প্রিয় মাধবীলতা... নাটক করতে করতে একটা সময়ে জীবনের কিছু সত্য নিজের অগোচরেই প্রকাশ পেয়ে যায়। মাধবের কবিতা মাধবের জীবনের কথা বলে, মাধবের আড়াল করা সত্যের কথা বলে। মাধব কি জেনে বুঝেই সত্যগুলো কবিতার ভাষায় প্রকাশ করছে নাকি সব ঘটে যাচ্ছে অবচেতন মনে। শেষ দুইদিন কোন চিঠি লিখেনি মাধব তবে চিঠি লিখতে খুব ইচ্ছে করছিল তার। হয়ত চিঠিতে কি লিখবে সেটা বুঝে উঠতে পারছিল না বলেই শেষ বিকেলে আর কাগজ কলম নিয়ে বসা হয়নি।
সময় মোটেও ধীরে চলছে না তবে মাধব, তামান্না ও আকাশীর সময় যেন ফুরোতে চায় না আর তাই তামান্না ঘুম ঘুম চোখে পড়ালেখা করার চেষ্টা করে, আকাশী রান্নার রেসিপি নিয়ে গবেষণা করে আর মাধব কবিতা লেখার বিষয় হাতাড়াতে থাকে। তবে একজনের সময় সবচেয়ে মধুর কাটছে, তিনি মাসুম সাহেব। মিরপুর থেকে কষ্ট করে তার মেয়েবন্ধু দেখা করতে এসেছেন আর তিনি তাকে নিয়ে এক আনন্দময় দুপুর পার করছেন। আসলেই কি তাদের সময়টা আনন্দময় কাটছে নাকি এটা মাধবের দৃষ্টিতে এক বাহ্যিক ধারণা ছাড়া আর কিছুই নয়।
নুরিনের লেখা কবিতাটি মাধব পড়েছে, খুব সহজভাবে নুরিনের অনুভূতির প্রকাশ মাধবের অসম্ভব ভাল লেগেছে।
বন্ধুদের লেখা পড়ে সেখান থেকে নিজের আত্মাকে প্রশান্তি দেওয়ার মত অনেক কিছুই মাঝেমাঝে খুঁজে পাওয়া যায়। একসময় শারমীনের লেখাগুলো মাধবকে অনেক ভাবাত, আজকাল শারমীনের নতুন লেখা আর সে পায় না তবে শায়মার লেখাগুলো এখনো নিয়মিত বাংলা ব্লগে সে পেয়ে থাকে। শায়মা অসম্ভব সুন্দর লেখে, ওর ‘খোকা ভাই” সিরিজটা মাধবের অনেক প্রিয়।
ভাবনার রাজত্বে কত কথাই তো ভাবা যায়, কত কথা, কত মানুষের মুখ ভাবনায় বারবার আসে তারপরেও একটা সময়ে সবাইকে কি আমরা মনে রাখতে পারি কিন্তু মাধব কিভাবে যেন সবাইকে মনে রাখে, হয়ত সবাইকে সে মনে রাখতে চায় না কারণ কেউ তো মাধবকে মনে রাখেনি তারপরেও মাধবের লেখা কবিতাগুলো তাকে এক একটা মুখের কথা মনে করিয়ে দেয়, সেই মুখগুলো না হয় মাধবকে ভুলে গিয়েছে কিন্তু কবিতাগুলো তো মাধবের এক একটি নিষ্পাপ অনুভূতির সাক্ষী আর তাই একটা সময়ে মাধব না থাকলেও তার এই শব্দ সাক্ষীগুলো আমজনতার কাছে মাধবের কবি পরিচয়টি তুলে ধরবে।
সকাল থেকে বিকাল হয়, সপ্তাহে ছয়দিন মাধব, আকশী ও তামান্না অপেক্ষায় থাকে এই পড়ন্ত বিকালটির জন্য, বাড়িতে ফেরার তীব্র আকাঙ্খা কাজ করতে থাকে দুপুরের পর থেকেই।
বাড়ি ফিরে হয়ত তেমন কোন কাজ নেই মাধবের, তারপরেও ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে আরামবোধ করে, তামান্নার হয়ত নিজের পড়ার টেবিল ও রান্নাঘর দুটো সামলাতে হয় আর আকাশী ঘরে ফিরে সারাদিন পর মেয়ের মুখ দেখে আনন্দে আহলাদি হয়।
এভাবেই নিত্য দিন সময় পার হয় আমাদের, জীবন চলতে থাকে জীবনের নিয়মে আর মাধবের কলম চলতে থাকে তার অনুভুতিগুলোর তেষ্টা মেটাতে।
২৩। ০১। ২০১২
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।