কাল ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেটাঙ্গনের আলোচিত এক দিন। কালই ঘটেছে দুই দুটি 'বিশেষ' ঘটনা। প্রথমত, বহু প্রতীক্ষিত বিপিএল কেলেঙ্কারির আংশিক রায় এবং দ্বিতীয়ত, ফতুল্লায় এশিয়া কাপে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভারতের মুখোমুখি টাইগাররা।
খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামের প্রেসবঙ্ েথাকলেও সাংবাদিকদের মন পড়ে ছিল গুলশানে বিপিএল ট্রাইব্যুনালের দিকে। রায়ে শেষ পর্যন্ত ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের শিহাব চৌধুরীকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
ক্রিকেটের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো বাংলাদেশির বিরুদ্ধে ফিঙ্ংিয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হয়। তবে এর চেয়েও কালকের দিনের বড় ঘটনা ছিল ফতুল্লায় মুশফিকের সেঞ্চুরি। ১১৭ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে দিনের পুরো ফোকাস নিজের দিকে করে নেন টাইগার দলপতি। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেটে ২৭৯ রান করে বাংলাদেশ।
মুশফিকের ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি এটি।
ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসও। এর আগে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে প্রথম সেঞ্চুরি (১০১) করেছিলেন তিনি। কাল খেললেন দুই ছক্কা ও সাত বাউন্ডারিতে সাজানো ১১৩ বলে ১১৭ রানের নান্দনিক এক ইনিংস। ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশি কোনো ব্যাটসম্যানের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি এটি। প্রথমটি করেছিলেন অলোক কাপালি, ২০০৮ সালে পাকিস্তানের করাচিতে।
কাল এনামুল হক বিজয়কে নিয়ে একটি রেকর্ড পার্টনারশিপও গড়েছেন মুশফিক। তৃতীয় উইকেটে বিজয়-মুশফিক করেছেন ১৩৩ রান। যা এশিয়া কাপে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের জুটি। আগের রেকর্ডটি কাপালি ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের। ২০০৮ সালে করাচিতে এই ভারতের বিরুদ্ধে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ১১২ রান করেছিলেন দুজনে।
কাল বাংলাদেশের ইনিংসটা আরও বড় হতে পারত। কিন্তু অতি সাবধানী হয়ে খেলতে গিয়ে পাওয়ার প্লের প্রথম ১০ ওভারে মাত্র ৩৬ করে টাইগাররা। ৪৯ রানের মধ্যে দুই উইকেটের পতন ঘটে। একে তো রানের গতি কম তার ওপর শামসুর (৭) এবং মমিনুল (২৩) দ্রুত সাজঘরে ফিরে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। মুশফিক উইকেট যাওয়ার পরই বদলে যায় মাঠের চিত্র।
খেলায় গতি চলে আসে। বিজয়ও দ্রুত খোলস থেকে বেরিয়ে আসেন। বরুণ অ্যারোনে করা ২০তম ওভার থেকে ১৪ রান নেন এই ওপেনার। হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন লং অফ দিয়ে বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে। আউট হওয়ার আগে করেছেন ৭৭ রান।
তবে ভারতীয় এই বোলারকে সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছেন মুশফিক। তার ৩৯তম ওভার থেকে ১৯ রান নেন তিনি। প্রথম বল ডট, তারপর টানা দুই বাউন্ডারি। চতুর্থ বলে দুই রান। পঞ্চম বল ওয়াইড এবং বিশাল এক ছক্কা।
মুশফিকের হাতে বেদম প্রহারে ক্ষণিকের তরে মেজাজ হারিয়ে ফেলেছিলেন ভারতীয় পেসার বরুণ অ্যারোন। টাইগার দলপতির শরীর বরাবর বরুণ ছুড়লেন এক বিমার। সেটি সরাসরি গিয়ে আঘাত করে মুশফিকের পাঁজরে। মাঠেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকেন।
ফুঁসে ওঠে পুরো স্টেডিয়াম। সঙ্গে সঙ্গে বরুণকে বোলিং আক্রমণ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এর আগেও এনামুল হককে কোমরের ওপরের উচ্চতায় একটি ডেলিভারি করেছিলেন। তাই আম্পায়ার তাকে সতর্ক করে দেন। পরে মুশফিকের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন ভারতীয় পেসার।
আর বরুণের ওভারের শেষ বলটি করে দেন অধিনায়ক বিরাট কোহলি।
কাল মুশফিক ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন দলের বিপদের সময়। প্রথমে এনামুলকে সঙ্গ দিয়ে ৬৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন। তারপর সেঞ্চুরি পূরণ করেন ১০৪ বলে। মোহাম্মদ সামীর বলে আউট হওয়ার আগেই খেলেন ১১৭ রানের 'ক্যাম্পেট্স নক'।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।