরা পুলিশের কাছে মামলা করি, তবে তারাও আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন। ” দাদার শেষকৃত্য অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা নিয়ে ব্যস্ততার কারণে ল্যাবএইডের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে তানভীর উল্লেখ করেন। এ ব্যাপারে ল্যাবএইডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. শামীমের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। ল্যাব এইডের বিরুদ্ধে এর আগেও বহু অভিযোগ উঠেছে।

ভুল চিকিৎসা ও গাফিলতির কারণে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে অনেকবার। তাদের ভুল চিকিৎসায় মারা যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক সঙ্গীত বিভাগের অধ্যাপক ড. মৃদুল কান্তি। পরে ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ ৫০ লাখ টাকা দিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করে। ২০১০ সালের প্রথমদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান মাসুম ল্যাব এইডের ‘ভুল চিকিৎসার’ শিকার হন। পরবর্তিতে পায়ের সামাণ্য আঘাত থেকে ক্যান্সার মাসুমের পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।

এই ঘটনায় ২০১৩ সালের শেষের দিকে ঢাবির শিক্ষার্থীরা ল্যাবএইড ঘেরাও করে আন্দোলন করে। পরবর্তিতে সুমনকে ল্যাবএইডের পক্ষ থেকে সিঙ্গাপুর নিয়ে যাওয়ার আশ্বাস এবং বাঁচানো সম্ভব না হলে পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতার জন্য একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা (৩০ লাখের নিচে নয়) দেয়ার ঘোষণা দেয় ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ। মানুষের কাছে সবচেয়ে মূল্যবান তার জীবন। আর সামর্থ থাকলে কেউ প্রিয়জনের চলে যাওয়া সহ্য করতে পারেন না। অসুস্থতায় যখন প্রিয় মানুষটির জীবন ওষ্ঠাগত, তখন টাকার কথা চিন্তা না করে রোগীকে সারিয়ে তোলাটাই পরিবারের কাছে মুখ্য হয়ে ওঠে।

আর এই সুযোগটাই নেয় বেসরকারি অনেক হাসপাতাল। অতিরিক্ত টাকা নেয় তারা। কিন্তু তারপরও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবাও দিতে ব্যর্থ হাসপাতালগুলো। মাঝে-মধ্যেই ভুল চিকিৎসা বা অবহেলার খবরগুলো আমাদের সামনে ভেসে ওঠে। আর এ বিষয়ে বরাবরই চুপ থাকে প্রশাসন।



ভিডিও Click This Link


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।